ঢাকা: লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সাময়িক বরখাস্ত সহকারী কমিশনার (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) তাপসী তাবাসসুম ঊর্মির বিচার শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
অপরদিকে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় মারধর, হত্যাচেষ্টার অভিযোগে বান্ধবী লায়লা আখতার ফরহাদের করা মামলায় টিকটকার আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে প্রিন্স মামুনের বিচার শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হক তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
তাপসী তাবাসসুম ঊর্মির মামলাটি বদলিমূলে সেফাতুল্লাহর আদালতে আসে। এদিন আসামি তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি সশরীরে আদালতে হাজির হন। তার পক্ষে আইনজীবী অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন।
অন্যদিকে বাদীপক্ষের আইনজীবী খাদেমুল ইসলাম অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর জন্য আবেদন জানান। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৫০০ ধারায় অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন।
গত বছর গত ৮ অক্টোবর মানহানির অভিযোগে মামলা করেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ। আদালত ২৮ নভেম্বর ঊর্মিকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন। সেদিন তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইমরান আহমেদ ৫০০ টাকা বন্ডে তার জামিন মঞ্জুর করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, সরকারের দায়িত্বশীল পদে থেকে আসামি ঊর্মি ২০২৪ সালের ৫ অক্টোবর শহীদ আবু সাঈদ এবং ছাত্র-গণআন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত সরকার ও সরকারপ্রধান নোবেল বিজয়ী প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে ফেসবুকে অবমাননাকর মন্তব্য করেন।
এর মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রেফারেন্সের ভিত্তিতে সংবিধানসম্মতভাবে গঠিত একটি সরকারপ্রধান সম্পর্কে বিষোদ্গার করা হয়েছে এবং সরকার উৎখাতের হুমকি দিয়ে জনমনে ভীতি সৃষ্টি করা হয়েছে।
তাপসী তাবাসসুম ঊর্মির একটি ফেসবুক পোস্ট নিয়ে আলোচনার জেরে তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) এবং পরে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়।
অপরদিকে টিকটকার প্রিন্স মামুনের পক্ষে আদালেতে তার আইনজীবী অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ সেই আবেদনের বিরোধিতা করে। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন।
এ মামলায় গত বছরের ৩ জুন মামুনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরদিন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত এক হাজার টাকা বন্ডে তার জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
জানা যায়, ২০২৩ সালের ১২ ডিসেম্বর এই মামলা দায়ের করেন লায়লা আখতার ফরহাদ।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, প্রিন্স মামুনের সঙ্গে তিন বছর আগে ফেসবুকে পরিচয় হয় লায়লার। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দুই পরিবারের সম্মতিতে প্রিন্স মামুনের সঙ্গে লায়লার বিয়ের কথা চূড়ান্ত হয়। তখন থেকে প্রিন্স মামুন লায়লার বারিধারা ডিওএইচএসের বাসায় বাস করতে থাকেন। এরপর থেকে প্রিন্স মামুন বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে লায়লার কাছ থেকে টাকা নিতেন। প্রায় সময়ই মাদক সেবন করে গভীর রাতে বাসায় যেতেন এবং অশ্লীল ভাষায় কথা বলতেন। এমনকি মাঝেমধ্যে লায়লাকে মারপিট ও বিভিন্ন অযৌক্তিক দাবি আদায়ের পাঁয়তারাও করতেন মামুন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, ২০২৩ সালের ১১ ডিসেম্বর উত্তরায় একটি জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে বাসায় আসেন তারা। এ সময় মামুনসহ আরও দুজন মদ পান করার জন্য মিরপুরে যাওয়ার পরামর্শ করেন। লায়লা তাকে নিষেধ করেন এবং বাধা দেন। এতে মামুন উত্তেজিত হয়ে লায়লাকে গালি দেন। গালি দিতে নিষেধ করলে মামুন লায়লাকে মারধর করেন এবং হত্যার চেষ্টা করেন।
তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে ক্যান্টনমেন্ট থানা পুলিশ।
আইএ