• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতে চলছে পরিবহন ধর্মঘট, দুর্ভোগে যাত্রীরা


রাজশাহী ব্যুরো ডিসেম্বর ১, ২০২২, ১১:৫১ এএম
রাজশাহীতে চলছে পরিবহন ধর্মঘট, দুর্ভোগে যাত্রীরা

রাজশাহী: আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ। এই সমাবেশকে ঘিরে পরিবহণ ধর্মঘট ডেকেছে বলে অভিযোগ বিএনপির। কিন্তু পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকরা বলছেন তাদের ১০ দফা দাবিতে চলছে রাজশাহী বিভাগে অনির্দিষ্টকালের পরিবহণ ধর্মঘট। উভয়ের বিপরীত মুখী অবস্থানের কারণে পরিবহণ ধর্মঘটে বিপাকে পড়েছে সাধারণ যাত্রীরা। বিশেষ করে বিভাগের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাস বন্ধ থাকায় যাত্রীদের ভোগান্তি বেড়েছে। তবে রাজশাহী নগরীতে ছোট ছোট যানবাহন ও অটোচলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। এতে বিএনপির সমাবেশ স্থলে রাত থেকেই জড়ো হচ্ছে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত বিএনপি নেতা-কর্মীরা।  

বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) ভোর ৬টা থেকে এই ধর্মঘট শুরু হয়েছে।

ফলে সড়ক পথে রাজশাহীর আট জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ গোটাদেশের পরিবহন যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। অচল হয়ে পড়েছে রাজশাহী। ধর্মঘটের কারণে সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ঢাকাসহ বিভিন্ন রুটের যাত্রীরা। যানবাহন না পেয়ে দূর-দূরান্তে নিজ নিজ গন্তব্যের উদ্দেশে রওয়ানা দিয়েও পথে পথে যাত্রীরা নানা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার উদ্দেশে রাজশাহী মহানগরের শিরোইল, ভদ্রা ও রেলগেট বাস টার্মিনালে আসেন যাত্রীরা। কিন্তু বাস না পেয়ে কেউ বিকল্প যানবাহন কেউবা বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। অনেককে আবার রাজশাহী রেল স্টেশনে ভিড় করতে দেখা যাচ্ছে।

ধর্মঘটের ফলে চাপ পড়েছে ট্রেনে। তাই বিভিন্ন রুটের ট্রেনের টিকিট এরই মধ্যে হাওয়া গেছে। টিকিট না পেয়ে অনেকে দাঁড়িয়েই রওয়ানা দিচ্ছেন। এছাড়া পরিবহন ধর্মঘটের কারণে সকাল থেকেই ভোগান্তি বেড়েছে রাজশাহীর আন্তঃজেলা রুটের যাত্রীদের। সিএনজি, হিউম্যান হলার, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন বিকল্প যানবাহনে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে যাত্রীরা জরুরি প্রয়োজনে নিজ গন্তব্যে রওয়ানা দিচ্ছেন।

রাজশাহীতে ৩ ডিসেম্বর বিভাগীয় গণসমাবেশ উপলক্ষে রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের আগমন ঘটবে। তাই বিএনপি নেতাদের দাবি, ১১ দফাটা মূল বিষয় নয়, মূলত দেশের অন্যান্য গণসমাবেশের মতো রাজশাহীর গণসমাবেশে মানুষকে আসতে বাধা দিতেই কৌশলে এ পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।

এটি সাজানো নাটক উল্লেখ করে বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার বলেন, মূলত পরিবহন শ্রমিক ও মালিকরা সরকারকে এই পরিবহন ধর্মঘটের মাধ্যমে সহযোগিতা করতে চাইছেন। বিএনপির প্রত্যেকটা সমাবেশের আগেই বিভিন্ন বিভাগ ও জেলায় এমন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। তবে এতকিছুর পরও মানুষ কোনো না কোনোভাবে গণসমাবেশে গেছেই এবং শতভাগ সফলও হয়েছে। তাই ধর্মঘট দেওয়া হোক, আর যা-ই দেওয়া হোক না কেন- রাজশাহীতে ৩ ডিসেম্বরের গণসমাবেশে জনস্রোত নামবে। শুধু সমাবেশস্থল মাদ্রাসা মাঠ নয়, পুরো রাজশাহী শহর জনসমুদ্রে পরিণত হবে।

বিএনপির এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে রাজশাহী বিভাগীয় পরিবহন মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক বলেন, বিএনপির গণসমাবেশ সামনে রেখে এমন সিদ্ধান্তের বিষয়টি অমূলক। তাদের দাবির মধ্যেও এমন কিছু উল্লেখ নেই। তারা মহাসড়ক থেকে নছিমন, করিমন, ভটভটিসহ অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধসহ এই ১১ দফা দাবিতে আদায়ে দীর্ঘদিন ধরে কথা বলে আসছেন। বিভিন্ন সময় প্রশাসনকে এ বিষয়ে চিঠিপত্র দেওয়া হয়েছে। কিছুদিন আগেও তারা সংবাদ সম্মেলন করে এসব দাবির বিষয়ে কথা বলেছেন। দাবি আদায়ে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে আসছেন। এই কর্মসূচি এবারই প্রথম নয়। গত ২৬ নভেম্বর নাটোরে বিভাগীয় পরিবহন নেতারা বসে আলোচনা করেই ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

সোনালীনিউজ/জেএ/এসআই

Wordbridge School
Link copied!