• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
বছরের প্রথম ২ মাসে বিও বেড়েছে ১ লাখেরও বেশি

আইপিওতে মুনাফা বেশি হওয়ায় বিনিয়োগকারী বাড়ছে


মেহেদী হাসান সজল ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২১, ০৬:৩৩ পিএম
আইপিওতে মুনাফা বেশি হওয়ায় বিনিয়োগকারী বাড়ছে

ফাইল ফটো

ঢাকা: ক্রমবর্ধমান শেয়ারবাজারে ২০২১ সালের প্রথম দুই মাসে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেড়েছে ১ লাখেরও বেশি। পাশাপাশি এই সময়ে নারী বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা বেড়েছে তুলনামূলক অনেক বেশি। প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) মুনাফা বেশি হওয়ায় বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাবধারী বা বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করছেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা।

সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) তথ্যমতে, ২৫ ফেব্রুয়ারি’২১ পর্যন্ত বিও হিসেবধারী বা বিনিয়োগকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৭ জনে। যা  ৩১ ডিসেম্বর’২০ পর্যন্ত ছিলো ২৫ লাখ ৫২ হাজার ১৬৮ জন। সে হিসেবে মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেড়েছে ১ লাখ ৯ হাজার ৬১৯ জন।

ওই সময়ের মধ্যে দেশি হিসেবধারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ১ লাখ ৩ হাজার ৪৯০ জন। ৩১ ডিসেম্বর’২০ পর্যন্ত দেশি হিসেবধারীর সংখ্যা ছিলো ২৩ লাখ ৮২ হাজার ৮৬ জন। সেখান থেকে বেড়ে ২৫ ফেব্রুয়ারি’২১ এসে দাঁড়িয়েছে ২৪ লাখ ৮৫ হাজার ৫৭৬ জনে। 

পাশাপাশি একই সময়ে প্রবাসী হিসেবধারীর সংখ্যা বেড়েছে ৬ হাজার ১শ’ ৩৩ জন। ৩১ ডিসেম্বর’২০ পর্যন্ত মোট প্রবাসী হিসেবধারীর সংখ্যা ছিলো ১ লাখ ৫৫ হাজার ৮৫৯ জন। সেখান থেকে বেড়ে ২৫ ফেব্রুয়ারি’২১ এসে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬১ হাজার ৯৯২ জনে।

২৫ ফেব্রুয়ারি’২১ পর্যন্ত ব্যাক্তি শ্রেণীর বিও হিসাবধরীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৯৯ হাজার ২৬১ জন। যা ৩১ ডিসেম্বর’২০ পর্যন্ত ছিলো ১৬ লাখ ২৯ হাজার ৩৯৫ জন। আর ২৫ ফেব্রুয়ারি’২১ পর্যন্ত যৌথ বিও হিসাবধারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৯ লাখ ৪৮ হাজার ৩০৭ জনে। যা ৩১ ডিসেম্বর’২০ পর্যন্ত ছিলো ৯ লাখ ৮ হাজার ৯৩৮ জন।

তথ্যমতে, ২৫ ফেব্রুয়ারি’২১ পর্যন্ত পুরুষ বিও হিসাবধারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৬১ হাজার ৫৯ জনে। আর নারী হিসাবধারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৬ লাখ ৮৬ হাজার ৫০৯ জন। তবে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুরুষ হিসাবধারীর সংখ্যা ছিলো ১৮ লাখ ৭৭ হাজার ৯৫৯ জন। এবং নারী হিসাবধারী ছিলো ৬ লাখ ৬০ হাজার ৩৬৪ জন। 

সে হিসেবে বছরের প্রথম দুই মাসে পুরুষ হিসেবধারীর সংখ্যা বেড়েছে ৮৩ হাজার ১শ’ জন এবং নারী হসেবধারী বেড়েছে ২৬ হাজার ১৪১ জন। অর্থাৎ জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে পুরুষের তুলনায় নারী হিসেবধারী বা বিনিয়োগকারী বৃদ্ধির হার ছিলো তুলনামূলক অনেক বেশি।

এত দ্রুত সময়ে ১ লাখেরও বেশি বিও একাউন্ট খোলার কারণ কী হতে পারে জানতে চাইলে শেয়ারবাজার বিশ্লেষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর আবু আহমেদ সোনালীনিউজকে বলেন, “এখন যে বিপুল পরিমান বিও একাউন্ট খোলা হয়েছে, এটা মূলত আইপিও’র জন্য। তবে কিছু বিনিয়োগকারী সেকেন্ডারি মার্কেটের জন্যও বিও খুলতেছে, তবে সেটা খুবই সামান্য। আইপিওগুলোতে বিনিয়োগকারীরা ভালো লাভ পায়, তাই আইপিও ধরার জন্যই এ সময়ে বিও একাউন্টের সংখ্যা বেড়েছে। আমি মনে করি, এই সময়ে যে বিও একাউন্ট বেড়েছে তার ৯০ ভাগই আইপিও’র জন্য।”

বর্তমান কমিশন পূর্বের যেকোন সময়ের থেকে বেশি আইপিও অনুমোদন দিচ্ছে বলে জনরব রয়েছে। এত এত আইপিও অনুমোদন ভবিষ্যৎ মার্কেটের জন্য খারাপ দিক বহন করবে কীনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সাধারণ মানুষ মনে করে যে, অল্প সময়ের মধ্যে বেশি আইপিও অনুমোদন দিলে মার্কেট থেকে টাকা কমে যায়, মার্কেট খারাপ দিকে ধাবিত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। তবে আমি মনে করি, আইপিও বন্ধ করে রাখাটা কোন যৌক্তিক সমাধান না। কেননা, আইপিও’র মাধ্যমেই নতুন কোম্পানির ব্যবসা সম্প্রসারণ হবে। বিনিয়োগকারীরাও লাভবান হবে। তবে এক্ষেত্রে কমিশনকে ভালো আইপিও মার্কেটে আনতে হবে। খারাপ কোম্পানি মার্কেটে আসলে বিনিয়োগকারীরা তো লসের সম্মুখিন হবেই।”

আইপিও ধরার জন্য যে বিপুল পরিমান বিনিয়োগকারী মার্কেটে আসছে তারা কী দীর্ঘস্থায়ী বিনিয়োগে থাকবে, এমন প্রশ্নের জবাবে আবু আহমেদ বলেন, “তারা থাকবে কীনা বলা যায় না। তবে ভালো ইন্টারেস্ট পেলে দীর্ঘস্থায়ী বিনিয়োগে থাকতে পারে। আর সেকেন্ডারি মার্কেটে যারা থাকবে বুঝে শুনেই আসতে হবে। যারা যত বেশী দামে শেয়ার ক্রয় কররে তাদের ঝুঁকির জায়গাটাও তত বড় হবে। দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করার জন্য কোন শেয়ারটা কিনতে হবে সেটা চয়েজ করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটা যারা করতে পারবে, তারা অবশ্যই সেকেন্ডোরি মার্কেটেও থাকবে বলে আমি মনে করি।”

সোনালীনিউজ/এমএইচ

Wordbridge School
Link copied!