• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ডিসেম্বরে নতুন এমপিও ঘোষণার আভাস


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ২৯, ২০২১, ০১:৪৬ পিএম
ডিসেম্বরে নতুন এমপিও ঘোষণার আভাস

ঢাকা : নতুন অর্থবছরে বেসরকারি নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে আবেদনপ্রক্রিয়া। এখন চলছে আবেদন যাচাই-বাছাই।

কবে নাগাদ এমপিওভুক্ত করার ঘোষণা দেওয়া হবে, এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি সরকার। তবে আগামী ডিসেম্বর মাসে এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেওয়া হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির যাচাই-বাছাই কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘অনলাইনে আবেদন নেওয়ায় কাজ অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে। দ্রুতই এ বিষয়ে মিটিং অনুষ্ঠিত হবে।

আশা করছি, আগামী মাসে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেওয়া হতে পারে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের ওপর। কেননা গতবারের মতো এবারো প্রধানমন্ত্রী নতুন এমপিওভুক্তির ঘোষণা দিতে পারেন।’

এ ব্যাপারে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিও যাচাই-বাছাই কমিটির আহ্বায়ক মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ফৌজিয়া জাফরীন বলেন, ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য যে আবেদনগুলো পেয়েছি, তা এখন যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।’

কবে নাগাদ এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেওয়া হবে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘কাজ চলছে। দিন-তারিখ এখনই বলা সম্ভব নয়। সব মিলিয়ে এমপিওভুক্তির জন্য প্রায় ৬ হাজার আবেদন জমা হয়েছে। এর মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক এবং ডিগ্রি স্তরের ৩ হাজার এবং কারিগরি, ভোকেশনাল ও মাদরাসা স্তরের ৩ হাজার।’

গত ৩০ সেপ্টেম্বর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (স্কুল ও কলেজ) এমপিওভুক্ত করতে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিতে ১০ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন করতে বলা হয়।

এরপর গত ৭ নভেম্বর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ৯ সদস্যের কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে এই কমিটিকে সহায়তা করতে আরও চার সদস্যের একটি উপকমিটিও গঠন করা হয়।

৯ সদস্যের কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-২) ফৌজিয়া জাফরীন। কমিটিতে আছেন শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) মহাপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের কলেজ শাখার যুগ্ম সচিব, বেসরকারি মাধ্যমিক (১) শাখার উপসচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রশাসন শাখার পরিচালক, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বাজেট শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব, ব্যানবেইসের সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট এবং বেসরকারি মাধ্যমিক-৩ শাখার উপসচিব।

এ কমিটিকে সহায়তা করবে ব্যানবেইসের সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট মো. আবু তাহের খানের নেতৃত্বে চার সদস্যের কমিটি। এ কমিটিতে আছেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক, ব্যানবেইসের প্রোগ্রামার এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রোগ্রামার।

২০১৯ সালে ২ হাজার ৬২২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করার পর গত বছর আর তা করা হয়নি।

নতুন অর্থবছরের বাজেট বরাদ্দের যে প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো হয়েছে, তাতে নতুন প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির জন্য ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের জন্য ২০০ কোটি টাকা এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের জন্য ৫০ কোটি টাকা।

২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর ২ হাজার ৭৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। পরে চূড়ান্ত বাছাইয়ে ২ হাজার ৬১৫টি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ছাড়পত্র পায়।

এরপর আবার ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর ছয়টি এবং ১৪ নভেম্বর একটি প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হয়। দেশে এ পর্যন্ত এমপিওভুক্ত হয়েছে এমন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় ৩৩ হাজার। আর এমপিওভুক্ত হয়নি এখনও প্রায় ৭ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার জন্য গত ২৯ মে সংশোধিত এমপিও নীতিমালা প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সংশোধিত নীতিমালায় এমপিওভুক্তির জন্য তিনটি শর্ত দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে-শিক্ষার্থী ও পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এবং পাবলিক পরীক্ষায় পাসের হার।

এই তিন বিষয়ে মোট ১০০ নম্বরের মধ্যে শিক্ষার্থীর সংখ্যায় ৩০, পরীক্ষার্থীর সংখ্যায় ৩০ এবং পাসের হারে ৪০ নম্বর রাখা হয়েছে। আগের নীতিমালায় প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতির মেয়াদের ওপর ২৫ নম্বর ছিল, যা সংশোধিত নীতিমালায় বাদ দেয়া হয়েছে।

২০২১ সালের নীতিমালায় কোন ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ন্যূনতম কতজন শিক্ষার্থী থাকতে হবে, তা বেঁধে দেয়া হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী, নিম্ন মাধ্যমিকে শহরে ১২০ ও মফস্বলে ৯০, মাধ্যমিকে শহরে ২০০ ও মফস্বলে ১৫০, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শহরে ৪২০ ও মফস্বলে ৩২০, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজে শহরে ২৫০ ও মফস্বলে ২২০ এবং ডিগ্রি কলেজে স্নাতকে শহরে ৪৯০ ও মফস্বলে ৪২৫ শিক্ষার্থী থাকতে হবে। পাসের হার স্তরভেদে ৪৫ থেকে সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ করা হয়েছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!