• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ানোর চেষ্টায় ডিএসই


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ২৬, ২০২২, ০৮:০৭ পিএম
বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ানোর চেষ্টায় ডিএসই

ঢাকা: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মো. ইউনুসুর রহমান বলেছেন, দেশের বিনিয়োগকারীদের বাজারের প্রতি আস্থার (কনফিডেন্স) অভাব রয়েছে। এই আস্থা বাড়াতে হলে স্টেক হোল্টারদেরকেই ভাল কিছু করে দেখাতে হবে। যাতে মানুষ আমাদের বিশ্বাস করে। তাদের আস্থার জায়গায় বড় ধরণের জাগরণ তৈরি করতে হবে। তবেই তারা পুঁজিবাজারে আসবে এবং জিডিপিতে আমাদের মার্কেট ক্যাপিটাইলাইজেশন বাড়বে।       

বুধবার (২৬ জানুয়ারি) পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের সংগঠন ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামেরর (সিএসজেএফ) নবনির্বাচিত কমিটির সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর আগারগাও ডিএসইর কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। 

এসময় সংগঠনের সভাপতি জিয়াউর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আবু আলী, যুগ্ম সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন, অর্থ সম্পাদক নিয়াজ মাহমুদ, ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভীসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

ডিএসইর চেয়ারম্যান বলেন, এখন পর্যন্ত দেশের বাইরে আমাদের চারটি রোড শো হয়েছে, এর মাধ্যমে আমরা বিদেশি কোম্পানিগুলোকে দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে আহবান জানিয়েছি। আমি লন্ডন রোড শোতে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে আমার একটি উপলব্ধি মাথায় এসেছে। এই যে কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আমরা বসলাম মার্কেটে আসার জন্য। এটা ঠিক আছে। বিদেশি বিনিয়োগ দেশে আনবো এটা আমাদের চেষ্টা হওয়া উচিৎ। সেটার একটা ফলাফলও একসময় পাব। কিন্তু আমার দেশের মধ্যে অনেক রিসোর্স ছাড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। যেগুলো এখন এখানে আনতে পারছিনা। দেশে ২ লাখ রেজিস্ট্রার কম্পানি আছে। তার মধ্যে ৫০ হাজার কোম্পানি এনবিআরে টেক্স দেয়। অথচ ডিএসইতে  লিস্টেট রয়েছে মাত্র পৌনে ৪০০ কোম্পানি। 

‘এখন বাকি কোম্পানিগুলোকে আমরা পর্যায় ক্রমে ডাকবো। তবে এটি যেন একটি বৈঠকে মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থাকে সেজন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এটির উপর একটা রিপোর্ট তৈরি করা নির্দেশ দিয়েছি। এরপর একাধিক টিম তৈরি করে ভাগ ভাগ করে যোগাযোগ চালিয়ে যাবেন কর্মকর্তারা। বছর শেষে যদি আমরা ৫ টি কোম্পানিকেও লিস্টেট করতে পারি সেটাই হবে আমাদের প্রকৃত সফলতা।’

‘বিদেশীরা আমাদের দেশে বিনিয়োগ করবে আবার যখন অস্থা খারাপ দেখবে টাকা তুলে চলে যাবে। কিন্তু দেশের বিনিয়োগকারীরা তা করবেনা। সে দেশেই থাকবে।’

ডিএসই চেয়ারম্যান আরো বলেন, পুঁজিবাজার হবে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের প্রধান খাত। এটাই নিয়ম। কিন্তু বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে গত এক বছরে মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন ৮০ শতাংশ বাড়ার পরও আমাদের সুখী হওয়ার কোন জায়গা আছে? মোটেও নেই। কারন এখনও আমাদের মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন জিডিপির ২০ শতাংশের নিচে। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশে ৯০ শতাংশ, এমনকি যে পাকিস্তান সবসূচকে আমাদের পিছনে রয়েছে তাদের পুঁজিবাজারও এখন ইমাজিং মার্কেটে রূপান্তর হয়েছে। আর আমরা এখনও ফ্রন্টিয়ার মার্কেট রয়ে গেছি। পাকিস্তানের চেয়ে কোন জায়গায় আমরা নিচে থাকবো বা খারাপ থাকবো এটা কি কেউ কল্পনা করবে। এটা কি মেনে নেয়া যায়? কিন্তু বাস্তাবতা হলো আমরা পিছনে পড়ে আছি। ফ্রন্টিয়ার, ইমাজিং ও ডেভলাপিং- তিন ধরণের মার্কেটের মধ্যে আমরা প্রথম পর্যায় অর্থাৎ ফ্রন্টিয়ার মার্কেটে রয়েছি। 

‘তবে এর থেকে উত্তরণের জন্য ইতিমধ্যে আমরা কিছু কাজ করেছি। আমরা আরো সামনের দিকে যাব। তার জন্য আপনাদের সহযোগীতা প্রয়োজন। আমাদের একটা দু:খের জায়গা হলো আমরা সব জায়গায় কিছু কিছু কাজ করতে পেরেছি। কিন্তু বিনিয়োগকারীদের আস্থার জায়গাটাতে আমরা খুব একটা ধাক্কা দিতে পারিনাই। আমরা বিএএসএম, বিআইসিএম করেছি। কিন্তু শুধু এসব  প্রতিষ্ঠান দিয়ে কনফিডেন্স (আস্থা) বাড়বে না। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মানুষ শেয়ার মার্কেট সম্পর্কে জানবে। কনফিডেন্স বাড়াতে হলে আমরা যারা এক্টর বা স্টেক হোল্ডার রয়েছি আমাদের কাজ করে দেখাতে হবে, যাতে মানুষ আমাদের বিশ্বা করে।’

মো. ইউনুসুর রহমান বলেন, এখনও বাংলাদেশের শেয়ার মার্কেট ও ইন্স্যুরেন্স- এই দুইটা জায়গায় এমন অবস্থা বিরাজ করছে যে, সাধারণ মানুষ ভাবতে পারেনা যে এখানে ভাল মানুষরা রয়েছে। তারা মনেই করে যে এখানে কিছু অসাধু ব্যক্তি রয়েছে। যারা মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে। সেই ধারণাটা আমাদের ভেঙে দিতে হবে। আমারা যারা কাজ করি আমাদের ভাল কাজ করতে হবে। যাতে সমালোচনা না থাকে। এক্ষেত্রে সাংবাদিকদে ভুমিকাও রয়েছে। তাদেরকে আমাদের ভালো কাজগুলো তুলে ধরতে হবে।

সোনালীনিউজ/এমএইচ

Wordbridge School
Link copied!