• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আইনজীবী হতে চান?


নিউজ ডেস্ক নভেম্বর ২৯, ২০২১, ০৩:২৯ পিএম
আইনজীবী হতে চান?

ঢাকা : অনেকের আইনজীবী হওয়ার স্বপ্ন থাকে। কোথায় পড়বেন, খরচপাতি, সুযোগ-সুবিধা, আয়-রোজগারসহ আইনজীবী পেশার বিভিন্ন দিক জানিয়েছেন নরসিংদী জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট মেহেদী হাসান প্রান্ত।

ক্যারিয়ার হিসেবে আইনজীবী : আদালতভিত্তিক কাজের বেলায় আইনজীবীদের পদোন্নতির ধারা সুনির্দিষ্ট। ধাপে ধাপে নিম্ন আদালত থেকে আপিল বিভাগে কাজ করার যোগ্যতা অর্জন করবেন আপনি। সরকারি পর্যায়ে সহকারী জজ হিসাবে শুরু হবে আপনার ক্যারিয়ার। এরপর সিনিয়র জজ, যুগ্ম জেলা জজ, অতিরিক্ত জেলা জজ ও জেলা জজে পদোন্নতি পাবার সুযোগ রয়েছে।

কাদের জন্য আইনজীবী পেশা : যে কোনো ব্যাকগ্রাউন্ডের শিক্ষার্থী বা পেশাজীবীর আইন পড়ার সুযোগ আছে। সে বিজ্ঞানের ছাত্র হোক, মানবিক, বাণিজ্য কিংবা মাদ্রাসা ব্যাকগ্রাউন্ডের হোক না কেন। প্রথমে আপনাকে এইচএসসি পাসের পর যে কোনো সরকারি অথবা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন অনুষদে ভর্তি হতে হবে। এখানে আপনাকে চার বছর মেয়াদি এলএলবি অনার্স সম্পন্ন করতে হবে। এক্ষেত্রে যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। আপনি ইচ্ছা করলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেন। আর বাংলাদেশের প্রায় সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের জন্য এলএলবি অনার্স কোর্স চালু আছে।

কাজকর্ম : ক্লায়েন্ট ও কাজের জায়গার ভিত্তিতে আইনজীবীদের কাজ আলাদা হয়ে থাকে। সাধারণত তাদের কাজের মধ্যে মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে ক্লায়েন্ট, সহকর্মী ও বিচারকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা, আইনি সমস্যা নিয়ে গবেষণা করা, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জন্য আইনকানুন ও নীতিমালা অনুধাবন করা, বিভিন্ন আইনি নথি (আপিল, দলিল, চুক্তি) তৈরি করা, ক্লায়েন্টের পক্ষে যুক্তি সরবরাহ করা ও যথাযথ আইনি পরামর্শ দেয়াসহ বিভিন্ন কাজ আইনজীবীরা করে থাকেন।

যোগ্যতা : আমাদের দেশে আইনজীবী হওয়ার জন্য আপনাকে বেশ কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। প্রাথমিক দুটি শর্ত হলো—বাংলাদেশের নাগরিক হওয়া আবশ্যক ও বয়স কমপক্ষে ২১ বছর হতে হবে। এ দুটি শর্ত পূরণ হলে বাকি ধাপগুলো প্রযোজ্য হবে।

শিক্ষাগত যোগ্যতা : আইন বিষয়ে পড়াশোনা বাধ্যতামূলক। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা বার কাউন্সিল স্বীকৃত বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি গ্রহণযোগ্য। আপনার গ্র্যাজুয়েশন যদি আইন ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে হয়ে থাকে, তাহলে এলএলবি কোর্স সম্পন্ন করা প্রয়োজন।

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সনদ : আবেদন ফর্ম জমা দেয়ার পর কমপক্ষে ৬ মাস একজন শিক্ষানবিশ হিসাবে সিনিয়র কোনো অ্যাডভোকেটের অধীনে কাজ করতে হবে। এরপর মৌখিক, লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষার মাধ্যমে উত্তীর্ণ হলে অ্যাডভোকেট হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করবেন।

কোথায় পড়বেন : নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (এআইইউবি), ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউআইইউ), স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস (ইউল্যাব), ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, প্রাইমেশিয়া ইউনিভার্সিটি ইত্যাদি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়া যায়। এছাড়া দেশের সরকারি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে অনার্স-মাস্টার্স ডিগ্রি রয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আইন কলেজগুলোতেও পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে।

খরচাপাতি : চার বছর মেয়াদি কোর্সের মোট খরচ তিন লাখ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। তা নির্ভর করবে আপনি কেমন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৪ বছরের কোর্স করবেন তার ওপর। দুই বছর মেয়াদি এই কোর্সের খরচ ৯০ হাজার টাকা থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

সুযোগ-সুবিধা : আইন পাস করে আইন সংশ্লিষ্ট বা আইন বহির্ভূত সব কিছুই আপনি হতে পারবেন। আইন পড়ে কেউ আইনজীবী হতে না চাইলেও তাঁর জন্য সরকারি-বেসরকারি চাকরির দুয়ার খোলা। আইন পড়ার আরেকটি মজার বিষয় হলো আপনি স্বাস্থ্য, প্রকৌশলী, আইটিসহ অনেক সেক্টরে কাজ করার সুযোগ পাবেন। ছোট-বড় সব ধরনের কোম্পানিতেই লিগ্যাল সেক্টরে চাকরি বা পরামর্শক হিসাবে আইনের ছাত্ররা ক্যারিয়ার গড়তে পারে।

আয়-রোজগার : একজন আইনজীবীর আয় কাজের ধরন ও অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভরশীল। বার সনদ নেয়ার শুরুতে হয়তো আপনি মাসে ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা উপার্জন করতে পারবেন। সিনিয়র আইনজীবীদের ক্ষেত্রে আয় কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!