• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘এখনই অপূর্ব সুযোগ, আমেরিকার বন্ধুরা আসুন বিনিয়োগ করুন’


নিজস্ব প্রতিনিধি জুলাই ৩১, ২০২১, ১১:৪০ এএম
‘এখনই অপূর্ব সুযোগ, আমেরিকার বন্ধুরা আসুন বিনিয়োগ করুন’

প্রতিনিধি

ঢাকা: বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের এখন অপূর্ব সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়ে মার্কিন আমেরিকার ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ করেছেন বাংলাদেশে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। 

তিনি বলেছেন, আমেরিকা বিশ্বের অনেক বড় অর্থনীতির দেশ। এদেশের বিনিয়োগকারী, ব্যবসায়ী বন্ধুরা আসুন বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুন। আমরা চাই আপনারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুন। বাংলাদেশের সক্ষমতা আছে।

শুক্রবার (৩০ জুলাই) লস অ্যাঞ্জেলসে স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৫টায় (বাংলাদেশ সময় শনিবার, ৩১ জুলাই ভোর সাড়ে ৬টা) ইন্টারকন্টিনেন্টাল লস অ্যাঞ্জেলস ডাউনটাউন হোটেলের উইলশায়ার গ্রান্ড বল রুমে শেয়ারবাজার বিষয়ক রোড শো’র তৃতীয় পর্বের শুরুতে তিনি এসব কথা বলেন। 

অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ শেয়ার বাজার গত এক বছরে সেরা পারফরম্যান্স দেখিয়েছে।  গতবছরের সেপ্টেম্বর এবং ডিসেম্বর মাসে শেয়ারবাজার থেকে সবচেয়ে বেশি রিটার্ন পেয়েছে বিনিয়োগকারীরা। যা এশিয়ান ফ্রন্টিয়ার জার্নালে উঠে এসেছে। করোনাকালেও শেয়ারবাজারে দিন দিন টার্নওভার বাড়ছে, মার্কেট ক্যাপিটাল বাড়ছে, ইন্ডেক্স বাড়ছে। আমাদের মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন জিডিপির ১২ শতাংশ।  

তিনি বলেন, শুধু সেকেন্ডারী মার্কেটে নয়, বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে নতুন নতুন পণ্য আসছে। বন্ড মার্কেট উন্নত হচ্ছে। বিশেষ করে ব্লু বন্ড, সুকুক বন্ড, পারপেচুয়াল বন্ড আছে শেয়ারবাজারে। তুলনামূলকভাবে এসব পণ্যে সবচেয়ে বেশি রিটার্ন পাওয়া যায়। কোম্পানিগুলো বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে সফলতা দেখিয়েছে। এছাড়া আমাদের শেয়ারবাজারে মিউচুয়াল ফান্ড রয়েছে। মিউচুয়াল ফান্ড খাত দিন দিন উন্নতি হচ্ছে। এসব কারণে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের সম্ভাবনা রয়েছে। আর এই সম্ভাবনাময় শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের সুর্বন সুযোগ অপেক্ষা করছে। 

বিএসইসি চেয়ারম্যান, বাংলাদেশের শেয়ার মার্কেটে সুশাসন নিশ্চিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে ২ কোটি লোক প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখছে শেয়ারবাজার। সম্ভাবনাময় শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের অপূর্ব সুযোগ রয়েছে। প্রবাসীদের জন্য শেয়ারবাজারে নিটা একাউন্টের মাধ্যমে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। এই একাউন্টের মাধ্যমে বিনিয়োগের অর্থ এবং লভ্যাংশ, মুনাফা কোন ধরনের অনুমতি ছাড়াই বিদেশে পাঠানোর সুযোগ আছে। 

অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে ১০০ অর্থনৈতিক জোন রয়েছে। এগুলো খুবই ব্যবসা সহায়ক। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে ব্যবসার প্লট প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া প্রস্তত রয়েছে জ্বালানি, গ্যাস এবং অবকাঠামো সুবিধা। সবকিছু প্রস্তুত শুধু একজন বিনিয়োগকারী বাংলাদেশে এসে ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের জন্য এসব অথনৈতিক অঞ্চলগুলো খুবই আকর্ষনীয়। ফলে জাপানিজ বিনিয়োগকারীরা ম্যানুফ্যাক্টারিং প্ল্যান্ট করতে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাজ করেছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে পর্যটন একটি বড় ধরনের বিনিয়োগের আকর্ষনীয় খাত। বাংলাদেশের কুয়াকাটা একটি বিশেষ পর্যটন অঞ্চল। যেখানে সুর্যোদয় এবং সুর্যাস্ত দেখা যায়। এছাড়া কক্সবাজার বৃহত্তম সি বিচ, সিলেট, টাঙ্গুয়া হাওর, সুন্দরবন ম্যানগ্রোভ অঞ্চলের মতো আকর্ষনীয় পর্যটন জোন রয়েছে বাংলাদেশে। তাছাড়াও প্রাকৃতিক অনেক সুন্দর সুন্দর এলাকা বাংলাদেশে রয়েছে। ফলে বড় ধরনের বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে পর্যটন খাতে। এছাড়া রয়েছে এভিয়েশন খাতে বিনিয়োগের সুযোগ।  

'স্টার্টআপ একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত। তরুন প্রজন্ম নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে স্টার্ট আপ কোম্পানি করছে। পাঠাও বাংলাদেশের একটি ছোট কোম্পানি, তবুও সেটি মিলিয়ন ডলারের কোম্পানি। তরুণ প্রজন্ম নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে কাজ করছে। তারা সফলও হচ্ছে। এ খাতে বিনিয়োগে ভালো রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে এ খাতে অনেক জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি হচ্ছে।'

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশে অবকাঠামোগত সুবিধা, গ্যাস, বিদ্যুৎ জ্বালানির সুবিধা আছে। দিন দিন রিজার্ভে রেকর্ড সৃষ্টি করছে। বাংলাদেশে বর্তমানে যে পরিমাণ রিজার্ভ রয়েছে তা দিয়ে ১০ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। বাংলাদেশের ফরেন এক্সচেঞ্জ খুবই শক্তিশালী। বাংলাদেশে ব্যাংকের আমানতের সুদের হার কম। এ কারণে ব্যবসার উৎপাদন খরচ কম হচ্ছে।

দেশের শেয়ারবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি, বিনিয়োগ সুযোগ-সুবিধা এবং উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত তুলে ধরতে যুক্তরাষ্ট্রের চারটি শহরে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) উদ্যোগে এই রোড শো’র আয়োজন করা হয়েছে। এর আগে নিউ ইয়র্কে গত ২৬ জুলাই এই রোড শো’র প্রথম পর্ব ও ২৮ জুলাই ওয়াশিংটন ডিসিতে দ্বিতীয় পর্ব সাফল্যের সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়।

ইন্টারকন্টিনেন্টাল লস অ্যাঞ্জেলস ডাউনটাউন হোটেলের উইলশায়ার গ্রান্ড বল রুমে রোড শো’র তৃতীয় পর্বের অনুষ্ঠানে স্থানীয় সময় বিকাল ৫টা থেকে আমন্ত্রিত অতিথিদের রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়। রেজিস্ট্রেশন শেষে সাড়ে ৫টায় রোড শোর অনুষ্ঠানের মূল কর্মসূচি শুরু হয়। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সেক্টর নিয়ে আগত অতিথিরা প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখবেন। বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা এবং সরকারের গৃহীত বিনিয়োগবান্ধব নীতি আমন্ত্রিত অতিথিদের সামনে তুলে ধরা হবে। এরপর থাকবে প্যানেল আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্ব। 

লস অ্যাঞ্জেলসে অনুষ্ঠিত রোড শোতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম, বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. নজরুল ইসলাম, বিএসইসির কম কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত রয়েছেন।

সোনালীনিউজ/এমএইচ

Wordbridge School
Link copied!