• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ও স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের জন্য পলিসি সহায়তা চায় ভিসিপিয়াব


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ৬, ২০২১, ০৫:২৩ পিএম
ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ও স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের জন্য পলিসি সহায়তা চায় ভিসিপিয়াব

ফাইল ফটো

ঢাকা: মহামারি পরবর্তী পরিস্থিতি থেকে কাটিয়ে উঠতে এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ও স্টার্টআপের জন্য বিনিয়োগ ও অ্যাক্সেস টু ফিন্যান্স ত্বরান্বিত করতে অল্টারনেটিভ ফান্ড ম্যানেজারদের জন্য ট্যাক্স অব্যহতি এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক বিনিয়োগে ফান্ড অব ফান্ড তৈরির আহ্বান জানিয়েছে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইক্যুইটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ভিসিপিয়াব)। 

বৃহস্পতিবার (৬ মে) সংগঠনটি আয়োজিত ‘ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড স্টার্টআপস ফর এ পোস্ট-কোভিড রেসিলিয়েন্ট ইকোনমি’ শীর্ষক ভার্চুয়াল গোলটেবিল আলোচনায় এই আহ্বান জানানো হয়। আগামী জুনে ২০২১-২২ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটকে সামনে রেখে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) এর সাথে যৌথভাবে এই ভার্চুয়াল গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে ভিসিপিয়াব।

গোলটেবিল সেশন প্রধান অতিথি হিসিবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এর চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম, বিএসইসি কমিশনার প্রফেসর ড. শেখ সামছুদ্দিন আহমেদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মোঃ নাছের। ভিসিপিয়াব সভাপতি শামীম আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান আরিফ খান। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) এর সাধারণ সম্পাদক মুনির হোসেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি বলেন, সরকার ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ও স্টার্টআপ খাতকে সহযোগিতা করছে এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থা, বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানের সাথে মিলে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা যৌথভাবে এমন পরিবেশ তৈরির পরিকল্পনা করছি যেখানে স্টার্টআপগুলো সত্যিকারভাবে টিকে থাকতে পারে এবং দেশের অর্থনীতিতে গুরূত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এছাড়াও উদ্যোক্তাদের টিকে থাকা ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা সহজ করতে প্রয়োজনীয় নীতিমালা তৈরিতে কাজ করার লক্ষ্য রয়েছে।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এর চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, স্টার্টআপে বিনিয়োগ বাড়াতে ও যথাযথ নিয়মে শেয়ার বাজারে স্টার্টআপগুলোকে আনতে আমরা প্রতিনিয়তই নতুন আইন ও নীতিমালা বাস্তবায়ন করছি। প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে স্টার্টআপগুলো উদ্ভাবনী ব্যবসায়িক মডেল ব্যবহার করে। শেয়ার বাজারে সম্পৃক্তি এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে আমরা এসব ব্যবসাকে সহযোগিতা করতে কাজ করে যাচ্ছি, যাতে তারা দেশের অর্থনীতিতে সর্বাধুনিক উদ্ভাবন নিয়ে আসতে পারে।

ভিসিপিয়াব সভাপতি শামীম আহসান বলেন, আমরা দৃড়ভাবে বিশ্বাস করি আগামী ১৫ বছরে বিশ্বের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান ইমপ্যাক্ট তৈরিকারী ব্যবসায় উদ্যোগী হবে এবং বিশ্বের অধিকাংশ জনগণ এসব কোম্পানি থেকেই পণ্য ও সেবা গ্রহণ করবেন। এটি আমাদেরকে কোভিড-১৯ এর মতো মহামারিতে কম ক্ষতিগ্রস্থ হতে এবং একটি স্থিতিশীল অর্থনীতি তৈরিতে সহায়তা করবে। এই ইমপ্যাক্ট ইকোসিস্টেমকে সহায়ক নীতিমালা ও ট্যাক্স ছাড়ের মাধ্যমে দ্রুত প্রবৃদ্ধি ঘটাতে সরকারের বিভিন্ন বিভাগ ও সংস্থা যেমন অর্থ মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালন, আইসিটি বিভাগ, কেন্দ্রীয় ব্যাংক, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে এগিয়ে আসতে হবে।

বিএসইসি কমিশনার প্রফেসর ড. শেখ সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের অর্থনীতিতে নতুন স্টার্টআপ ব্যবসা তৈরিতে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে। স্টার্টআপগুলোকে শুধুমাত্র যেসব শহরে প্রযুক্তির সমৃদ্ধি রয়েছে সেসব শহর আর উচ্চশিক্ষিত ও সুবিধাপ্রাপ্ত শ্রেণীর কাছে সেবা পৌঁছালে হবে না। এর পরিবর্তে, তাদের ব্যবসায়ে ভিন্নতা আনতে বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে এবং অধিকসংখ্যক মানুষের কাছে সেবা পৌঁছাতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্ণর আবু ফরাহ মো. নাছের বলেন, স্টার্টআপ এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটালকে বর্তমান নীতিমালার অধীনে সম্ভব সর্বোচ্চ পরিমাণ সহায়তা দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। ইতিমধ্যেই ঋণ সুবিধার জন্য বাজারে চাহিদা তৈরি হয়েছে এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ও স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে ব্যাংকিং খাতকে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে হবে।

শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান আরিফ খান বলেন, আজকের স্টার্টআপগুলোই বাংলাদেশে আগামী দশকের ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে। গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশ সরকার প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছে; তারই ধারাবাহিকতায় ক্রমবর্ধমান স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের প্রধান প্রতিবন্ধকতাগুলো দ্রুত সরিয়ে ফেলে এশিয়ার অনাবিষ্কৃত সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য আমি সকল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও অংশীদারদের প্রতি অনুরোধ জানাই।

প্রথম আলোর বিজনেস এডিটর ও ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) এর নির্বাহী সদস্য সুজয় মহাজন বলেন, স্টার্টআপগুলো স্থানীয় বাজার থেকে বিনিয়োগ পাওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়। এটি নির্দেশ করে যে দেশে তহবিল ব্যবস্থাপনা পরিস্থিতি কতটা নাজুক। সরকার এবং ব্যাংকগুলোকে নীতিমালা তৈরি করে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল এবং স্থানীয় স্টার্টআপগুলোর জন্য তহবিলের ব্যবস্থা করে দিতে হবে যাতে তারা আর্থিক সমস্যা দূর করতে পারে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের সভাপতি হাসান ইমাম রুবেল, অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জায়েদ বখত, সিফ বাংলাদেশ ভেঞ্চারস এলএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসিফ মাহমুদ, মাইক্রোসফটের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের প্রধান অংশীদার কর্মকর্তা আনহ ফাম, সহজ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মালিহা কাদির, ভিসিপিয়াব এর সাধারণ সম্পাদক শওকত হোসেন, ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মুনির হোসেন, চালডাল এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াসিম আলিম, বিডি ভেঞ্চার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিক-উল-আজম, মাসলিন ক্যপিটাল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ হাফিজ; অ্যালায়েন্স ক্যাপিটাল এ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএইচ আসাদুল ইসলাম, অ্যাথেনা ভেঞ্চার্স এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব এইচ মজুমদার, আইডিএলসি ফিন্যান্স লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক জাভেদ নূর; অ্যাথেনা ভেঞ্চার্স এর চিফ অপারেটিং অফিসার মাহাদি হাসান; বাংলাদেশ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল লিমিটেডের আনোয়ার জাহিদ প্রমুখ।

সোনালীনিউজ/এমএইচ

Wordbridge School
Link copied!