• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় লজিস্টিক নীতিমালা প্রণয়ন কার্যক্রম তদারকির আহ্বান


নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ২২, ২০২০, ০৫:৪৬ পিএম
জাতীয় লজিস্টিক নীতিমালা প্রণয়ন কার্যক্রম তদারকির আহ্বান

ছবি: প্রতিনিধি

ঢাকা: দেশের কাঙ্খিত অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিতকল্পে লজিস্টিক নীতিমালা প্রণয়ন, সংশ্লিষ্ট সকল স্টেকহোল্ডার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য একক সংস্থা গঠন, বন্দরসমূহে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স প্রক্রিয়ার অটোমেশন, বন্দরের সাথে সড়ক, রেল ও নদীপথের যোগযোগ উন্নয়ন সহ উন্নতদেশসমূহের ন্যায় ‘লজিস্টিক ও ওয়ারহাউস পার্ক’ স্থাপনে আহ্বান জানানো হয় ডিসিসিআই আয়োজিত ‘লজিস্টিকস’ বিষয়ক ওয়েবিনারে।   

মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘লজিস্টিকস : বাংলাদেশের আন্তঃবাণিজ্যের বর্তমান  প্রেক্ষিত ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)-এর সভাপতি ড. রুবানা হক সম্মানিত অতিথি হিসেবে যোগদান করেন।

স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, লজিস্টিক আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম নিয়ামক, যেটি বৈশ্বিক বাণিজ্যে সময়মত এবং কম খরচে পণ্য ও সেবা সরবরাহ নিশ্চিতকল্পে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। 

শামস মাহমুদ বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং অবকাঠামোখাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করলেও বাংলাদেশ লজিস্টিক ব্যবস্থাপনায় বেশ পিছিয়ে রয়েছে এবং কোভিড-১৯ মহামারীর সময়ে অপর্যাপ্ত লজিস্টিক সুবিধার কারণে চলতি বছরে আমাদের রপ্তানি প্রায় ১৭% কমে গিয়েছে, যেখানে বৈশ্বিক বাণিজ্যে এর পরিমাণ প্রায় ২৮%। 

তিনি জানান, ‘বৈশ্বিক লজিস্টিক সূচক ২০১৮’ অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান ১০০ এবং এক্ষেত্রে আমাদের প্রতিযোগী এশিয়ার অন্যান্য দেশসমূহের তুলনায় আমরা বেশ পিছিয়ে রয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ডিসিসিআই পরিচালিত একটি জরিপে দেখা যায়, কোভিড মাহামারীর কারণে ৪২ শতাংশ মনে করেন, ফ্যাক্টরি থেকে সমুদ্র বন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ১৫ দিনের বেশি সময় প্রয়োজন হয় এবং ৬২ শতাংশ উদ্যোক্তার সমুদ্র বন্দর থেকে কারখানা পর্যন্ত পণ্য আমদানিতে ১৫ দিনের বেশি সময় লেগেছে বলে মত প্রকাশ করেন। 

এছাড়াও জরিপে অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তারা আরো মনে করেন, বন্দর সমূহে কন্টেনার জট, পোর্ট ডেমারেজ চার্জ, কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সে দীর্ঘসূত্রিতা, অপর্যাপ্ত বন্দর অবকাঠামো প্রভৃতি বিষয়গুলো ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনায় অন্যতম প্রতিবন্ধকতা হিসেবে নেতিবাচক ভূমিকা পালন করছে এবং এর ফলে ব্যবসা পরিচালনা ব্যয় উল্লেখজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

ডিসিসিআই সভাপতি উল্লেখ করেন, বিশ্বব্যাংক-এর তথ্য মতে রাস্তাঘাটে যানজট নিরসন ও লজিস্টিক ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা উন্নয়ন করা গেলে ব্যবসা পরিচালনায় প্রায় ৭-৩৫ শতাংশ ব্যয় হ্রাস করা সম্ভব। 

তিনি জানান, বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রায় ৯০ শতাংশ সমুদ্রবন্দরের উপর নির্ভরশীল হলেও আমাদের বন্দরসমূহ এখনও পুরোনো প্রযুক্তি এবং ব্যবস্থাপনার উপর নির্ভরশীল। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি দেশের কাঙ্খিত অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিতকল্পে দেশের বন্দরসমূহে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স প্রক্রিয়ার অটোমেশন সহ বন্দরে কন্টেনার ধারণ সক্ষমতা বৃদ্ধি, গভীর সমুদ্রবন্দর স্থাপন, লজিস্টিক নীতিমালা প্রণয়নে সরকারী সংস্থা, বন্দর কর্তৃপক্ষ ও বেসরকারীখাতের মধ্যকার সমন্বয় বাড়ানো, উন্নতদেশসমূহের ন্যায় ‘লজিস্টিক ও ওয়ারহাউস পার্ক’ স্থাপন এবং আমদানীকৃত কাঁচামাল সংরক্ষণে বন্ডেড ওয়ারহাউস স্থাপনের উপর গুরুত্বারোপ করেন।               

সম্মানিত অতিথি’র বক্তব্যে বিজিএমইএ-এর সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সেবা নিশ্চিতকরণে আমাদের একটি নিজস্ব মানদন্ড থাকতে হবে এবং প্রতিনিয়ত তা নজরদারির আওতায় রাখতে হবে। তিনি বিনিয়োগ আকর্ষনের সাথে সংশ্লিষ্ট সেবাসমূহে আমাদের ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরতে হবে, যার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানদন্ডে বাংলাদেশের অবস্থান আরো উন্নয়ন সম্ভব হবে। 

বিজিএমইএ আরও সভাপতি বলেন, বাণিজ্য বিয়ষক সংষ্কার কাজগুলো গুছিয়ে উপস্থাপনের জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয়ের কমিটি প্রণয়ন করা আবশ্যক, এছাড়াও তিনি কাস্টমস প্রক্রিয়া সহজীকরণ, আশিয়ান অঞ্চলের দেশগুলোর সাথে সহযোগিতা আরো বাড়ানো এবং আশিয়ান প্লাস ওয়ান নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানান। তিনি আরো বলেন, বন্ডেড লাইসেন্স এর মাধ্যমে পণ্য আমদানি করে, যার এর অপব্যবহার করছে তাদেরকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে, পাশাপাশি তিনি লজিস্টিক প্রক্রিয়া সহজীকরণের জোরারোপ করেন। 

ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সানেম।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!