• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চিত্রজগৎ ছেড়ে ধর্ম-কর্মে ব্যস্ত যেসব জনপ্রিয় তারকারা


বিনোদন ডেস্ক সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২০, ০৭:৩৭ পিএম
চিত্রজগৎ ছেড়ে ধর্ম-কর্মে ব্যস্ত যেসব জনপ্রিয় তারকারা

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: তারকাদের যে কোন বিষয়ে ভক্তদের জানার আগ্রহের শেষ নেই। বিবাহ-বিচ্ছেদ, প্রেম-ভালোবাসা, পোশাক-পরিচ্ছদ এমনকি দ্বীনের পথে কে কি করছেন সেই বিষয়ে জানার অনেক আগ্রহ রয়েছে। 

সোনালীনিউজের পাঠকের কথা মাথায় রেখে দ্বীনের পথে ঝুঁকছেন রঙের দুনিয়ার যে সব তারকারা তাদের নিয়ে এই প্রতিবেদনটি।

শাবানা : ১৯৯৬ সালে হুট করেই ঢালিউড কুইন-খ্যাত জনপ্রিয় অভিনেত্রী শাবানা অভিনয় ছেড়ে ধর্মের প্রতি মনোযোগী হয়ে পড়েন। ষাটের দশকে চলচ্চিত্রে আসা এই অভিনেত্রী নিয়মিত নামাজ-রোজা এবং হজ পালনে ব্রতী হন। বলতে গেলে লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে যান। এমনকি দেশ ত্যাগ করে আমেরিকা প্রবাসী হন। এখন পর্যন্ত তিনি আর চলচ্চিত্রে ফেরেননি। মাঝে-মধ্যে দেশে এলেও তার ছায়া পর্যন্ত কেউ দেখত না। বছর খানেক আগে ঢাকায় এক বিয়ের অনুষ্ঠানে হিজাব পরিহিত শাবানা ধরা পড়েন এক আলোকচিত্রির ক্যামেরায়।

ইলিয়াস কাঞ্চন : আশির দশকে এক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন জনপ্রিয় নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের প্রিয় সহধর্মিণী জাহানারা কাঞ্চন। এরপর অভিনয় আর সমাজ সেবামূলক কাজের মধ্যে প্রয়াত স্ত্রীকে বাঁচিয়ে রাখার সংগ্রামে অবতীর্ণ হন তিনি। ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ শিরোনামে সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডে নিজেকে নিয়োজিত এবং নিয়মিত নামাজ, রোজা, হজ এবং শুটিংয়ের ফাঁকেও পবিত্র কোরআন শরিফ তেলাওয়াত করতে কখনো ভোলেন না এই জনপ্রিয় নায়ক।

সুচন্দা : ষাটের দশকে অভিনয়ে আসা কোহিনূর আক্তার সুচন্দা নব্বই দশক পর্যন্ত দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেন। এরপর প্রযোজনা-পরিচালনাতেও সমান জনপ্রিয় ও রাষ্ট্রীয় সম্মান লাভ করেন। নব্বই দশকের শেষভাগে হঠাৎ করে চলচ্চিত্র জগৎ ছেড়ে রীতিমতো ধর্ম-কর্ম আর সংসার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। নিয়মিত নামাজ, রোজা, হজ এবং কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়েই কাটছে জনপ্রিয় চলচ্চিত্রকার সুচন্দার দিনকাল।

শাবনাজ-নাঈম : ১৯৯৬ সালে চলচ্চিত্রে আসা ‘চাঁদনী’ ছবি খ্যাত শাবনাজ-নাঈম জুটির পর্দার প্রেম একসময় তাদের বাস্তব মনের দরজায় কড়া নাড়ে। এরপর ২০০০ সালের প্রথম দিকে এই জুটি বিয়ের পিঁড়িতে বসে অভিনয় ছাড়েন। রীতিমতো সংসার আর ধর্ম-কর্ম নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। নাঈমকে দাড়ি আর শাবনাজকে হিজাব পরিহিত অবস্থাতেই দেখা যায় এখন।

শাবনূর : ২০১২ সালে গোপনে বিয়ে করেন শাবনূর আর ২০১৩ সালে সন্তানের মা হন। তখন থেকেই অভিনয়ে তাকে আর তেমনভাবে পাওয়া যাচ্ছে না। সময় কিভাবে কাটান জানতে চাইলে তার কথায়—স্বামী-সন্তানের দেখভাল আর নামাজ, রোজা, কোরআন তেলাওয়াত হচ্ছে এখন তার প্রাত্যহিক কাজ। শাবনূরকে এখন রীতিমতো বোরকা আর হিজাব পরিহিত অবস্থায় দেখা যায়।

মিশা সওদাগর : ধার্মিক হিসেবে বেশ শুনাম রয়েছে খলঅভিনেতা মিশা সওদাগরের। নিয়ম মেনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, রোজা করেন তিনি। মিশা সওদাগর বলেন, ‘আল্লাহ আমাকে অর্থসম্পদ দিয়েছেন আর তার শোকরিয়া আদায় করার জন্যই হজ পালন করে এসেছি।

আমি মনে করি প্রত্যেক সামর্থ্যবান মানুষেরই শোকরিয়া জানানোর জন্য জীবনে একবার হলেও হজ পালন আর নিয়মিত নামাজ-রোজা আদায় করা উচিত।’

অনন্ত জলিল : চলচ্চিত্রকার অনন্ত জলিল গত বছর হঠাৎ রবীন্দ্র সরোবরে এসে সবাইকে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে হৈ চৈ ফেলে দেন। বিশ্ব মিডিয়ায়ও সাড়া ফেলেন তিনি। পাগড়ি আর জুব্বা পরে তাবলিগে অংশ নিতে যান, মাদ্রাসায় ছাত্রদের সঙ্গে কোরআন তেলাওয়াত আর ইসলামী বয়ানে অংশ নেন। বায়িং হাউসের ব্যবসা নিয়েই ব্যস্ত এখন। অনন্ত অবশ্য চলচ্চিত্রে আসার আগেই ধার্মিক ছিলেন। তার সাভারের এ জে গ্রুপ অফিস আর কারখানায় গেলে দেখা যায় সেখানে তিনি রীতিমতো লিখিত নোটিস দিয়ে ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যেন নামাজের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজ ছেড়ে নামাজ আদায় করেন। তিনি মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিম খানা, বৃদ্ধাশ্রম প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি অসহায় মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন।

আরিফিন রুমি : বেশ কিছুদিন ধরে নামাজ-রোজা এবং এবাদত-বন্দেগিতে মনোযোগ স্থাপন করেছেন এই শিল্পী। নিজের বেশভূষাতে পরিবর্তন এনেছেন মুখে দাড়ি ও মাথায় টুপি পরা আরিফিন রুমিকে দেখলে অনেকে কিঞ্চিত ধাক্কাও খেতে পারেন।

সুজানা জাফর: জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী সুজানা জাফর। ইসলামের জন্য সম্প্রতি বিনোদন জগত ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন এই অভিনেত্রী। ২০০১ সালে মডেলিংয়ের মাধ্যমে শোবিজে পা রাখা এই অভিনেত্রী বর্তমানে পরিবারের সঙ্গে দুবাইতে অবস্থান করছেন। সেখান থেকে মুঠোফোনে ব্যক্তিজীবনের নানা বিষয় নিয়ে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সাথে কথা বলেছেন সুজানা। সেখানে তিনি জানান, ইসলামিক জীবনাদর্শের কারণে মূলত মিডিয়া থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন।

হঠাৎ অভিনয়কে বিদায় জানানোর বিষয়ে সুজানা জাফর বলেন,  ‘গেল তিন মাস কোরআন, হাদিস শিখেছি। ইসলামের আলোকে চলে মনে বেশ শান্তি পেয়েছি, যা আগে কখনই পাইনি।’ 

ধর্মীয় পথে কাকে অনুসরণ করেন, এমন প্রশ্নের জবাবে সুজানা বলেন, ‘আমার অনেক ফ্যান আছে, তবে দেশের ভেতর আমি একজনকে ফলো করি। তিনি হলেন মিজানুর রহমান আজহারী। তার অনেক বড় ভক্ত আমি। আমি আজহারীর অনেক ওয়াজ শুনি। তার কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। আর দেশের বাইরে ডা. জাকির নায়েক ও মুফতি ইসমাইলের আলোচনা শুনি।’

অ্যানি খান : শিশুশিল্পী হিসেবে শোবিজে পা রেখেছিলেন অ্যানি খান। দীর্ঘ ২৩ বছর পর ধর্মীয় বিষয়ে নিজের আত্মোপলব্ধির কারণে শোবিজ থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন তিনি। 

অ্যানি খান বলেছেন, কারো দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মিডিয়া ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেইনি। এ সিদ্ধান্ত আমার একান্তই ব্যক্তিগত। কারণ মৃত্যুর পর আমার হিসেব আমাকেই দিতে হবে। তাই আত্মোপলব্ধি থেকেই আমি মিডিয়ার কাজ থেকে সরে যাচ্ছি।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!