• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সিএসইর নতুন ভবন উদ্বোধন


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ১১, ২০২১, ০৮:১৬ পিএম
সিএসইর নতুন ভবন উদ্বোধন

প্রতিনিধি

ঢাকা : সিএসই ঢাকা অফিস এর উদ্ভোধন করেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এর চেয়ারম্যন প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) নিকুঞ্জ-০১ এ সিএসই ঢাকা অফিস এর উদ্ভোধন করা হয়। 

উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এর সম্মানিত কমিশনারবৃন্দ খন্দকার কামালুজ্জামান, ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, প্রফেসর ড. মো: মিজানুর রহমান এবং মো: আব্দুল হালিম। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন, বিএসইসি এর চেয়ারম্যন প্রফেসর রুবাইয়াত-উল-ইসলাম, সম্মানিত অতিথি ছিলেন ডিএসই এর চেয়ারম্যান মো: ইউনুসুর রহমান এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন আসিফ ইব্রাহীম।

সিএসই এর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম বলেন, শত ব্যস্ততার মাঝেও যে সম্মানিত কমিশনারবৃন্দ এবং চেয়ারম্যান মহোদয় সিএসই এর আমন্ত্রণে এসেছেন সেজন্য আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমাদের পর্ষদের মধ্যে দুজন রয়েছেন পোশাক শিল্পের প্রতিনিধি। এই প্রতিনিধিদেরকে অবশ্যই পুজিঁবাজারকে সমৃদ্ধ করার জন্য গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করতে হবে। এখানে উল্লেখ্য বাংলাদেশের ইকোনমিক ডেবলেপমেন্ট এ পুজিঁবাজারের বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করা উচিত। বলা যেতে পারে এখন যেটুকু করছি তার চাইতেও অনেক বেশী পালন করতে হবে। আমরা যারা শিল্প উদ্যোক্তারা এই পুজিঁবাজারে আছি তাদেরকে বেশী নির্ভর করতে হয় কমার্শিয়াল ব্যাংক এবং লেন্ডিং এর উপরে। 

দেখা যায় যে, ব্যবসার ব্যাপারে যেহেতু অনিশ্চয়তা আছে এবং যে কোন সময় যে কোন বৈরী পরিস্থিতি তৈরী হতে পারে তাই এই লেন্ডিং করতে গিয়ে অনেক সময় অনেক প্রতিষ্ঠানকে ক্লাসিফাইড হয়ে যেতে হয়। গ্রুপ কোম্পানী হলে অন্য কোম্পানীগুলোর উপরও প্রভাব পড়ে। তাই এই ক্ষেত্রে পুজিঁবাজার হতে টাকা উত্তোলন একটি সমাধান হতে পারে। সেক্ষেত্রে ছোট, মাঝারী এবং বড় সব ধরনের কোম্পানীগুলোর জন্যই এই উদ্যোগ নিতে হবে, উৎসাহিত করতে হবে এবং এই ক্যাপিটাল মার্কেটে লিস্টিং এর মাধ্যমে নিয়ে আসতে হবে, এতে পুজিবাজার সমৃদ্ধ হবে। এই কার্য সাধনে বর্তমান কমিশন বেশ পজিটিভলি কাজ শুরু করেছে, তারা বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট নিয়ে ইতিমধ্যে কাজ করছেন, যার বাস্তব উদাহরন হলো বন্ড। 

সম্প্রতি পুজিঁবাজারে এসেছে বেক্সিমকো এর সুকুক বন্ড এবং লন্ডন মার্কেটে এসেছে বাংলা বন্ড। সামনে আরো কাজ চলেছে। আমরা মনে করি যে যদি আমরা অর্থাৎ সিএসই, ডিএসই এবং বিএসইসি একসাথে কাজ করি তাহলে পুজিঁবাজার একটি শক্ত অবস্থানে উন্নীত হবে। ডিএসই এবং সিএসই মোটেও কম্পিটিটর নই বরং পরিপূরক। সিএসই এবং ডিএসই এর দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ক্যাপিটাল মার্কেটকে সামনে এগিয়ে নিতে যেতে হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে উন্নত দেশে নিয়ে যাবার লক্ষ্যে আমার নেতৃত্বে সিএসই এর পরিচালনা পর্ষদ, সিএসই এর কর্মকর্তাবৃন্দ যেভাবে কাজ করছি, সে জন্য সবার সর্বাত্নক সহযোগীতা ও দোয়া কামনা করছি।

সম্মানিত অতিথি ডিএসই এর চেয়ারম্যান মো: ইউনুসুর রহমান বলেন, এই সিএসইএর নতুন অফিস-এর উদ্ভোধন করার অনুষ্ঠানে আমাকে আমন্ত্রিত করার জন্য অশেষ ধন্যবাদ। আামাদের দেশের অর্থনীতিকে আরো এগিয়ে নিতে অনেক কিছু করার আছে। আমি আনন্দিত যে, বাংলাদেশের মতো দেশে দুটি স্টক এক্সচেঞ্জ আছে। যেহেতু ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ স্বাধীনতার পূর্ব থেকেই কাজ করে আসছে তাই দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন, পরবর্তীতে সিএসই এর যাত্রা হয়েছে এবং তুলনামূলকভাবে নবীন স্টক এক্সচেঞ্জ। আমি সিএসই এর চেয়ারম্যান মহোদয় আসিফ ইব্রাহিম এর সাথে একমত হয়ে আমি বলতে চাই যে, ডিএসই এবং সিএসই মোটেও কম্পিটিটর নয় বরং পরিপূরক। যেহেতু নবীন তাই এই স্টক এক্সচেঞ্জকে এগিয়ে নিতে আামাদের সবার সবাত্নক সহযোগীতা করা উচিত এবং আমরা করবো। পুজিঁবাজার হলো ফাইনান্সিয়াল সেক্টরের একটি বিশেষ খাত, কিন্তু না বললেই নয় যে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের যে পরিচিতি অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বিশ্ব দরবারে এত প্রশংসিত হচ্ছেন তা এই ফাইনান্সিয়াল সেক্টরের জন্য নয় বরং স্যোশাল সেক্টরের জন্য। পক্ষা›তরে ফাইনান্সিয়াল সেক্টরের কোন খাতই তেমন কোন উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারেনি। বিশদ বলতে গেলে বলা যায়, ইন্সুরেন্স এবং পুজিঁবাজার অনেকখানি পিছিয়ে।

আশার কথা হলো যে, এই কমিশন এর কার্যক্রম ইতিমধ্যে প্রশংসিত এবং মানুষের মধ্যে আস্থার ভাব দেখা যাচ্ছে, কিছুটা পজিটিভ ধারা দেখছি ,সামনে আরো দেখব এবং এটা বজায় থাকুক এবং সামনে আরো ভালো দিন দেখবো। স্যোশাল সেক্টর এবং অন্যান্য সেক্টরের মতো এই ফাইনান্সিয়াল সেক্টরও এই একুশের দশকে কিছু একটা করে দেখাবে। যদি এই ফাইনন্সিয়াল সেক্টর ঘুরে দাড়াতে না পারে তবে সাসটেইনেবল ডেবেলপমেন্ট করা কঠিন হবে। দু:খের বিষয় যে, ব্যাংকের যে নন-পারফরমিং লোন যেটা তিন বছর আগের হিসেব অনুযায়ী টপ ২০ সরকারী ব্যাংকের ডিফল্টার ছিল মোট লোনের ৫৪ ভাগ যা এখন ৭০ ভাগ এ পৌঁচেছে। এটা কি আশা করা যায় যে বড়রা আমাদের দেশকে পেছনে টানবে আর কেবল তিন শ্রেনীর লোক বিদেশী শ্রমিক, কৃষক এবং পোশাক শিল্পের লোক এগিয়ে যেতে অবদান রাখবে। তা না হয়ে আমরা সবাই অর্থাৎ সব রেগুলেটরি প্রতিষ্ঠান মিলে কাজ করলে দেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবো।

প্রধান অতিথি বিএসইসি এর চেয়ারম্যন প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, এই সিএসইএর নতুন অফিস এর উদ্ভোধন করার জন্য আমাকে আমন্ত্রিত করার জন্য অশেষ ধন্যবাদ। আমাদের অর্থনীতিতে অনেক কিছু করার আছে। আমরা দায়িত্ব নেয়ার পরে চেষ্টা করছি ক্যাপিটাল মার্কেট যেন আামাদের অর্থনীতিতে আরো অবদান রাখতে পারে সে জন্য কি করে নতুন নতুন এভিনউ খোলা যায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, যেখানে ঠিক ঠাক করা সম্ভব সেখানে সেটা করা হচ্ছে, যেখানে সম্ভব হচ্ছে না সেখানে এক্সিট পলিসি করছি, প্রসিকিউশন করছি। কমিশনের সম্মানিত সদস্যগন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি এবং জেনে অবাক হবেন যে গত বছরের ১৭ মে থেকে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত কমিশনের কেউই একদিনও ছুটি নেননি এবং ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। 

তিনি বলেন, আমি ডিএসই চেয়ারম্যান এর সাথে একাত্ন হয়ে এটা বলতে পারি যে, মানি মার্কেটে এই নন-পারফরমিং লোন এর পরিমান যা কাগজে কলমে রয়েছে তার চাইতে আসল পরিমান অনেক বেশী। গত ৭-৮ মাসের মধ্যে ব্যাকিং সেক্টরের ক্ষেত্রে যে এক্সপোজার এবং ইরোশন ছিল তা অনেকখানি কমে গেছে । তারা শেষ কোর্য়াটারে বেশ প্রফিট করেছে এবং যে প্রফিট তারা করেছে তাতে তাদের ক্ষতি পুষিয়ে লাভের মুখ দেখছেন। আমি সব ব্যাংকের সাথে নিয়মিত খোঁজখবর রাখি এবং আপনারা যদি খোঁজ নেন দেখবেন তাদের ইনভেস্টমেন্ট, রিটানর্, প্রফিট গত ০৩ মাসে অনেক লাভ করেছে। আমরা যদি আরেকটুবেশী কাজ করি, রেগুলেটর, স্টক এক্সচেঞ্জ এবং ইন্টারমিডিয়ারী সবাই মিলে, তাহলে আমরা যে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি তা অর্জিত হবে এবং বছরের শেষে সবাই যারা (ব্যাংক, ইনস্টিটিউশন) ইনভেস্টমেন্ট করেছে তারা লাভবান হবেন।

ডিএসই চেয়ারম্যান মো: ইউনুসুর রহমান সাহহেরে সাথে মিলিয়ে বলতে পারি যদি আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌছাঁতে পারি তবে ক্যাপিটাল মার্কেটকে নিয়ে কোন কথা বলার কিছু থাকবে না এবং কোন দোষ থাকবে না। কিন্তু ব্যাকিং সেক্টরের ক্ষেত্রে সে সুযোগ কম। আমাদের অনেক কাজ করতে হবে এবং অনেক কষ্ট করতে হবে। করোনার মধ্যেও যে কাজ করে যাচ্ছি তার ফলও আমরা পাচ্ছি। আমরা খবর পেয়েছি যে ডিএসই এর যে নতুন অফিস উদ্ভোবন করেছে সেখানে কর্মচাঞ্চল্য এসেছে। শুধুবেতনই পর্যাপ্ত নয় কাজ করার জন্য এর পরিবেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং সেটি কর্মকর্তাদের দিতে হবে। কর্মকর্তাদের বুদ্ধি বিবেচনা, কর্মকর্তাদের দক্ষতার সঠিক ব্যবহার পেতে হলে সুন্দর পরিবেশও দরকার। এই যে সিএসই এর কর্মকর্তাদের জন্য পরিচালনা পর্ষদ এত সুন্দর একটি পরিবেশ দিতে পেরেছেন সে জন্য আমি আনন্দিত। উত্তোরত্তর উন্নতি কামনা করছি।

সিএসই এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মামুন-উর-রশিদ সমাপনী বক্তব্য রাখেন। সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষনা করেন।

এ সময় সিএসই এর সম্মানিত বোর্ড সদস্যগণ প্রফেসর এসএম সালামত ঊল্লাহ ভূঁইয়া, এস এম আবু তায়েব, সোহেল মোহাম্মদ শাকুর, মো: লিয়াকত হোসেন চেীধুরী, এফসিএ, এফসিএমএ, ব্যারিষ্টার আনিতা গাজী ইসলাম, সাইদ মোহাম্মদ তানভীর, মো: ছায়াদুর রহমান, মো: সিদ্দিকুর রহমান, মো:মোহাম্মেদ মহিউদ্দিন, এফসিএমএ এবং সিএসসি এর উর্ধ্বতন কর্মকর্তবৃন্দ।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!