ঢাকা: কোভিড-১৯ এর কারণে দীর্ঘদিন শিথিল থাকা অর্থনীতিতে দেশের পুঁজিবাজার বেশ চাঙা থাকলেও নতুন তালিকাভুক্তির প্রক্রিয়া থেকে কোম্পানিগুলো মুখ ফিরিয়ে নেয়। দীর্ঘ দেড় বছর পর বর্হিবিশ্বের সঙ্গে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা স্বাভাবিক হলে কোম্পানিগুলো আবারও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার দিকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় কোম্পানিগুলোর অর্থনৈতিক অবস্থা দুর্বল হওয়া এবং ব্যবসায়ীক কার্যক্রমের পরিধি কমে আসায় পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে কম আগ্রহ দেখা যায়। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হতে কোম্পানিগুলোর আগ্রহের গতি বাড়বে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
বর্তমানে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) অনুমোদন পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে ১১টি কোম্পানি। এই কোম্পানিগুলো বাজার থেকে মোট ১ হাজার ১৭৭ কোটি টাকা তুলবে বলে জানা গেছে। যা সাম্প্রতিক মাসগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ পরিমাণ। এছাড়াও আরও বেশ কয়েকটা কোম্পানি আইপিওতে আসার পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছেন ইস্যু ম্যানেজাররা।
একজন ইস্যু ম্যানেজার জানান, কোভিড-১৯ এর অস্থিরতা পরিস্থিতি অতিক্রমের পর কোম্পানিগুলো আবারও শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হতে আগ্রহ প্রকাশ করছে। এই ইস্যু ম্যানেজার নিজেও বেশ কয়েকটি কোম্পানির ইস্যু করানোর কাজে ব্যস্ত রয়েছেন।
বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় চলতি মাসেই ১১টি কোম্পানির পাবকিল অফার বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড স্টক এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) জমা দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ইস্যু ম্যানেজাররা। এর মধ্যে ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতির ৭টি কোম্পানি এবং বুক বিল্ডিং পদ্ধতির ৪টি।
ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতির কোম্পানিগুলো হলো- গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, মেঘনা ইন্স্যুরেন্স, সিনেসিস আইটি, সুবরা সিস্টেমস, স্টার এডহেসিভস এবং মিডল্যান্ড ব্যাংক লিমিটেড। এই ৭টি কোম্পানি বাজার থেকে ৬৭৬ কোটি টাকা তুলতে চায়।
আর বুক বিল্ডিং পদ্ধতির কোম্পানিগুলো হলো- এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, ইসলাম অক্সিজেন, ওমেরা পেট্রোলিয়াম এবং জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং। কোম্পানিগুলো বাজার থেকে ৫০১ কোটি টাকা তুলবে।
গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড শেয়ারবাজার থেকে ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে ৪২৫ কোটি টাকা এবং এনআরবি ব্যাংক লিমিটেড ১০০ কোটি টাকা উত্তলন করতে চায়। একই পদ্ধতিতে মিডল্যান্ড ব্যাংক লিমিটেড ৭০ কোটি টাকা, মেঘনা ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড ১৬ কোটি টাকা, সুবরা সিস্টেমস লিমিটেড ৩০ কোটি টাকা এবং সিনেসিস আইটি লিমিটেড ৩০ কোটি টাকা তুলতে চায়। এছাড়া কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর অফারে (কিউআইও) ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে ৫ কোটি টাকা উত্তলন করতে চায় পারটেক্স গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান স্টার এডহেসিভস লিমিটেড।
বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে অর্থ উত্তলন করতে যাওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজস লিমিটেড ৯৫ কোটি টাকা, ইসলাম অক্সিজেন লিমিটেড ৯৩ কোটি টাকা, জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং ৭৫ কোটি টাকা এবং ওমেরা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড ২৩৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা তুলতে চায়। এই ৪টি কোম্পানির মধ্যে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজস লিমিটেড আগামী ২৪ অক্টোবর এবং ইসলাম অক্সিজেন লিমিটেড ২৫ অক্টোবর গুলশানের হোটেল রেডিসন এ রোড শো করবে।
সোনালীনিউজ/এমএইচ
আপনার মতামত লিখুন :