• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পতিত জমিতে গড়ে উঠেছে সবজি খামার


বাগেরহাট প্রতিনিধি নভেম্বর ৩০, ২০২০, ১০:১৭ এএম
পতিত জমিতে গড়ে উঠেছে সবজি খামার

বাগেরহাট : বাগেরহাটের ফকিরহাটে করোনাকালীন সময়ে উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে বিশেষ উদ্যোগ।

কৃষকদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে উন্নত জাতের সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করায় ফকিরহাটের লখপুর এলাকার মাঠ জুড়ে এখন সবুজের সমারহ। এতে একদিকে যেমন ফসলের দাম পেয়ে খুশি চাষীরা অপরদিকে পূরণ হচ্ছে পুষ্টির চাহিদা।

ফকিরহাট উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, করোনার প্রাদূর্ভাবের মধ্যে কৃষি উৎপাদন স্বাভাবিক রাখার পাশাপাশি পুষ্টির চাহিদা মেটাতে বাগেরহাটের ফকিরহাটে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নিয়েছে।

বিনামূল্যে চাষীদের বীজ ও সার দেয়ার পাশাপাশি কৃষকদের করোনাকে ভয় করে ঘরে বসে না থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মাঠে কাজ করার আহবান জানানো হয়। সেই আহবানে সাড়া দিয়ে চাষীরা পতিত জমিতেও সবজি খামার গড়ে তোলেন। তাদের খামারে উন্নত জাতের লাউ, বরবটি, সসা, বেগুনসহ নানা ধরনের সবজি উৎপাদন হচ্ছে। আর এসব সবজির বাজারমূল্য ভাল হওয়ায় লাভবান হচ্ছে চাষীরা।

লখপুর এলাকার আল আমিন শেখ জানান, করোনাকালিন সময়ে এক প্রকার বেকার সময় কাটছিল। এসময় কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে রাস্তার পাশে পতিত জমিতে চাষাবাদ করতে উদ্বুদ্ধ করা হয়। দেয়া হয় কিছু বীজ। বিনামূল্যে পাওয়া এসব বীজ তিনি লাগিয়েছেন। দিয়েছেন জৈব সার। এখন ফসল বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন তিনি।

একই এলাকার কৃষক রোকন মোল্লা জানান, তিনি ঘেরের পাড়ে বিভিন্ন প্রকারের সব্জির চাষ করতেন। করোনার কারনে সেটাও এবছর অনিশ্চিত হযে পড়েছিল। একপর্যায়ে স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিপ্লব দাস তাকে উন্নত জাতের লাউ চাষ করার পরামর্শ দেন। এখন একদিন পর পর ৫০ থেকে ৬০টি লাউ কাটতে পারছেন তিনি। আর প্রতিটি লাউ ঘেরের পাড় থেকেই ২৫ থেকে ৩০ টাকা দরে পাইকারী নিয়ে যাচ্ছে। এই লাউ চাষ করে তার সংসারের অভাব দুর হয়েছে।

কৃষানী শারমিন বেগম বলেন, ‘স্বামী-স্ত্রী দুইজনই সারাদিন মাঠে কাজ করে সংসার চালাই। করোনার কারনে আমরা হতাশায় ছিলাম, কিভাবে সংসার চলবে? কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে উচ্চ ফলনশীল জাতের সীমের বীজ লাগিয়েছিলাম। কোন প্রকার রাসায়নিক সার ছাড়াই বাম্পার ফলন হয়েছে। দামও ভাল। তাই আমাদের মনে সুখ আর মুখে এখন হাসি।

কৃষক উজ্জল বিশ্বাস বলেন, রাস্তার পাশে পতিত জমিতে তিনি একবছর মানকচু ও মেটে আলু লাগিয়েছেন। যে জমিতে কোন দিন কোন ফসল হয়নি ফসলের আশাও কেউ করেনি সেই জমিতে আজ ফসল হয়েছে। এই ফসল উঠলে অনেক আয় হবে বলে তিনি জানান।

স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিপ্লব দাস জানান, প্রধানমন্ত্রীর এক ইঞ্চি জমিও ফাঁকা থাকবে না এই আদেশের বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। করোনাকালীন সময়ে চাষীদের পাশে থেকেই তাদের সহায়তার পাশাপাশি পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

এসব সব্জি বাগান নিম্ন আয়ের মানুষের পুষ্টির চাহিদা মেটার পাশাপাশি বাড়তি আয়ের উৎস বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

 

Wordbridge School
Link copied!