ঢাকা: হবিগঞ্জ ৩ আসনের সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু জাহির ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে সাড়ে ১০ কোটি টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের খোঁজ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে উল্লেখিত সম্পদ ক্রোক ও হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসককে রিসিভার নিয়োগের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) সিনিয়র স্পেশাল জজ জেসমিন আরা বেগম এ আদেশ দেন। দুদকের হবিগঞ্জের পিপি অ্যাডভোকেট শামসুল হক আবু জাহিরের স্থাবর অস্থাবর সম্পদ ক্রোক ও জেলা প্রশাসককে রিসিভার নিয়োগের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করছেন।
আদালতে দেওয়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সাবেক এমপি ও তার পরিবারের সদস্যরা নামে বেনামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূতভাবে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। আবু জাহিরের বিরুদ্ধে ভূমি দস্যুতা চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ দুদক হবিগঞ্জ জেলা কার্যালয় অনুসন্ধান করেছে বলে আবেদনে বলা হয়।
সাবেক এই সাংসদের নামে ঢাকার গুলশানে এপার্টমেন্ট ও হবিগঞ্জ শহরে টাউন হল এলাকায় বাসাসহ ৯টি স্থাবর সম্পত্তির অর্জন মূল্য দেখানো হয়েছে ৩ কোটি ১১ লাখ ২৩ হাজার ৮শ টাকা। স্ত্রী আলেয়া আক্তারের নামে ৯৯ লাখ ১০ হাজার ১০০ টাকা , ছেলে ইফাত জামিলের নামে ৫৯ লাখ ৭৭ হাজার ৩০০ ও মেয়ে আরিফা আক্তার মুক্তির ৬লাখ ৫০ হাজার ১০০ টাকার সম্পদ রয়েছে। ভাই বদরুল আলমের নামে রয়েছে ২ কোটি ৪৫ লাখ ৫৬ হাজার ২২১ টাকার সম্পদ।
এ ছাড়া আবু জাহিরের ১ কোটি ৩৯ লাখ ২হাজার ৭০৬ টাকা মূল্যের একটি জীপ ও একটি প্রাইভেটকার রয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংক হিসেবে মেয়ে মুক্তির নামে ১৪ লাখ ৫৯ হাজার ৬৬২ টাকা, আবু জাহির ও ভাই আল আমিনের যৌথ নামে ২৬ লাখ ১১ হাজার ১১৪ টাকা ও আল আমিনের নামে ২৫ লাখ টাকা জমা রয়েছে। শেয়ার বাজারে ছেলে ইফাত জামিলের ৫ লাখ ৯৯ হাজার ৩৩ টাকা, মেয়ে মুক্তির ১লাখ ৫৮ হাজার ৮২৩ টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। আমেরিকান লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানীতে (বর্তমান মেট লাইফ ) আবু জাহিরের ১৯ লাখ ২০ হাজার, স্ত্রী আলেয়া আক্তারের ১৮ লাখ ৯৩ হাজার ৮৮, ছেলে ইফাত জামিলের ৩৩ লাখ ১৯ হাজার ৩৭৪ ও ভাই বদরুলের নামে ১৮ লাখ ১৩ হাজার ৫৮৮ টাকার বীমা রয়েছে।
দুদক আদালতকে আরও জানিয়েছে, আবু জাহির ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে ১৯ স্থাবর ২টি যানবাহন ৪টি ব্যাংক হিসাব, ২টি শেয়ার একাউন্ট ৯টি বীমা পলিসি ১৭টি অস্থাবর সম্পতি অন্যত্র বিক্রি, হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত বলে গোপন সূত্রে খবর পেয়েছে। অভিযোগ নিষ্পত্তির পূর্বে বর্ণিত সম্পদ হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে গেলে রাষ্ট্রের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। এমতাবস্থায় জেলা প্রশাসককে রিসিভার নিয়োগ করা জরুরি।
আইএ