• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

জামায়াত নেতা আজহারের আপিলের রায় বৃহস্পতিবার


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ৩০, ২০১৯, ০৬:০৭ পিএম
জামায়াত নেতা আজহারের আপিলের রায় বৃহস্পতিবার

ঢাকা: মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে করা আপিলের রায় বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) ঘোষণা করা হবে।

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) এটি সুপ্রিম কোর্টের কার্যতালিকার এক নম্বরে আছে।

গত ১০ জুলাই এ মামলার উভয়পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন- বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি নুরুজ্জামান।

এদিকে, আদালতে আজহারের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন এবং তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট শিশির মোহাম্মদ মনির। এছাড়া অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড আইনজীবী জয়নুল আবেদীন তুহিন, অ্যাডভোকেট কামাল হোসেন ও মো. মতিউর রহমান মল্লিক উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ ও মো. মাসুদ হাসান চৌধুরী পরাগ।

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের (আর্গুমেন্ট) যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তার যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ থেকে তোলা যুক্ততর্কের বিষয়ে পাল্টা যুক্তি পেশ করেন এটিএম আজহারের সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। গত ১ জুলাই প্রথম দিনের শুনানি শুরু করে সোম ও মঙ্গলবার দুদিন মিলে পর পর মোট তিনদিন রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তি উপস্থাপন করে। 

পরদিন বুধবার এটিএম আজহারুল ইসলামের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেনের রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্কের পাল্টা জবাব দেওয়ার জন্য দিন নির্ধারণ করা হয়েছিল। আসামি পক্ষের সর্বশেষ যুক্তি উপস্থাপন শেষে আদালত মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন।

এ দিকে, মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখার পরে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, শুনানি শেষে এটিএম আজহারুল ইসলামের আপিলটি প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ ভবিষ্যতে রায়ের জন্য (সিএভি) রেখেছেন।

আর দণ্ডের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমি শুনানিতে বলেছি ট্রাইব্যুনাল বিচার বিশ্লেষণ করেই মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছিলেন। তাই ট্রাইব্যুনালের সে সাজায় হস্তক্ষেপের কোনো কারণ নেই। আমি আশা করি ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় আপিল বিভাগ বহাল রাখবেন।

যদিও আসামি পক্ষের কোনো আইনজীবী আজহারের আপিলের যুক্তি খণ্ডনের বিষয়ে মুখ খোলেননি।

গত ১৮ জুন আজহারের আপিলের শুনানি শুরু হয়ে পর পর কয়েক দিন ধরে পেপারবুক থেকে আজহারের পক্ষে অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড জয়নুল আবেদীন পড়েন। ২৬ জুন আপিল বিভাগে পড়া শেষে (১ জুলাই) যুক্তিতর্ক শুনানির দিন ধার্য করেন। ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর রংপুর জেলা আলবদর বাহিনীর কমান্ডার আজহারকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ৩০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুর অঞ্চলে এক হাজার ২৫৬ জনকে গণহত্যা-হত্যা, ১৭ জনকে অপহরণ, একজনকে ধর্ষণ, ১৩ জনকে আটক, নির্যাতন ও গুরুতর জখম এবং শত শত বাড়িঘর লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের মতো ৯ ধরনের ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের মধ্যে পাঁচটি এবং পরিকল্পনা-ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটি (ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায়) প্রমাণিত হয় তার বিরুদ্ধে। ট্রাইব্যুনালের ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৯ জানুয়ারি খালাস চেয়ে আপিল করেন আজহারুল ইসলাম। সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড জয়নুল আবেদীন তুহিন।

আজহারকে নির্দোষ দাবি করে খালাস চেয়ে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় ৯০ পৃষ্ঠার ১১৩টি গ্রাউন্ডসহ মোট দুই হাজার ৩৪০ পৃষ্ঠার আবেদন জমা দেওয়া হয়। 

আপিলের পর তার আইনজীবী শিশির মুহাম্মদ মনির সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আপিলে আমরা প্রত্যেকটি অভিযোগের চ্যালেঞ্জ করেছি, তিনি কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। ওই মামলায় সাক্ষীদের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য এটিএম আজহারুল ইসলামকে নির্দোষ প্রমাণ করে।’

তিনি বলেন, ‘২৬ নম্বর সাক্ষীর জবানবন্দি অনুযায়ী এটিএম আজাহারের বিরুদ্ধে আনা হত্যা, গণহত্যার অভিযোগগুলো প্রমাণ করতে প্রসিকিউশনের আইনজীবীরা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন। প্রসিকিউশনের ৪ ও ২৫ নম্বর সাক্ষীর জবানবন্দি অনুযায়ী ডকুমেন্ট তৈরি করে তারা (প্রসিকিউশন) নিজেদের মতো করে মামলা সাজিয়েছেন।’

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!