• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ধর্মঘটে বিড়ম্বনায় সেন্টমার্টিনের ২ হাজার পর্যটক


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ৩১, ২০২১, ০৪:৩৩ পিএম
ধর্মঘটে বিড়ম্বনায় সেন্টমার্টিনের ২ হাজার পর্যটক

ফাইল ছবি

ঢাকা: স্থানীয়দের ডাকা ধর্মঘটের কারণে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে বেড়াতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন দুই হাজারের বেশি পর্যটক।

পরিবেশ অধিদপ্তরের জারি করা গণবিজ্ঞপ্তির আলোকে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের ছেঁড়াদিয়া যেতে মানা করার প্রতিবাদে রোববার (৩১ জানুয়ারি) থেকে ধর্মঘট ডেকেছে স্থানীয় যানবাহন-হোটেল মালিক সমিতি ও জনসাধারণ।

এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন পর্যটকরা। তবে পর্যটকদের খাবারের জন্য শুধু খাবার হোটেল চালুর রাখার আহ্বান জানিয়েছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

গত ২ জানুয়ারি পরিবেশ অধিদপ্তর ১৪ দফা নির্দেশনা-সংবলিত গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে তা প্রচার করা হয়। ‘প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন’ এলাকা ঘোষণা করে পরিবেশ অধিদপ্তরের জারি করা গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন ও পর্যটকদের অসচেতনতা, দায়িত্বজ্ঞানহীনতা, পরিবেশ ও প্রতিবেশবিরোধী আচরণের কারণে সেন্ট মার্টিনের বিরল প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে পৌঁছেছে। দ্বীপটিকে রক্ষায় কিছু বিধিনিষেধ আরোপের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দ্বীপের সৈকতে সাইকেল, মোটরসাইকেল, রিকশা-ভ্যানসহ কোনো ধরনের যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক বাহন না চালানো, সৈকত, সমুদ্র ও নাফ নদীতে প্লাস্টিক বা কোনো ধরনের বর্জ্য না ফেলা, দ্বীপের চারপাশে নৌভ্রমণ না করা, জোয়ার-ভাটা এলাকার পাথরের ওপর দিয়ে না হাঁটা, সামুদ্রিক কাছিমের ডিম পাড়ার স্থানে চলাফেরা, রাতে আলো জ্বালানো এবং ফ্ল্যাশলাইট ব্যবহার করে ছবি না তোলা, সৈকতে রাতেরবেলা কোনো ধরনের আলো বা আগুন না জ্বালানো, আতশবাজি ও ফানুস না ওড়ানো, মাইক না বাজানো, হইচই ও উচ্চ স্বরে গান-বাজনা কিংবা বারবিকিউ পার্টি না করা, সরকারের অধিগ্রহণ করা ছেঁড়াদিয়া দ্বীপে না যাওয়া, জাহাজ থেকে পাখিকে চিপস বা অন্য কোনো খাবার না খাওয়ানো ইত্যাদি।

এবিষয়ে কোস্টগার্ড সেন্ট মার্টিন স্টেশন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা আমরা শুধু বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি। কয়েক মাস আগে থেকে ছেঁড়াদিয়ায় পর্যটক যাতায়াতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। এর মধ্যে কিছু পর্যটক আমাদের অগোচরে সেখানে যেতেন। এখন কড়াকড়ি আরোপ করায় আর কোনো পর্যটককে ছেঁড়াদিয়া যেতে দেওয়া হচ্ছে না।’

স্থানীয় ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের দাবি, সেন্ট মার্টিন দ্বীপের স্থানীয় বাসিন্দা সাড়ে ১০ হাজার। জীবিকার তাগিদে বিভিন্ন এলাকায় আরও ৪ হাজার মানুষ বসবাস করছেন। সাড়ে ছয় হাজারের বেশি মানুষের আয়রোজগারের একমাত্র খাত হলো পর্যটন মৌসুম। বছরের চার মাস দ্বীপের মানুষ পর্যটকদের পরিবহন করে আয়রোজগারের মাধ্যমে সংসার চালাচ্ছেন।

‘পর্যটকদের পরিবহনের জন্য দ্বীপের স্থানীয় বাসিন্দারা লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। ছেঁড়াদিয়া যেতে বাধা দেওয়ায় এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মালিক ও শ্রমিকেরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এই রকম আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’

ছেঁড়াদিয়ায় পর্যটক যাওয়া বন্ধ করা হলে কোনো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে বেড়াতে আসবেন না বলে জানান সেন্ট মার্টিন হোটেল ও কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘দ্বীপের মানুষের আয়রোজগারের কথা চিন্তা করে একটি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।’

টেকনাফের ইউএনও মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি নিশ্চিত করা স্থানীয় প্রশাসনের কাজ। তবে স্থানীয় ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো ধর্মঘটে না গিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি কীভাবে সুরাহা করা যায়, সেটা চিন্তা করা উচিত ছিল।

সোনালীনিউজ/আইএ

Wordbridge School
Link copied!