• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

লকডাউনে ডিএসইতে বাজার মূলধন বেড়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকা


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ২৯, ২০২১, ০১:১৮ পিএম
লকডাউনে ডিএসইতে বাজার মূলধন বেড়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকা

ফাইল ফটো

ঢাকা: করোনাভাইরাসের ক্রমবর্ধমান সংক্রমণে লাগাম টানতে সরকারের জারি করা লকডাউন বা কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে সীমিত পরিসরে লেনদেন চলাকালেও উভয় এক্সচেঞ্জের সবগুলো সূচক ও লেনদেনের সঙ্গে বেড়েছে বাজার মূলধনও। গত ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া লকডাউন পরবর্তী ২৮ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন বেড়েছে ৩৯ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা।
 
সূত্র মতে, ১৫ এপ্রিল লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইতে বাজার মূলধন ছিল ৪ লাখ ৬২ হাজার ৭৫৪ কোটি টাকা। আর গত বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৫ লাখ ২ হাজার ৭৪৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ চলমান লকডাইনে বিনিয়োগকারীরা প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা বাজার মূলধন ফিরে পেয়েছে।

বাজারসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কিছুদিন ধরে ডিএসইতে লেনদেন দেড় থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। এতে প্রতিদিনই বাজারে নতুন নতুন বিনিয়োগ আসছে। বিশেষ করে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওতে আবেদনের ক্ষেত্রে সেকেন্ডারি বাজারে ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগের বাধ্যবাধকতা আরোপের কারণে চলতি মাসের শুরু থেকে এ বিনিয়োগ এসেছে। আগামী রোববার শুরু হচ্ছে একটি বিমা কোম্পানির আইপিও আবেদন গ্রহণ। ১৯ মে যেসব বিনিয়োগকারীর সেকেন্ডারি বাজারে ২০ হাজার টাকার বেশি বিনিয়োগ ছিল, তাঁরাই এ আইপিওতে আবেদনের সুযোগ পাবেন।

এ ছাড়া আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট যত ঘনিয়ে আসছে, শেয়ারবাজারও তত বেশি চাঙা হচ্ছে। আগামী ৩ জুন নতুন অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আর ৩০ জুন শেষ হবে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছর। চলতি অর্থবছরে মাত্র ১০ শতাংশ কর দিয়ে শেয়ারবাজারে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়, এ সুবিধা ৩০ জুন শেষ হয়ে যাবে। বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ধারণা করছেন, শেষ দিকে এসে এ সুবিধা নিতে অনেকে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করছেন।

এদিকে বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহে লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৪ লাখ ৯২ হাজার ২৯২ কোটি ৯ লাখ ৬৫ হাজার ৫৪২ টাকা। যা সপ্তাহজুড়ে লেনদেন শেষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ২ হাজার ৭৪৩ কোটি ৫০ লাখ ২৭ হাজার ৭৪৭ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহ শেষে চার কার্যদিবসে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ১০ হাজার ৪৫১ কোটি ৪০ লাখ ৬২ হাজার ২০৫ টাকা বা ২ দশমিক ১২ শতাংশ।

বাজার মূলধন বাড়লেও গত সপ্তাহে ডিএসইতে টাকার অংকে মোট লেনদেন কমেছে। গত সপ্তাহে চার কার্যদিবসে ডিএসইর মোট লেনদেন হয়েছে ৭ হাজার ৬৮৩ কোটি ৭৮ লাখ ৭৩ হাজার ১১৫ টাকা। যেখানে তার আগের সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৮ হাজার ৪২৪ কোটি ৪৬ লাখ ২৩ হাজার ৬৪০ টাকা। সে হিসেবে টাকার অংকে ডিএসইর মোট লেনদেন কমেছে ৭৪০ কোটি ৬৭ লাখ ৫০ হাজার ৫২৫ টাকা বা ৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ।

এদিকে গত সপ্তাহে টাকার অংকে ডিএসইর গড় লেনদেন বেড়েছে। গত সপ্তাহে চার কার্যদিবসে ডিএসইর গড় লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৯২০ কোটি ৯৪ লাখ ৬৮ হাজার ২৭৯ টাকা। যা তার আগের সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবসে ছিল ১ হাজার ৬৮৪ কোটি ৮৯ লাখ ২৪ হাজার ৭২৮ টাকা। সে হিসাবে গত সপ্তাহে ডিএসইর গড় লেনদেন বেড়েছে ২৩৬ কোটি ৫ লাখ ৪৩ হাজার ৫৫১ টাকা বা ১৪ শতাংশ। 

সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৭২ দশমিক ৭৫ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৯৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৯৮৫ দশমিক ৮২ পয়েন্টে, যা আগের সপ্তাহ শেষে ছিল ৫ হাজার ৮১৩ দশমিক শূন্য ৭ পয়েন্টে। নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ ১১ দশমিক ২৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৫২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৮৯ দশমিক ৭৪ পয়েন্টে, যা আগের সপ্তাহ শেষে ছিল ২ হাজার ১৭৮ দশমিক ৪৭ পয়েন্টে। ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ১২ দশমিক ২০ পয়েন্ট বা দশমিক ৯৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৮৫ দশমিক শূন্য ১ পয়েন্টে, যা আগের সপ্তাহে ছিল ১ হাজার ২৭২ দশমিক ৮১ পয়েন্ট।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৫টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৩৭টির, কমেছে ৯২টির, অপরিবর্তিত রয়েছে ৪১টির আর লেনদেন হয়নি ৫টির।

খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ২২ দশমিক ৭০ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে বীমা খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৯ দশমিক ৭০ শতাংশ দখলে নিয়েছে ব্যাংক খাত। ১০ দশমিক ৯০ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বিবিধ খাত। ৮ দশমিক ১০ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে চতুর্থ অবস্থানে ছিল বস্ত্র খাত। আর ৬ দশমিক ৩০ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে আর্থিক খাত।

দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গত সপ্তাহে লেনদেন শুরুর আগে বাজার মূলধন ছিল ৪ লাখ ১৮ হাজার ২৪৫ কোটি ৯৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা। যা সপ্তাহজুড়ে লেনদেন শেষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২৮ হাজার ১৯১ কোটি ৭৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহ শেষে চার কার্যদিবসে সিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৯ হাজার ৯৪৫ কোটি ৭৭ লাখ ২০ হাজার টাকা বা ২ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

সিএসইতে গত সপ্তাহের চার কার্যদিবসে মোট লেনদেন হয়েছে ৪৪৪ কোটি ১১ হাজার ৯৪৪ টাকার। আগের সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪৭৩ কোটি ৮৬ লাখ ১৪ হাজার ৪৬৭ টাকার। সেই হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন কমেছে ২৯ কোটি ৮৬ লাখ ২ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা বা ৬ দশমিক ৩০ শতাংশ।

সোনালীনিউজ/এলএ/এমএইচ

Wordbridge School
Link copied!