• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

করোনায় শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের অভিজ্ঞতা


মো. রকিবুর রহমান অক্টোবর ২৩, ২০২০, ০৩:৫৯ পিএম
করোনায় শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের অভিজ্ঞতা

ঢাকা : বিশ্বজুড়ে এখন করোনাভাইরাস আতঙ্ক। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। এই আতঙ্কের প্রভাব পড়েছে দেশ-বিদেশের শেয়ারবাজারে।

এমন পরিস্থিতিতে আমার দীর্ঘদিনের বিনিয়োগের অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি সকল বিনিয়োগকারী, যারা ইনস্টিটিউশন এবং  বিনিয়োগকারীদের পক্ষে পোর্টফোলিও ম্যানেজ করেন, মিউচুয়াল ফান্ড ম্যানেজের দায়িত্বে থাকা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির কর্মকর্তাদের জন্য। নিজের বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে কিছু সুপারিশ তুলে ধরছি। আশা করি এই লেখাটি বিশ্লেষণ করে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিলে উপকৃত হতে পারেন। পুঁজিবাজারে কখন এবং কেন বিনিয়োগ করব?

সাধারণত সকল সফল বিনিয়োগকারীর হিস্ট্রি একই রকম। এদের মধ্যে সবচেয়ে সফল হিসেবে সারাবিশ্বে যাকে সমীহ করা হয়, সেই ওয়ারেন বাফেট শেয়ারবাজারের বিনিয়োগ থেকেই আজ বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ সম্পদশালী ব্যক্তি হয়েছেন। কিন্ত কীভাবে?

তিনি নিজে বলেছেন, যখন পুঁজিবাজারে ধস নামে, যখন বিনিয়োগকারী হতাশ হয়ে শেয়ার বিক্রি করে দেয়, তখন তিনি ভালো ভালো ফান্ডামেন্টালের শেয়ার অত্যন্ত কম দামে কিনে নেন এবং তা দীর্ঘদিন ধরে রাখেন।

পুঁজিবাজারের ধর্মই হলো, যে কোনো ভালো শেয়ার যদি কোনো বিনিয়োগকারী সঠিক সময়ে কিনে দীর্ঘদিন ধরে রাখতে পারেন কয়েক বছরের মধ্যে বিপুল মুনাফার সুযোগ আসে।

করোনার কারণে শেয়ারবাজারে যে ধস নেমেছে, অতীতের মতো সেখান থেকেও বাজার ঘুরে দাঁড়াবে। কোনো এক সময়ে বাজার অনেক চাঙা হবে। তাই বাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে ঘাবড়ে যাওয়া উচিত নয়, বরং এ সময়ে যাচাইবাছাই করে ভালো মৌলের সম্ভাবনাময় শেয়ার কিনলে এক সময় মুনাফা আসবেই।

আমার অভিজ্ঞতা : এখন আমি আমার একটি বিনিয়োগ অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। ১৯৯৬ সালে শেয়ারের দাম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি হচ্ছিল।

আমি  একটি শেয়ারের কথা বলি, যা আমার কাছে ছিল। সেই কোম্পানির নাম ছিল চিটাগাং সিমেন্ট ক্লিংকার গ্র্যান্ডিং ফ্যাক্টরি (বর্তমান নাম হাইডেলবার্গ সিমেন্ট বাংলাদেশ লিমিটেড)। শেয়ারটি আমার কেনার গড় মূল্য ছিল ১২০০ টাকা। এই শেয়ারটি কিনার সময় সাউথইস্ট ব্যাংক থেকে প্রায় ৩ কোটি টাকা লোন নিয়েছিলাম। অনান্য ব্যাংক থেকেও আমি বিভিন্ন শেয়ার কেনার জন্য লোন নিয়েছিলাম।

সে সময় চিটাগাং সিমেন্টের শেয়ারের দাম উঠেছিল সর্বোচ্চ ১৪০০০ টাকা। এরই মধ্যে এই শেয়ারটির দাম যখন ১১,৫০০ টাকা করে চলছিল তখন ইচ্ছা করলেই শেয়ার পাওয়া যেত না, আমাদের একজন মেম্বার তখন ১১,৫০০ টাকা দরে কিছু শেয়ার কিনেছিল, আমি তার থেকে অনেক অনুরোধ করে এই দামে ৫০০ শেয়ার নিয়ে ছিলাম।

ওই সময় আমাদের একজন মেম্বারের নাম বলতে হয়, তার নাম হলো শাহ মোহাম্মদ সগীর, তিনি আমাদের মাঝে নাই, এই নামটি এই জন্যই আনলাম, তখন বাজারে একটি কথা প্রচলন ছিল শাহ মোহাম্মদ সগীর যেই শেয়ার ধরবে সেটাই বাড়বে। অবশ্যই শাহ মোহাম্মদ সগীরের কথায় আমিও কিছু শেয়ার কিনেছিলাম।

আরেকটি কথা বলতে হয়, ওই সময়ে আমাদের একজন মেম্বার আমার কাছে এসেছিলেন বাজার পরিস্থিতি বোঝার জন্য এবং কিছু উপদেশ নেওয়ার জন্য, তিনি বললেন রকিব ভাই আমার কাছে অনেক এপেক্স ফুডের শেয়ার আছে, তখন এইটার বাজারমূল্য ছিল ১৮,০০০ টাকা থেকে ২০,০০০ টাকা। তিনি জানতে চাইলেন আমি এখন শেয়ার বিক্রি করব না ধরে রাখব। আমি চিন্তা করে দেখলাম এই মুহূর্তে বিক্রি করার কথা বললে কেউ বিক্রি করবে না। তখন আমার মাথায় জাস্ট একটা আইডিয়া এলো। আমি উনাকে বললাম যে আপনি একটা কাজ করতে পারেন, অর্ধেক শেয়ার বিক্রি করে দেন আর বাকি অর্ধেক শেয়ার রেখে দেন। তাতে আপনার দুদিকে উপকার হবে।

প্রথম উপকার হবে, অর্ধেক শেয়ার বিক্রি করার পর যদি শেয়ারের দাম কমে যায়, তবে আপনি আফসোস করবেন না এই কারণে যে আপনি অলরেডি ভালো দামে অর্ধেক শেয়ার বিক্রি করেছেন। আর যদি দাম বাড়ে তবে আপনার কোনো আফসোস থাকবে না এই কারণে যেহেতু অর্ধেক শেয়ার আপনার হাতে আছে।

আমি কি করলাম : তখন আমি আমার হাতে থাকা ১২ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছি। অপরপক্ষে, ১০ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছি। কিন্তু ওই সময়ে চিটাগং ক্লিঙ্কারের একটি শেয়ারও বিক্রি করিনি। একেবারেই বুঝতে পারিনি, বাজারে কোনো বড় ধরনের ধস নামবে। ১৯৯৬ সালের নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে বড় ধরনের ধস নামা শুরু হয়েছিল, বিনিয়োগকারীসহ আমরা সবাই হতভম্ব হয়ে গেলাম।

প্রতিদিন শেয়ারের দাম পড়তে থাকল, কিন্তু কেন জানি আমার একটি দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, আমার মতো অনেকেরই এই বিশ্বাস ছিল যে, বাজার অবশ্যই ঘুরে দাঁড়াবে, কিন্তু আমাদের ধারণা সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণ করে চিটাগাং সিমেন্ট ক্লিঙ্কারের দাম ১৪০০০/১৫০০০ হাজার থেকে নেমে ৫০০ টাকায় চলে এলো, যা আমার অ্যাভারেজ প্রাইসের চেয়েও অনেক কম। এরপর আমি যে সিদ্ধান্তটি নিলাম, আজকের এই পরিস্থিতিতে সকল বিনিয়োগকারীকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে সিদ্ধান্ত নিতে সহযোগিতা করবে।

বাজার যখন চূড়ান্ত ক্রাশ করল তখন ব্যাংক থেকে লোনের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ শুরু করল। তত দিনে আমার ২৩ কোটি টাকার শেয়ারের দাম কমে ৬ কোটি টাকার নিচে এসেছে। অথচ আমার ব্যাংক ঋণই প্রায় ৬ কোটি টাকা।

আমি ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য সচেষ্ট হলাম এবং আমি চিন্তা করলাম কোনো অবস্থাতেই আমি কোনো শেয়ার বিক্রি করব না। এখান থেকে আমি সচেষ্ট হলাম, অন্তত কিছু টাকা দিয়ে আমার ব্যাংক ঋণ ২ বছরের জন্য রি-সিডিউল করার জন্য মুভ করলাম।

আমি মনে মনে ভাবলাম এই শেয়ারগুলো যদি আমি দুই তিন বছর ধরে রাখতে পারি, যেহেতু শেয়ারগুলো অত্যন্ত ফান্ডামেন্টাল শেয়ার ছিল, এখান থেকে আমি বিক্রি করে লাভ না করতে পারি, কিন্তু অন্তত লোনের টাকা শোধ করতে পারব হয়তো। কিন্তু তখন ব্যাংক সুদ হার ছিল অনেক বেশি এবং চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ বাড়ছিল।

এখানে উল্লেখযোগ্য, চিটাগং সিমেন্ট ক্লিঙ্কারের শেয়ারের দাম যখন হাই প্রাইসের দিকে যাচ্ছিল তখন ১৯৯৫-৯৬ বছরের জন্য ডিভিডেন্ড ঘোষণা করছিল একটি শেয়ারের বিপরীতে ৫০% বোনাস এবং ৫০% রাইট। এতে আমি উপকৃত হয়ে গেলাম। আমার ১২০০০ শেয়ার ২৪০০০ হলো এবং আমার এভারেজ প্রাইসও কমে গেল। পরবর্তী ৩ বছরের মধ্যে আমার চিটাগাং সিমেন্ট ক্লিঙ্কারের শেয়ারের দাম আমার এভারেজ ক্রস করে লাভ চলে এলো। ঠিক তেমনিভাবে অন্যান্য ভালো শেয়ারগুলো আমার এভারেজ প্রাইসের উপরে উঠতে থাকল।

অপরপক্ষে যত বাজে শেয়ার ছিল সবগুলো পড়তে থাকলো। তখন আমি আর দেরি না করে সিদ্ধান্ত নিলাম লাভের আর দরকার নাই। আমাকে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করতে হবে, আমি আর লোভ না করে ক্রমান্বয়ে ভালো ভালো শেয়ারগুলো বিক্রি করে সকল লোন পরিশোধ করে দিলাম এবং ঋণমুক্ত হলাম, সাথে কিছু টাকাও পেলাম।

বিষয়টি থেকে এটাই প্রমাণ হয়, যদি আপনি কোনো ভালো শেয়ারে দীর্ঘ মেয়াদে থাকতে পারেন, তাহলে অন্তত আপনার লস হবে না। আরেকটি জিনিস অনুভব করলাম, আমি তখন পুঁজিবাজারে ছোটখাটো একজন নেতা, সারাক্ষণ বক্তব্য দিয়ে বেড়াতাম ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের একজন পরিচালক হিসেবে। আমার বড়ো সান্ত্বনা এটা যে, আমি আমার বিনিয়োগকারী ভাইদের ওপর আনজাস্টিফায়েড প্রাইসে কোনোদিনও কোনো শেয়ার বিক্রি করিনি। মহান আল্লাহর কাছে এই জন্য হাজার শুকরিয়া।

আর যে মেম্বার ভাইটিকে আমি এপেক্স ফুডের  শেয়ারের বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছিলাম, তিনি কিন্তু তা কাজে লাগাননি। তিনি একটি শেয়ারও বিক্রি করেন নাই, লোভে পড়ে বা উচ্চ দাম পাওয়ার আসায়। পরবর্তীতে উনি বড় ধরনের লস করেছিলেন।

আরেকটি উদাহরণ এখানে আনতে পারি, আজকের এনসিসি ব্যাংক সেই সময় একটি ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক ছিল, তখন ১৯৯৪, ৯৫, ৯৬-এ তারা অনেক ভালো ভালো শেয়ারে ইনভেস্টমেন্ট করেছিল এবং আমাদেরও শেয়ারে বিনিয়োগের জন্য ঋণ দিয়েছিল। তারাও একই ভুল করেছিল।

বাজার যখন উচ্চ দামে ছিল, তারা কিন্তু তখন শেয়ার বিক্রি করে নাই, পরবর্তীতে দর পতনের সময় তারা তাদের শেয়ার বিক্রি না করে ধরে রেখে ছিল। দুই চার বছরের মধ্যে যখন ভালো শেয়ারের দাম বাড়া শুরু হলো তখন তারা আস্তে আস্তে শেয়ার বিক্রি করে প্রচুর লাভ করেছিল। ওই লাভের টাকা দিয়ে তারা পরবর্তীতে তারা একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যাংক এনসিসি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে। এটাও বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি উদাহরণ হয়ে থাকে ভালো শেয়ারে বিনিয়োগ করার ব্যাপারে।

এবার আমরা মূল বিষয়ে আসি, নভেল করোনাভাইরাস (কোবিড১৯)-কে সামনে রেখে বিশ্বব্যাপী আতঙ্ক, দ্বিতীয়ত কমবেশি সব দেশেরই অর্থনৈতিক মন্দা, কলকারখানা বন্ধ, উৎপাদন, আমদানি, রপ্তানি সব খাত কম-বেশি স্থবির। আইএমএফ প্রধান বলেছেন, করোনাভাইরাসের কারণে সারা পৃথিবীর অর্থনীতির মন্দাভাব চলতে থাকবে। এই অবস্থা থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতিও বাইরে না। তবে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে, কোন দেশ কত দ্রুত তার আর্থিক সংকট কাটিয়ে, কে কীভাবে ঘুরে দাঁড়াবে?

আমি বিশ্বাস করি, ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশ পৃথিবীর কয়েকটি দেশের মধ্যে একটি হবে যেটি মন্দা দ্রুত কাটিয়ে উঠবে। এখন এই মুহূর্তে বিভিন্ন বিনিয়োগকারী, কী কী বিবেচনায় এনে কোন কোন শেয়ারে বিনিয়োগ করবে। কোনটা দীর্ঘমেয়াদি করবে, অথবা কোনটা স্বল্পমেয়াদি করবে (স্বল্প মেয়াদি বলতে ন্যূনতম ৬ মাস)।

স্বল্পমেয়াদি করুন আর দীর্ঘমেয়াদি করুন, দেখতে হবে করোনাভাইরাসের কারণে কোন কোন লিস্টেড কোম্পানি এফেক্টেড হয়েছে আর কোন কোনটি এফেক্টেড হয়নি। যেমন এক্সপোর্ট ওরিয়েন্টেড গার্মেন্টস যেগুলো লিস্টেড আছে, সেগুলোর এফেক্ট আমরা দেখতে পাচ্ছি, কারণ এক্সপোর্ট অর্ডারগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। তাতে করে এই লিস্টেড কোম্পানিগুলো সামনে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

দ্বিতীয়ত, যারা ইম্পোর্ট করে ম্যানুফ্যাকচারিং ব্যবসা করছেন তারাও আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এই দুটাকে বিবেচনায় নিয়ে বিনিয়োগ করতে হবে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা ডে-ট্রেডিংয়ে অভ্যস্ত তাদের প্রতি আমার কোনো সুপারিশ নেই।

শুধু সুপারিশটি হলো যে সকল বিনিয়োগকারী ফান্ডামেন্টাল দেখে, কোম্পানির গ্রোথ দেখে সত্যিকারভাবে কোম্পানি বিশ্লেষণ করে, তাদের রিজার্ভ দেখে, বিগত ৫ বছরে তাদের পেআউট দেখে বিচার-বিশ্লেষণ করে যারা বিনিয়োগ করে, তাদের প্রতি বিনিয়োগে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে আমার সুপারিশ। যারা টেম্পটেড হয়ে শেয়ার কেনে অথবা সার্কুলার ট্রেডিংয়ের প্রভাব বলে শেয়ার কেনে অথবা গুজবে বিশ্বাস করে শেয়ার কেনে অথবা নিজেরা কোনো বিচার-বিশ্লেষণ না করে শেয়ার কেনে তাদের প্রতি আমার কোনো সুপারিশ নেই।

কোন শেয়ারে বিনিয়োগ করব : লিস্টেড কোম্পানির মধ্যে এমন কিছু শেয়ার আছে যারা করোনাভাইরাসে এফেক্টেড না, যেমন পাওয়ার সেক্টর, গ্যাস এবং ইলেকট্রিক্যাল ট্রান্সমিশন সেক্টর অথবা ফার্মাসিউটিকাল সেক্টরস যেগুলো এই মুহূর্তে খুব বেশি এফেক্টেড হওয়ার কথা না।

যখন একটি দেশে অর্থনৈতিক মন্দা চলতে থাকে, কিন্তু প্রাইভেট সেক্টর দুর্বল হয় তখন পাবলিক সেক্টর মানে সরকার এগিয়ে এসে বড় বড় প্রজেক্ট করে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য। সব দেশের সরকার যখন এই কার্যক্রমগুলো শুরু করে শুধু কর্মসংস্থানের জন্য তখন কিন্তু ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রিগুলো যেগুলো রড, সিমেন্ট, বালু কোম্পানিগুলো উপকৃত হয়। একজন বিনিয়োগকারী হিসেবে প্রত্যেকটি অবস্থানকে বিশ্লেষণ করে একটি দীর্ঘ মেয়াদি বিনিয়োগের অবস্থান সুযোগ হয়েছে।

বিশেষ করে আমি প্রথম বলব, ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন যাদের বাংলাদেশ ব্যাংক সহজ শর্তে বিনিয়োগের জন্য যে ২০০ কোটি টাকা দিয়েছেন তাদেরই প্রথম উদ্যোগটা নিতে হবে। যেহেতু এই ২০০ কোটি টাকা ৫ বছরের জন্য বিনিয়োগের সুযোগ করে দিয়েছেন। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এক্সপার্ট বা এনালিস্টরা সরকারের দেওয়া ২০০ কোটি টাকার সুযোগ নিয়ে যদি দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করেন তাতে অবশ্যই তারা লাভবান হবেন এবং পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল করতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে  পারবেন। কোরোনাভাইরাসের কারণে যে অর্থনৈতিক মন্দা আমি মনে করি বেশি দিন হবে না ইনশাআল্লাহ।

বিনিয়োগকারীদের জন্য কিছু সুপারিশ : আমরা যারা দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগে থাকি তারা অবশ্যই বিনিয়োগ করে বসে আছি।

দ্বিতীয়ত, অনেক বড় বিনিয়োগকারী আছেন তারা হাত গুটিয়ে বসে আছেন আমাদের সবার জন্য একটি সুযোগ আছে, যেমন আমি যে শেয়ারগুলো কিনেছি সেই শেয়ারগুলো দাম অনেক কমে গেছে, বিশেষ করে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারমূল্য একেবারে তলানিতে, যদি আমার কাছে টাকা থাকে আমি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ফান্ডামেন্টাল দেখে কিছুটা অ্যাভারেজ করতে পারি, মার্কেট ক্লোজডাউনের আগে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের একটি শেয়ারে বিনিয়োগ করে আমি সুফল পেতে যাচ্ছি। এর অন্যতম কারণ হলো আইনের মাধ্যমে সকল লিস্টেড কোম্পানিকে বাধ্য করা হচ্ছে। ক্যাশ ডিভিডেন্ড দেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ক্যাশ প্লাস বোনাস ঘোষণা করেছে।

আমরা আশা করি অন্যান্য ভালো আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এই মুহূর্তে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করবে।

লেখক : সাবেক সভাপতি এবং বর্তমান পরিচালক, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড

 

Wordbridge School
Link copied!