• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অস্থির পুঁজিবাজারে নতুন বিনিয়োগে আগ্রহী নয় ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলো


নিজস্ব প্রতিনিধি ডিসেম্বর ৭, ২০২২, ০৬:৫৮ পিএম
অস্থির পুঁজিবাজারে নতুন বিনিয়োগে আগ্রহী নয় ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলো

ঢাকা : দেশের পুঁজিবাজারে বর্তমানে চলমান অস্থিরতায় নতুন করে বিনিয়োগের ঝুঁকি নিতে আগ্রহী নয় ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলো। স্থিতিশীল পুঁজিবাজারের নিশ্চয়তা চায় এসব কোম্পানি।

বুধবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে কমিশনের মাল্টিপারপাস হলে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের তথ্য জানতে দেশের ২৬টি বিমা কোম্পানির প্রতিনিধিদের নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি)। এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে বিএসইসি কমিশনার শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠানকে এখানে ডাকা হয়েছে তাদেরকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করতে বেশ কিছু সুযোগ, সুবিধা ইতোমধ্যে দেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু বিষয়ে তাদের ছাড় দেওয়া হয়েছে। যাতে তারা পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

এসময় বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, বিশ্বের সকল দেশের ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলো অর্থনীতিতে বড় ধরনের ভূমিকা পালন করে থাকে। একই সাথে তারা পুঁজিবাজারেও বড় ধরনের অবদান রেখে থাকে। আমরা এখানে যে ২৬ টি কোম্পানি কে ডেকেছি তারাও যাতে পুঁজিবাজারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে এজন্য তাদেরকে বেশ কিছু সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বড় ধরনের পালন করে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলো অন্যতম। আমাদের দেশেও ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলো বড় ধরনের ভূমিকা পালন করতে পারে। ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলো যদি মূল ভিত্তি দেখে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে তবে অন্য যেকোনো বিনিয়েগের তুলনায় এখানে বেশি লাভবান হওয়া সম্ভব।

পুঁজিবাজারে চলমান মন্দা পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে বিনিয়োগ বাড়াতে বিমা কোম্পানিগুলোকে নিয়ে একই ছাদের নিচে বৈঠকের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ বৈঠকে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যানকে থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছিল। তবে আইডিআর এর পক্ষ থেকে একজন নির্বাহী পরিচালক উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে যেসব বিমা কোম্পানির প্রধান বা প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন সেগুলো হলো- হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, গোল্ডেন লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বায়রা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বেস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স, চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এনআরবি গ্লোবাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্রোটেক্টিভ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, আলফা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স, যমুনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মার্কেন্টাইল ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, স্বদেশ লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এলআইসি (বাংলাদেশ), মেঘনা ইন্স্যুরেন্স, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, সাউথ এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স ও সিকদার ইন্স্যুরেন্স।

এর মধ্যে বর্তমানে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রয়েছে- ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স, মেঘনা ইন্স্যুরেন্স, চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স।

তথ্য মতে, পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি টাকার কম থাকা এমন ২৬টি বিমা কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে তাদের ইকুইটির ২০ শতাংশ অর্থ বিনিয়োগ করার শর্তে ছাড় প্রদান করে বিএসইসি। কিন্তু কোম্পানিগুলো ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তি ও ইকুইটির ২০ শতাংশ অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ- এ দু’টির কোনোটিই এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন করেনি। এ অবস্থায় এসব বিমা কোম্পানিকে তালিকাভুক্তি ও ইকুইটির ২০ শতাংশ অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য উৎসাহিত করতে এই বৈঠকের উদ্যোগ নিয়েছে বিএসইসি।

এর আগে ২৬টি বিমা কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য ছাড় দিয়ে ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল বিএসইসি। প্রজ্ঞাপনে, বিমা কোম্পানিগুলো ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতির আইপিওর মাধ্যমে ন্যূনতম ১৫ কোটি টাকার তহবিল উত্তোলন করতে পারবে। এক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোকে তাদের ইকুইটির ন্যূনতম ২০ শতাংশ অর্থ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করতে হবে।

পরবর্তীতে চলতি বছরের গত ২৯ মার্চ এক চিঠিতে আইডিআরএকে এ বিষয়ে অনুরোধ জানায় বিএসইসি। চিঠিতে পুঁজিবাজারে তারল্য সরবরাহ বাড়ানোর জন্য এরই মধ্যে বিমা কোম্পানিগুলোকে যে ছাড় প্রদান করা হয়েছে সেটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে আইডিআরএ’কে অনুরোধ জানানো হয়।

বিএসইসির মতে, বিমা কোম্পানিগুলোকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) আসার আগে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে হবে, যা বাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়াতে অবদান রাখবে। পাশাপাশি কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত হলে পুঁজিবাজারে শেয়ারের সরবরাহও বাড়বে।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!