• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এসিড দিয়ে তৈরি হতো ত্বক ফর্সাকারী ক্রিম!


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ১৯, ২০২১, ০২:৩৬ পিএম
এসিড দিয়ে তৈরি হতো ত্বক ফর্সাকারী ক্রিম!

ঢাকা : গরম পানির সঙ্গে ভেসলিন, স্টারিক এসিড, বোরাস, এসারিক পাউডার, পালম্যাকসহ বিভিন্ন কেমিক্যাল মিশিয়ে তৈরি করা হতো ত্বক ফর্সাকারী (স্কিন) ক্রিম।

সোমবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে পুরান ঢাকার লালবাগের হায়দার বক্স লেনের একটি বাড়িতে অভিযান চালায় র্যাব। ওই বাড়িতেই একটি কসমেটিকস কারখানার সন্ধান পাওয়া যায়। সেখানেই অনিরাপদ পরিবেশে অনুমোদহীন ক্ষতিকর এই স্কিন ক্রিম তৈরি করা হতো।

পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিএসটিআই থেকে লাইসেন্স না নিয়ে অবৈধভাবে লোগো ব্যবহার করে নকল কসমেটিকস পণ্য বাজারজাত করে আসছিল প্রতিষ্ঠানটি।  

এই অপরাধে ওই কারখানার কারিগরসহ প্রতিষ্ঠানের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। শিশু শ্রমিকদের দিয়ে এসব পণ্য তৈরির কাজ করা হতো ওই কারখানায়, ছিল না কোনো ধরনের সুরক্ষা সামগ্রী।

ওই অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বলেন, আজকের অভিযানে এই প্রতিষ্ঠানে অনুমোদনবিহীন ও বিভিন্ন অনিরাপদ কেমিক্যাল ব্যবহার করে ত্বক ফর্সাকারী নানা ধরনের ক্রিম তৈরি করে আসছিল।

অভিযানের সময়ে দেখা যায়, তারা লোকাল বাজারের কাঁচামাল ব্যবহার করে এসব পণ্য উৎপাদন করে আসছে। তারা যে কাঁচামাল ব্যহার করছে এর একটির গায়ে লেখা বি-৩। কিন্তু এটি কোনো জাতীয় কাঁচামাল তা কারখানার কারিগর ও বিএসটিআইয়ের প্রতিনিধি কেউই চিহ্নিত করতে পারেননি।

একইভাবে বি-এক্স ও হলুদ রঙের আরো একটি কাঁচামালের বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেননি তারা। এগুলো প্রতিটিই লেভেলবিহীন। এভাবেই বিভিন্ন ধরনের অনুমোদনহীন কাঁচামাল ব্যবহার করে তারা স্কিন ক্রিম তৈরি করে আসছিল।’

তিনি বলেন, অভিযান চলাকালে এই প্রতিষ্ঠানের কোনো লাইসেন্স, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র দেখাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এমনকি তাদের কয়েক ঘণ্টা সময় দেওয়ার পরেও প্রতিষ্ঠানের মালিক আসেননি। পলাশ কুমার বসু বলেন, এখানে তারা সনাতন পদ্ধতিতে পণ্য তৈরি করত।

গরম পানির সঙ্গে ভেসলিন, স্টারিক এসিড, বোরাস, এসারিক পাউডার, পালম্যাকসহ বিভিন্ন কেমিক্যাল মিশিয়ে এই ক্রিম তৈরি করত। তাদের কোনো কেমিস্ট নেই। কারখানার ভেতরে ছোট একটি ল্যাবরেটরি বানিয়ে সেখানে কিছু জিনিসপত্র সাজিয়ে রাখা হয়েছে। কিন্তু তার ব্যবহার সম্পর্কে কিছুই জানে না কারখানার কোনো কর্মচারী।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, পুরান ঢাকায় এমন আরো অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা বিভিন্ন ধরনের নকল পণ্য তৈরি করে বাজারে বিক্রি করছে। তাদের নকল পণ্য বাজারজাত করার নেটওর্য়াক খুবই শক্তিশালী। তাদের উৎপাদিত পণ্যগুলো দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের পাশপাশি রাজধানীসহ সারা দেশের অভিজাত মার্কেটগুলোতেও বিক্রি হয়। এর ভুক্তভোগী আমাদের সমাজের প্রায় সবাই।

অনিরাপদ উপায়ে এমন নকল পণ্য তৈরির অভিযোগে মোহাম্মদ নাসের নামে মালিকপক্ষের একজন প্রতিনিধি এবং কারিগর আনোয়ার শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানের সব মালামাল জব্দ ও সিলগালা করা হয়েছে। পাশাপাশি গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হবে বলে জানিয়েছেন র্যাবের এই কর্মকর্তা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!