• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যে কারণে লোকসানে এপেক্স ট্যানারি


নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২০, ০১:১৯ পিএম
যে কারণে লোকসানে এপেক্স ট্যানারি

ঢাকা: চামড়া খাতের সবচেয়ে বড় কোম্পানি এপেক্স ট্যানারি লিমিটেড সর্বশেষ সমাপ্ত ২০১৯-২০ হিসাব বছরে লোকসান গুনতে হয়েছে। লোকসান হওয়ার কারণে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশও কম দিয়েছে কোম্পানিটি।

এপেক্স ট্যানারির প্রকাশিত নিরীক্ষিত আর্থিক ফলাফল অনুসারে, ২০১৯-২০ হিসাব বছরে কর-পরবর্তী লোকসান হয়েছে ১ কোটি ৮১ লাখ টাকা। যদিও আগের বছর ২ কোটি ১৫ লাখ টাকা কর-পরবর্তী মুনাফা হয়েছিল কোম্পানিটির। স্টকে থাকা পণ্য বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি করোনার কারণে নগদ অর্থের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ার ফলে ওই হিসাব বছরে এপেক্স ট্যানারির শেয়ারপ্রতি নিট পরিচালন নগদ প্রবাহও ছিল ঋণাত্মক। ২০১৯-২০ হিসাব বছরে ফেয়ার ভ্যালুয়েশন সারপ্লাস বাদে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ১৯ পয়সা, যেখানে এর আগের বছর তাদের শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ১ টাকা ৪১ পয়সা।

সর্বশেষ সমাপ্ত ২০১৯-২০ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদানের সুপারিশ করেছে এপেক্স ট্যানারির পর্ষদ। আগের হিসাব বছরে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ৩৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়। ২০১৯-২০ হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৬৩ টাকা ৮৯ পয়সায়, যা আগের বছর ছিল ৬৯ টাকা ২১ পয়সা। ঘোষিত লভ্যাংশ ও অন্যান্য এজেন্ডা অনুমোদনের জন্য চলতি বছরের ২৫ নভেম্বর ভার্চুয়াল মাধ্যমে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আহ্বান করেছে কোম্পানিটি। এজন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ২১ অক্টোবর।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্তের পর তা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেশে দেশে সংক্রমণ রোধে লকডাউনের মতো নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়। এতে বিশ্বজুড়ে ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। বাংলাদেশেও মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ছিল। মূলত এ বছরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত করোনার প্রভাবে পুরো বিশ্বই এক ধরনের অবরুদ্ধ ছিল। এর প্রভাবেই ধস নেমেছে এপেক্স ট্যানারির চামড়া রফতানিতে।

চামড়ার রফতানি চাহিদা পড়ে যাওয়ার কারণে নিট মুনাফা ও ইপিএস কমেছে বলে জানিয়েছেন কোম্পানিটির কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, ২০১৯-২০ হিসাব বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কোম্পানির বিক্রি কমেছে ৮০ শতাংশ। বিক্রি কমার পরিমাণ এতটাই বেশি ছিল যে ব্যয় কমিয়ে সেটি পূরণ করা সম্ভব হয়নি।

২০১৯-২০ হিসাব বছরে একই মালিকানায় থাকা পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আরেক কোম্পানি এপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবসা ও মুনাফা কমেছে। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ১৮১ কোটি টাকা, যা আগের বছরে ছিল ১ হাজার ৫৮১ কোটি টাকা। আর ২০১৯-২০ হিসাব বছরে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফা হয়েছে ৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা, যা আগের বছর ছিল ১২ কোটি ২৮ লাখ টাকা। সর্বশেষ সমাপ্ত ২০১৯-২০ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদানের সুপারিশ করেছে এপেক্স ফুটওয়্যারের পর্ষদ। এর আগের হিসাব বছরে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ৫৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

১৯৮৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এপেক্স ট্যানারি চীন ছাড়াও ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশে চামড়া রফতানি  করে। জুতা ও চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনে ব্যবহূত বিভিন্ন গ্রেডের চামড়া তৈরি করে কোম্পানিটি। এর মধ্যে গরু-ছাগলের ফুল ক্রোম, সেমি ক্রোম ও ভেজিটেবলসহ বিভিন্ন ধরনের ফিনিশড চামড়া অন্যতম। বছরে ৩ কোটি ২০ লাখ বর্গফুট চামড়া উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে তাদের। কোম্পানিটির কারখানায় দুটি ইউনিট রয়েছে। ইউনিট-১ সাভারের হেমায়েতপুরে বিসিকের চামড়া শিল্পনগরীতে অবস্থিত। আর ইউনিট-২ গাজীপুরের শফিপুরে অবস্থিত। দ্বিতীয় ইউনিটটি ১০ বছরের জন্য এপেক্স ফুটওয়্যারের কাছে ইজারা দেয়া আছে।

মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এপেক্স ট্যানারির শেয়ার ১০৯ টাকায় ও এপেক্স ফুটওয়্যারের শেয়ার ২৩২ টাকা ৭০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে।

সোনালীনিউজ/এলএ/এএস

Wordbridge School
Link copied!