• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বরিশালে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে ইলিশ


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ২৩, ২০১৬, ০৪:২৬ পিএম
বরিশালে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে ইলিশ

বরিশাল প্রতিনিধি
হারিয়ে যাওয়া ইলিশের মৌসুম ফিরে পাওয়া এবং মিঠা পানিতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পড়ায় বরিশালের পাইকারী মৎস অবতরন কেন্দ্র ইলিশের সয়লাভ। এখানে ২০ দিনের ব্যবধানে মাছের দাম মণ প্রতি প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। ইলিশ পড়ায় জেলেরা যেমন খুশি তেমনি ব্যবসায়ীরা অতীতের লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারায় রয়েছেন সস্তিতে। তেমনি কম দামে মাছ কিনতে পারায় খুশি ক্রেতারাও । তবে কারেন্ট জাল আর জাটকা নিধণ বন্ধে হারিয়ে যাওয়া ইলিশের মৌসুম ফিরে আসার কারন বলে মনে করছেন জেলে, ব্যবসায়ী ও মৎস কর্মকর্তারা।

বরিশাল পোর্ট রোড মৎস অবতরণ কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, বরিশালের পাইকারী মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে প্রচুর ইলিশ আসছে, কমেছে দর। আর এসব মাছ বরিশালের অভ্যন্তরীণ নদীগুলোর হিজলা, মেহেন্দিগঞ্জের মেঘনা ইলিশা, কালাবদর, শ্রীপুর নদী এবং  ভোলার বোরহান উদ্দিন, দৌলতখা নদী থেকে বরিশাল মৎস অবতরন কেন্দ্রে নিয়ে আসা হচ্ছে। প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ায় বাজারে ইলিশের দর প্রায় অর্ধেকে কমে গেছে। এখানে প্রতি মণ ৫’শ গ্রামের এলসি সাইজের মাছের দর ১৫ হাজার টাকা যা ১৫/২০ দিনে আগেও ছিল ২৮ হাজার টাকা। ৫’শ গ্রামের নিচের ইলিশের দর ১০ হাজার টাকা। ৬’শ গ্রাম থেকে ৯,শ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৪ হাজার টাকায়।  ১কেজি সাইজের ইলিশ মন প্রতি ৭৫ হাজার টাকা। ১২’শ গ্রামের উপরে ইলিশ মণ প্রতি ১লাখ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে ইলিশ শীতকালে চাহিদা কম বলে ব্যবসায়ীরা ফ্রিজিং করতে না পাড়ায় কমে যাচ্ছে দর। আর এসব ইলিশ ঢাকা, পাবনা, রাজশাহী ও খুলনায়ার ব্যবসায়ীরা কোল্ড স্টোরে রাখছে। পরে তারা সিজন শেষে উচ্চ ধরে বিক্রি করবেন।

বরিশাল জেলা মৎস অধিদপ্তর তথ্যে জানা গেছে, বছরে ইলিশের দুটি মৌসুম থাকে। আর এই দুই মৌসুমে প্রচুর ইলিশ আহরণ করে জেলেরা। একটি মৌসুম হলো জনিুয়ারী থেকে মার্চ। অপর মৌসুমটি সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত। তবে প্রথম জানু-মার্চ মৌসুমটি দির্ঘ ১৫ বছর পর্যন্ত নদীগুলোতে অবাধে কারেন্ট জাল ব্যবহার ও জাটকা নিধন করায় হারিয়ে গিয়েছিল। তবে সরকারের নিষেধাজ্ঞায় মৎস্য বিভাগের অভিযানে নদী থেকে কারেন্ট জাল এবং জাটকা ধরা বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং জেলেরা সচেন হওয়ায় এই গুপ্ত হয়ে যাওয়া মৌসুমটি আবার ফিরে এসেছে। এখন জেলেরা আগ্রহ সহকারে কারেন্ট জাল ছেড়ে দিয়ে সুতার জাল দিয়ে বড় ইলিশ ধরছে। যার ফল সরূপ নদীতে প্রচুর ইলিশ পড়ছে।

ইলিশের পাইকার হারুন মাঝি বলেন, প্রচুর ইলিশ নদীতে, যেন মাছে পানিতে সামান। ভোলার নদী থেকে দৈনিক ৫০ থেকে ৬০ মণ ইলিশ নিয়ে আসছি বরিশালের বাজারে। দাম মোটামুটি ভাল পাচ্ছি। নদীতে এখন আরো  কেউ কারেন্ট জাল দিয়া ইলিশ ধরে না। শুধু সুতার জাল দিয়া বড় বড় ইলিশ ধরে।

বরিশালের মৎস অবতরন কেন্দ্রের মৎস ব্যবসায়ী অজয় দাস বলেন, ১৫/২০ দিন ধরে ইলিশের আমদানী বেশি। আমরা ব্যবসায়ীরা কর্মচারীদের বেতন ভাতা এবং ব্যাংকের দেনা পরিশোধ করতে পেরে ভাল আছি। জাটকা ধরা বন্ধ হওয়ায় আমরা এই সফলতা পাইছি। এখন যদি সরকার চাপিলা ধরা বন্ধ করে তাহলে সামনে আরো ভাল হবে।

বরিশাল মৎস্য আড়ৎদার এসোসিয়েশন সভাপতি অজিত কান্তি দাস বলেন, বরিশালের মিঠা পানির নদীতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়লেও সাগরে মাছ নেই। আগের বছর গুলোতে এসময় দৈনিক ৪/৫ মণ ইলিশ আসতো। এখন এক হাজার মণ ইলিশ আসে। শীতকালে ইলিশের চাহিদা কম থাকে। আর বাজারে মাছ বেশী ওঠায় দর পড়েছে গেছে। এসময়ে মাছ ফ্রিজিং করতে পারলে ব্যবসায়ীদের আরো ভালো হতো। তিনি আরো বলেন, ইলিশ পড়ায় জেলেরা, শ্রমিক ও ব্যবসায়ী যেমন খুশি তেমনি কম দামে মাছ কিনতে পারায় ক্রেতারাও খুশি।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিমল দাস (ইলিশ) বলেন, সরকার কারেন্ট জাল নিষিদ্ধ আর জাটকা ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপে মৎস বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকায় সুফল হিসেবে এই ইলিশ পাচ্ছে জেলেরা।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!