• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ছাতকে বন্যায় ঘরবাড়ি হারিয়ে আশ্রয়হীন শত শত পরিবার


সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি জুলাই ৩, ২০২২, ১২:৩৯ পিএম
ছাতকে বন্যায় ঘরবাড়ি হারিয়ে আশ্রয়হীন শত শত পরিবার

সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জের ছাতকে ভয়াবহ বন্যায় মানুষের ঘরবাড়িসহ গোলা ভরা ধান, ঘরের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তলিয়ে নিয়ে বানভাসি মানুষদেরকে নিঃস্ব করেছে।

উপেজলা প্রশাসন ১৩টি ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের নামে ১ শত ২০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ করা হলে ও এখনো অধিকাংশ ইউনিয়েন সরকারি ত্রাণ পায়নি বলে বানভাসিদের অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, উপজেলার, ইসলামপুর ৮ টন, নোয়ারাই ১০, কালারুকা ৯, উত্তর খুরমা ১০, গোবিন্দগঞ্জ সৈদরগাঁও ৮ টন, দোলারবাজার ৮ টন, জাউয়া বাজার ৮ টন, সিংচাপইর ৯ টন, ভাতগাও ৮ টন, কালারুকা ৯ টন, চরমহল্লা ৯ টন, ছাতক সদর ৮টন, ছৈলাআফজলাবাদ ৮ টন, দক্ষিণ খুরমা ৮ টনসহ মোট ১ শত ২০ মে. টন চাউল বরাদ্দ ও ১৩ শত শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

গত শুক্রবার ও শনিবার থেকে প্রতিটি গ্রামে গ্রামে গিয়ে দেখা যায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ঘর বাড়ি ও পুনর্বাসনের তালিকা নিয়ে লুকোচুরির অভিযোগ উঠেছে ১৩টি ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের বিরুদ্ধে। এ উপেজলার ঘরবাড়ি হারিয়ে শত শত মানুষের ঠিকানা এখন হচ্ছে খোলা আকাশের নীচে। কেউ কেউ স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নেন। আবার কেউ কেউ আশ্রয় নেন রাস্তা অথবা ব্রিজের ওপর। মহাসড়ক-উঁচু রাস্তার পাশে পলিথিন-ত্রিপল দিয়ে ঘর নির্মাণ করে অনেকেই গবাদি পশুসহ বসবাস করছেন। এ চিত্র  উপজেলার সকল এলাকায়।

উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের সৈয়দাবাদ, রহমতপুর, গোয়ালগাঁও, ছনবাড়ী, গনেশপুর, বাহাদুরপুর, নোয়াকোট, কুছবাড়ি, হাদা, আশ্রয়ণ প্রকল্পের মুজিবনগর, দারোগাখালী, বৈশাকান্দি, রতনপুর, নিজগাঁও, লুবিয়া, পান্ডব, নোয়ারাই ইউনিয়নের মানিকপুর, টিলাগাঁও, চরভাড়া, গোদাবাড়ি, কুপিয়া, রাজারগাঁও, কালারুকা ইউনিয়নের দিঘলবন্দ, রামপুর, নুরুল্লাপুর, নৌকাকান্দি, আরতানপুর, জাউয়া বাজার  ইউনিয়নের বানায়ত, বড়কাপন, বাগাইড়, বাদেশ্বরী, কপলা, সুড়িগাঁও, উত্তর খুরমা ইউনিয়নের দাহারগাঁও, আলমপুর, গিলাছড়া, তকিরাই, নোয়াগাঁও, মৈশাপুর, রসুলপুর, ফুরকান নগর, গদার মহল, রুক্কা, চলিতার বাক, নানশ্রী, পলিরটুক, ঘাটপার, দোলারবাজার ইউনিয়নের সুতারখালী, বসন্তপুর, চরমহল্লা ইউনিয়নের কেজাউরা, চরবাড়–কা, কামরাংগি, ছনুয়া, হাসারুচর, ভাতগাঁও ইউনিয়নের জালিয়া, পাগনারপার, পৌরসভার ভাসখালাসহ বিভিন্ন গ্রামের ঘর- বাড়ি থেকে বন্যার পানি এখন ও নামছে না। হাজার হাজার ঘরবাড়িতে রয়েছে বন্যার পানি। স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ঘরহারা মানুষ বর্তমানে আশ্রয়হীন ও চরম খাদ্য সংকটে ভুগছেন। খাবার পানি তীব্র পশুপাখির খাদ্য মারাত্মক সংকট দেখা দিয়েছে। 

বন্যায় বসতঘর হারিয়ে নিঃস্ব উত্তর খুরমা ইউনিয়নের দাহার গাও আব্দুল সোবহান ও আলমপুর গ্রামের আপ্তাব আলী বলেন, বন্যায় হাটু পানি ঘরে কিছু মালপত্র গুছিয়ে গরু-বাছুর ও ছেলেদের নিয়ে গ্রামের আরেক বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। তার বাড়ির বসতঘরে ও পানি প্রবেশ করে। স্রোত বেড়ে যায়। ওই বাড়ি থেকে গ্রামের আরেক বাড়ির ছাদে গরু নিয়ে যাই। তার বসতঘরের ভিতের থাকা ছেলে মেয়েদের বইপত্র ও ভেসে গেছে।

এছাড়া শহরের ভাসখালা গ্রামের ইসলাম উদ্দিন বসতঘর বন্যার স্রোতে সুরমা নদীতে ভেসে গেছে। ইসলাম উদ্দিন এখন বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। এ ব্যাপারে তার সঙ্গে আলাপকালে হাউমাউ করে কাঁদেন, তার সর্বস্ব হারিয়ে গেছে। ঘরের কোন চিহ্নই নেই। একইভাবে গ্রামের ওয়াতির আলী, ওসমান, নছিব আলী, আবুল কালামের ঘরও বিধস্ত হয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এ, মাহবুবুর রহমান বলেন, উপজেলার ১৩ ইউনিয়নের সরকারিভাবে চেয়ারম্যানদের বন্যায় ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত তালিকা সংগ্রহ কাজ চলছে। এগুলো আসার পর আবারো ও যাচাই বাচাই করে দেখা হবে।

সোনালীনিউজ/এনএন

Wordbridge School
Link copied!