• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সেলুন যখন পাঠাগার


নীলফামারী প্রতিনিধি এপ্রিল ৮, ২০২১, ০১:০৫ পিএম
সেলুন যখন পাঠাগার

নীলফামারী : জেলার সৈয়দপুরে সেলুনের দোকানে লম্বা সিরিয়াল। কেউ চুল কাটবে, কেউবা দাড়ি সেভ করবে। কেউ বা সিরিয়াল পেতে দীর্ঘ এসময়টা কারো কাটে ফোন টিপে, কারো বা পত্রিকার পাতায় চোখ বুলিয়ে। তবে এ সময়টায় যদি বিভিন্ন গল্পের বই পড়া যেতো। তাহলে বইপ্রেমীদের জন্য বিষয়টা কেমন হতো?

জ্ঞানপিপাসুদের কথা মাথায় রেখে তেমনি একটি পাঠাগার গড়ে উঠেছে উপজেলা শহরের তুলসিরাম সড়কের পাশে অবস্থিত বিসমিল্লাহ্ সেলুনে। বাইর থেকে দেখে এই সেলুনকে অন্যসব সেলুনের মতোই মনে হবে। কিন্তু ভেতরে গেলেই বদলে যাবে দৃশ্যপট। সেখানে মিলবে হরেক রকমের বই। মনে হবে যেন সেলুনের মাঝেই এক টুকরো পাঠাগার। ব্যতিক্রমী এই সেলুনটি গড়ে তুলে সাড়া ফেলেছেন শাহজাদা ইসলাম (৩০) নামে একজন সেলুনের কারিগর। আর তাকে এই কাজে সহযোগিতা করেছে সৈয়দপুরের সেতুবন্ধন পাঠাগার।

শাহজাদার সেলুনের দোকানে দেখা মিলবে একটি তাক। ওই তাকে সারি সারি করে সাজানো রয়েছে বেশ কিছু বই। এখানে আছে ইতিহাস, সাহিত্য, গবেষণা, ধর্মীয় ও মনীষীদের জীবনীর ওপরে বিভিন্ন বই।

সরেজমিনে সেলুনে গিয়ে দেখা গেছে, দোকানে একজন প্রাহক চুল কাটাচ্ছেন। বাকি গ্রাহকরা মগ্ন হয়ে বই পড়ছেন। জ্ঞান আহরণের মধ্য দিয়ে অপেক্ষমাণ অলস সময়টা কাটাচ্ছেন।

বিসমিল্লাহ সেলুনের এই পাঠাগারে আছে ৫০টির মতো বই। প্রতি তিনমাস পর পর বই পরিবর্তন করা হয় এই সেলুন পাঠাগারে। দোকানের গ্রাহকরা চাইলে সেলুনেই সময় নিয়ে বই পড়তে পারেন। প্রয়োজনে বাড়িতে নিয়ে গিয়েও পছন্দের বই পড়তে পারেন। সেক্ষেত্রে পাঠকদের রেজিস্ট্রেশন খাতায় নাম নিবন্ধন করতে হবে। বিসমিল্লাহ সেলুনের স্বত্বাধিকারী শাহজাদাও একজন বইপ্রেমী। কাজকর্মের ফাঁকে তিনি নিজেও বই পড়েন এবং অন্যদেরকেও বই পড়তে উদ্বুদ্ধ করেন।

বিসমিল্লাহ সেলুনের স্বত্বাধিকারী শাহজাদা বলেন, আমি মেট্রিক পাশ করেছি। এরপর আর পরিবারিক ও অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে পড়াশোনা হয়নি। এরপর কর্মসংস্থানের জন্য সেলুনের ব্যবসা খুলে বসি। বই পড়তে আমার খুব ভালো লাগে। সেতুবন্ধন পাঠাগারকে অনেক ধন্যবাদ। আমার দোকানে এরকম একটি সেলুন পাঠাগার গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়ার জন্য। আমার দোকান যতদিন থাকবে এই পাঠাগারও ততদিন থাকবে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!