• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পেপারলেস ডিএসই‍‍`র যাত্রা শুরু


নিজস্ব প্রতিনিধি জানুয়ারি ২৬, ২০২২, ০৪:৪৮ পিএম
পেপারলেস ডিএসই‍‍`র যাত্রা শুরু

ঢাকা: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) অফিসিয়াল কার্যক্রম শতভাগ ডিজিটাইজেশন করার জন্য পেপারলেস ডিএসই'র যাত্রা শুরু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে এখন থেকে অফিসিয়াল কার্যক্রমে চিঠি কিংবা মেইলের ব্যবহার কমে যাবে।

বুধবার (২৬ জানুয়ারি) ডিএসই'র ট্রেনিং একাডেমির রুমে আয়োজিত 'পেপারলেস ডিএসই'র' অনুষ্ঠানে এই প্রোজেক্টের উদ্বোধন করা হয়।

ডিএসইর মুখপাত্র সফিকুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে করেন ডিএসই'র পরিচালক মোহাম্মদ শাকিল রিজভী। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিএসইর চেয়ারম্যান মো. ইউনুসুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ডিএসই'র পরিচালক সালমা নাসরিন।

এছাড়াও প্যানেল ডিসকাশনে ছিলেন বিএসইসি'র নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুর রহমান, ডিএসই ব্রোকারেজ এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (ডিবিএ) প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি রোজারিও, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) প্রেসিডেন্ট মো. ছায়েদুর রহমান, ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) সভাপতি জিয়াউর রহমান।

অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আমিন ভূইয়া। তিনি বলেন, কোভিড-১৯ আমাদের ডিজিটাল হতে সাহায্য করেছে। ভবিষতে কোভিড থাকুক কিংবা না থাকুক, আমাদের ডিজিটাল পদ্ধতিতে কাজ করতে হবে। ডিএসই এখন অনেক ডিজিটাল পদ্ধতিতে কাজ করছে। নতুন এই প্রোজেক্টের মাধ্যমে ডিএসইর অভ্যান্তরীন কার্যক্রম আস্তে আস্তে শতভাগ ডিজিটাল পদ্ধতিতে করা সম্ভব হবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. ইুউনুসুর রহমান বলেন, ডিএসইর জন্য আজকে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। আজকের উদ্বোধনী প্রোজেক্টের মাধ্যমে আস্তে আস্তে ডিএসই পেপারলেস হবে। এই জার্নিকে আমাদের অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মান অনুযায়ি ডিজিটাইজেশনের ক্ষেত্রে অনেক ভালো অবস্থানে আছে। বাংলাদেশকে ডিজিটাইজেশন করার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ ছিলো। কিন্তু আমাদের সরকারের প্রচেষ্টায় আমরা ডিজিটাল হওয়ার দৌড়ে অনেক এগিয়ে গেছি। 

মো. ইউনুসুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের অবস্থান অনুযায়ি ডিজিটাইজেশনের ক্ষেত্রে আমরা এগিয়ে গেলেও ডিএসই এক্ষেত্রে অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। আমরা আমাদের নতুন এমডির মাধ্যমে ডিজিটাইজেশনের ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে যেতে পারবো বলে মনে করছি। ডিজিটাইজেশনে আমরা মাত্র নাম লিখেয়েছি। এখানে কাজ করার অনেক জায়গা আছে। যেটা আমাদের নতুন এমডির মেধা ও দুরদর্শীতাকে কাজে লাগিয়ে করতে পারবো বলে মনে করছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ক্যাপিটাল মার্কেট অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে ক্যাপিটাল মার্কেট ৮০ শতাংশ বেড়েছে। এ মার্কেটকে আরো এগিয়ে নিতে আমাদের কাজ করতে হবে। আমাদের ক্যাপিটাল মার্কেট এবং ইন্স্যুরেন্স খাতকে ভালোভাবে উপস্থাপন করতে না পারি তাহলে ভবিষ্যতেও অর্থনীতিকে সাসটেইনেবল করতে পারবো না।

ডিএসইর পরিচালক সালমা নাসরিন, এনডিসি বলেন, সময় অপচয় রোধ করার জন্য পেপারলেস পলিসি একটি যুগোপযোগী পদক্ষেপ। ডিএসইর জন্য এটা হবে একটি মাইলফলক। এটি কেবল ডিএসইর জন্য নয়, অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের জন্যও একটি অভিনব মাত্রা যোগ করবে বলে মনে করছি।

তিনি বলেন, পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে ২২ ঘন্টা লেনদেন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমাদেরও সেই দিকে যেতে হবে। আমাদের পিছিয়ে থাকলে চলবে না। 

প্যানেল আলোচনার শুরুতে বিএসইসি'র নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, যদিও আমরা ব্যাপাকহারে ইমেইল ব্যবহার করি। ভবিষতে এই পোকেক্টের ফলে আমাদের আর ইমেইল বা চিঠি আদান-প্রদান করতে হবে না। তবে এক্ষেত্রে আমাদের স্টক এক্সচেঞ্জকে অবশ্যই ডাটা সিকিউরিটিজের প্রতি নজর রাখতে হবে। 

তিনি বলেন, এই প্রকল্প অবশ্যই একটি ভালো উদ্যোগ। তবে প্রকল্পটি যেহেতু আমাদের জন্য নতুন, সেহেতু আমাদের খুবই সতর্কভাবে কাজ করতে হবে। এটা বাস্তবায়নে সময়ের অপচয় যেমন রোধ হবে, তেমনি পুঁজিবাজারকে ডিজিটাইজেশনের ক্ষেত্রেও একধাপ এগিয়ে যাবো আমরা।

ডিবিএ প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি রোজিও বলেন, পেপারলেস আমাদের কাছে একটি নতুন প্রকল্প। করোনা আমাদের এই অবস্থানে আসতে বেশি উৎসাহ দিয়েছে। এই প্রকল্পটা যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।

তি বলেন, আমাদের ব্রোকাররা বিভিন্ন জায়গা থেকে কাজ করে। কিন্তু সব সময় আমাদের পক্ষে ডিএসইতে এসে চিঠির মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান করা সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে আমাদের সময় অনেক সেইভ হবে। পাশাপাশি খরচও কমে আসবে। 

বিএমবিএ প্রেসিডেন্ট মো. ছায়েদুর রহমান বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নে আমরা অনেকদূর এগিয়ে গিয়েছি। এই প্রোজেক্টটি বাস্তবায়ন হলে আমাদের সময়ের কাজ সময়ে বাস্তবায়নে যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে। এখানে ইন্টারেস্ট ও চ্যালেঞ্জ দুটিই রয়েছে। আমাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই এগিয়ে যেতে হবে। ডিজিটাইজেশনের কোন বিকল্প নেই আমাদের। 

তিনি বলেন, একসময় আইপিও আসলে কাগজের মাধ্যমে আবেদন করতে হতো। তখন বস্তায় বস্তায় কাগজের আবেদন পড়তো। যেটা নিয়ে আমাদের অনেক ঝামেলায় পড়তে হতো। এখন আমাদের আইপিও আবেদনের জন্য কোন কাগজ বহন করতে হয়না।  আমরা আস্তে আস্তে সেই অবস্থান থেকে বেড়িয়ে আসছি। আমাদের সাধারণ বিনিয়োগকারীদেরও এখন আবেদন করার ক্ষেত্রে কোন প্রকার জটিলতায় পড়তে হয়না। একইভাবে সমগ্র পুঁজিবাজারের কার্যক্রমকে যেন আমরা পেপারলেস করতে পারি সেই দিকে আমাদের অগ্রসর হতে হবে।

সিএমজেএফ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে দেখে আসছি বিশ্ববাজারের সঙ্গে বাংলাদেশ তাল মিলিয়ে চলতে পারছিলো না। পাশ্ববর্তী দেশ পাকিস্তানের থেকেও আমরা পিছিয়ে ছিলাম। আমরা টেকনিক্যাল দিক থেকে অনেক পিছিয়ে ছিলাম। বিশ্বাবাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে এগিয়ে নিতে হলে ডিজিটাইজেশনকে ছাপিয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, পেপারলেস সিস্টেমের মাধ্যমে আমাদের সাংবাদিক শ্রেণী যেন সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ তথ্য পেতে বাধাগ্রস্ত না হয়, সেটার দিকেও নজর রাখতে হবে। কেননা সাংবাদিকরাই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে সঠিক তথ্যটি পৌঁছে দেয়। তাই তারা যেন সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ তথ্য থেকে বঞ্চিত না হয়, সেই বিষয়টা নজরে রেখেই আমাদের পেপারলেস পলিসি বাস্তবায়নের চিন্তা করতে হবে।

সোনালীনিউজ/এমএইচ

Wordbridge School
Link copied!