• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মিনিকেট চালের নামে প্রতারণা


সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি মার্চ ২২, ২০২১, ০১:৪২ পিএম
মিনিকেট চালের নামে প্রতারণা

নীলফামারী : মিনিকেট চালের নামে সৈয়দপুরের ভোক্তাদের সঙ্গে চলছে প্রতারণা। চাল মিল মালিকসহ বড় বড় ব্যবসায়ীরা বিআরবি-২৮ বা ২৯ অথবা যে কোনো মোটা চাল অটো রাইস মিলে ছাঁটাই করে মিনিকেট নামে লুটে নিচ্ছেন হাজার হাজার টাকা। এসব বিষয়ে বণিক সমিতি বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা অবগত থাকলেও তারা নিশ্চুপ।

কৃষি বিভাগ জানান, সৈয়দপুর তথা বৃহত্তর রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে মিনিকেট নামে কোনো ধরনের ধান নেই। আশির দশকে ভারতে বোরো মৌসুমে চাষাবাদের জন্য ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট একটি সরু জাতের ধানের উদ্ভাবন করেন। ১৯৯১ সালে ভারতের ওই সরু জাতের ধান ভারতের পর প্রথম চাষাবাদ শুরু হয় বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গার নবীনগরে। প্রথম বছরেই দ্বিগুণ ফলন আর সরু চালের ভাত ওই এলাকায় ব্যাপক সাড়া পড়ে যায়। ধীরে ধীরে ব্যাপকতা ও পরিচিতি পেতে থাকে ওই ধানের।

এক পর্যায়ে গত ৫/৬ বছর আগে দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, রংপুর ও সৈয়দপুরেও এর চাষাবাদ শুরু হয়। এসব এলাকায় যে পরিমাণ সরু ধানের চাষাবাদ হয়, তা চাহিদার ২০ শতাংশ ও পূরণ হওয়ার কথা নয়। কিন্তু সারা বছর কোথা থেকে ওই চাল সরবরাহ করা হয় তা বুঝার উপায় নেই। গ্রামের হাটবাজার থেকে আরম্ভ করে জেলা উপজেলার আড়ৎ ও চালের দোকানে মিনিকেট নামে ওই সরু চালের সয়লাব হয়ে গেছে।

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, রংপুর ও রাজশাহীর মিনিকেট চালের মোকাম হচ্ছে কুষ্টিয়ার খাজানগর। এরপর যশোরের নওয়াপাড়া, কুষ্টিয়ার আল্লাহর দরগা, পাবনার ঈশ্বরদী, সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট, দিনাজপুর, নীলফামারী ও সৈয়দপুর। কথিত চাল ব্যবসায়ীরা নিম্নমানের মোটা চাল অটোরাইস মিলে ছাঁটাই করে মিনিকেট নামে বাজারজাত করে ভোক্তাদের সঙ্গে প্রতারণা করে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, একশ্রেণির মিল মালিক বিআর-২৮, ২৯, ২৩, ২৪, ৩০ ও বিআর-৫০ সহ বিভিন্ন জাতের ধান মেশিনে মোম পালিশ করে সরু করছে। এরপর সেগুলো বস্তায় ভরে মিনিকেট সিল ব্যবহার করে বাজারে সরবরাহ করছে। এমনকি হাইব্রিড ধানের চালও মেশিনে সরু করে মিনিকেট চাল বলে বিক্রি করা হচ্ছে। মোটা যে চাল বিক্রি করা হয় ৪০-৪২ টাকা কেজি দরে। সেই চাল ছাঁটাই করে মিনিকেট নাম দিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকা কেজি দরে। এতে ভোক্তারা প্রতারিত হলেও আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছেন মিল মালিকসহ অসাধু বেশ কিছু আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন।

এ বিষয়ে সৈয়দপুরের অটো রাইস মিলের মালিক আফজাল হোসেন বলেন, বড় বড় চাল ব্যবসায়ীরা মোটা চাল সরু করেন সত্য, কিন্তু এরপর সেগুলো কোন নামে বিক্রি করা হচ্ছে, তা বলতে পারবো না। তবে ভোক্তাদের সঙ্গে যারা প্রতারণা করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন। একই কথা বলেছেন সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহিনা আলম। তিনি বলেন, যে দেশে মিনিকেট নামে কোনো ধান নেই, সে দেশে মিনিকেট চাল আসে কোথায় থেকে? যারা মোটা সরু করে মিনিকেট ধান/চাল বলে বিক্রি করছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!