• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইলিশের অকাল, জেলে পাড়ায় হাহাকার  


চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি আগস্ট ৫, ২০২২, ০৫:১৪ পিএম
ইলিশের অকাল, জেলে পাড়ায় হাহাকার  

ভোলা : ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা আশায় বুক বেঁধেছিলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশের দেখা মিলবে। কিন্তু ভরা মৌসুমেও উপকূলীয় চরফ্যাশন উপজেলার জেলেদের জালে ধরা পড়ছে না রূপালী ইলিশ। তবে মৎস্য সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী,খুব শীগ্রই জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়বে ইলিশ। জ্যৈষ্ঠ থেকে ভরা মৌসুম চলছে ইলিশের। তবে জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় পেরিয়ে শ্রাবণেও আশানুরূপ দেখা মিলছে কাঙ্খিত ইলিশ। 

নিষেধাজ্ঞার পর গত শনিবার মধ্যরাত থেকে মাছ ধরা শুরু হয়।  কিন্তু নদ-নদীতে দেখা মিলছে না তেমন ইলিশের। সাগরে মোটামুটি ইলিশ পাওয়া গেলেও মেঘনা, তেতুলিয়া নদীতে মাছের হাহাকার।  ইলিশের মৌসুমেও ইলিশ ধরতে না পারায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন জেলেরা। একই সঙ্গে হতাশ আড়তদাররাও।

সারা দিনে দুই এক ঝুড়ি মাছ ঘাটে আসলেও তেমন হইচই নেই চরফ্যাশন উপজেলার বেতুয়া, সামরাজ, নতুন সুইজ, খেজুর গাছিয়া ,বস্কসি, ঢালচর ও চরপাতিলার মৎস ঘাটগুলিতে।  সেই সঙ্গে  হাটবাজারগুলোতেও ইলিশের সেই হাঁকডাক নেই।

ফলে উপজেলার ৪৪ হাজার ৩১১ জন নিবন্ধিত জেলেসহ প্রায় ৬০ হাজার জেলে হতাশায় রয়েছেন।  নিষেধাজ্ঞার পর ইলিশ না পাওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন জেলেরা। মৎস্যজীবীদের মাছ শিকারের ঠিকানা বলতে মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীর ২০০ কিলোমিটারসহ সাগরকূলের মুক্ত জলাশয়। 

চরফ্যাশন উপজেলার মজিবনগর, চরমন্তাজের জেলেদের ঠিকানা বুড়াগৌরাঙ্গ, তেতুলিয়া নদী।সারা বছরই কিছু না কিছু মাছ মিলে এই নদী থেকে। কিন্তু বর্ষাকালে ইলিশের দৌলতেই পুঁজির জোগানটা হয়। 

উপজেলার চরকচ্ছপিয়ার জেলে জসিম ও চরকুকরি-মুকররি ট্রলার মাঝি মফিজ বলেন, ভরা মৌসমেও নদীতে মাছ নাই।  দিন-রাত জাল ফেলে ৫-১০ টা মাছ পাই তা বিক্রি করে যে টাকা হয় তাতে ডিজেলের দাম হয় না। তারপরও পোলাপাইন নিয়ে অনেক কষ্টে চলে সংসার।  

সামরাজের মৎস্য ব্যবসায়ী জহির উদ্দিন ও মাহমুদ হাসান বলেন, টানা ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে।  জেলেরা সাগরে গেছে। কিন্তু ভরা মৌসুমেও ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ এবার পাচ্ছে না। দৈনিক ২ থেকে ৩ হাজার টাকার বাজার নিয়ে জেলেরা নদীতে যায়।  রাত দিন জাল ফেলে মাছ পায় ৩-৪ টি তা বিক্রি করে যে টাকা পায় তাতে দোকানের মালামালের টাকা দিলে আর জেলেদের তেমন একটা টাকা থাকে না। যে কারণে জেলেরা পরিবার পরিজন নিয়ে অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো মারুফ হেসেন মিনার বলেন, মূলত চলতি বছরে খুব বিলম্বে বৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে ইলিশের তেমন দেখা মিলছে না। বৃষ্টি যত বেশি হবে মাছের তত দেখা মিলবে। তবে ভোলাসহ উপকূলীয় কিছু কিছু জায়গায় মোটামুটি দেখা যাচ্ছে। দেরিতে হলেও মাছ হবে এমনটা আশা করা যায়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ইলিশ মাছের মৌসুম পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। সে কারণেই এই ভরা মৌসুমেও ইলিশ ধরা পড়ছে না। 

তার মতে, বিষয়টি চিন্তার হলেও এতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। জেলেদের জালে যে একদমই মাছ ধরা পড়ছে না তা কিন্তু নয়। ইলিশ ধরা পড়ছে তবে পরিমাণে কম। একই সঙ্গে ছোট সাইজের।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!