• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

অনশনের ৩০ ঘণ্টা, এখনো দাবিতে অটল শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা


সিলেট প্রতিনিধি জানুয়ারি ২১, ২০২২, ১২:৫৩ এএম
অনশনের ৩০ ঘণ্টা, এখনো দাবিতে অটল শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা

সিলেট : উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চলমান অনশন কর্মসূচির ৩০ ঘণ্টা পেরিয়েছে। ইতোমধ্যে তিন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ছাড়া ১০ জনের বেশি শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে অনশনস্থলে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের দেওয়া হয়েছে স্যালাইন। বাকি শিক্ষার্থীরাও অধিক মাত্রায় ক্লান্ত ও অসুস্থ হওয়ার উপক্রম।

এদিকে, চলমান পরিস্থিতিতে সমঝোতায় দফায় দফায় শিক্ষক প্রতিনিধি দল আলোচনা করতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশনরত শিক্ষার্থীদের কাছে উপস্থিত হন। কিন্তু শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একমত না হওয়ায় বারবারই ফিরে আসতে হয়েছে তাদের।

বুধবার (১৯ জানুয়ারি) বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ২৪ শিক্ষার্থী উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসেন। অনশনে বসা সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অবন্তিকা বৃষ্টি ও বাংলা বিভাগের মোজাম্মেল হক ওই রাতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারা সিলেটের রাগীব-রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে পুনরায় অনশনে যোগ দেন।

আজ দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী কাজল দাস গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। পরে তাকে রাগীব-রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। এ ছাড়া বিকাল থেকে একে একে অনশনে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হতে থাকেন।

রাগীব-রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসকরা এসে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা দিতে থাকেন। ৩০ ঘণ্টা অনাহারে থাকায় ১০ জনের অধিক শিক্ষার্থীকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। তারপরও অনশন ভাঙেনি কোনও শিক্ষার্থী।

দফায় দফায় শিক্ষকরা এলেও হয়নি সুরাহা। বুধবার দিবাগত রাত পৌনে ৯টায় শতাধিক শিক্ষকের একটি দল অনশনস্থলে আসেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. তুলসী কুমার দাস, সেন্টার অফ এক্সিলেন্সের পরিচালক অধ্যাপক ড. মস্তাবুর রহমান, সোশ্যাল সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক দিলারা রহমানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধানসহ শতাধিক শিক্ষক সেখানে উপস্থিত হন।

শিক্ষকরা আসা মাত্রই শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। শিক্ষকদের কাছে তারা জানতে চান তাদের এক দফা দাবির সঙ্গে শিক্ষকরা একমত কিনা? এ সময় শিক্ষকরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তাদের সুযোগ দেওয়া হয়নি।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘যদি আপনারা আমাদের এক দফা দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেন, তাহলে আমরা কথা বলবো। তাছাড়া আপনাদের সঙ্গে কোনও কথা বলতে রাজি নই।’

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করতে উপস্থিত হতে শুরু করেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একমত না হতে পেরে ফিরে যেতে হয়েছে শিক্ষকদের। এদিকে, সকাল সাড়ে ১১টায় প্রেস বিফ্রিং করা হয়েছে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে। আন্দোলনকারীদের পক্ষে নাফিসা আঞ্জুম প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘সেদিনের হামলা উপাচার্যের মদতেই ঘটেছে। পুলিশ হামলার করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েই এসেছিল। এরপর আন্দোলনকারীদের ওপর সাউন্ড গ্রেনেড ও গুলি ছোড়া হয়। টিয়ারশেল ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করা হয় শিক্ষার্থীদের, করা হয় লাঠিপেটা।’

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় ব্যর্থ হয়ে ফেরার পথে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘কার নির্দেশে পুলিশ এ কাজ করলো তদন্ত করে বের করতে হবে। এ কাজটি ভিসি, ট্রেজারার, ছাত্র উপদেষ্টা ও নির্দেশনা পরিচালক বা প্রক্টর, যার নির্দেশেই ঘটুক না কেন, তাকেই দায় নিতে হবে। ভিসির নির্দেশে হয়ে থাকলে আমরা ভিসির পদত্যাগ আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একমত পোষণ করবো।’

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!