• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

খাঁটি পণ্যের বন্ধু সুভামনি


নিউজ ডেস্ক এপ্রিল ২৩, ২০২১, ০২:১৩ পিএম
খাঁটি পণ্যের বন্ধু সুভামনি

ঢাকা : পটুয়াখালীর মেয়ে সুভামনি। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পটুয়াখালীর মৌকরনে কাটিয়ে তারপর কিছুসময় বরিশাল। অতঃপর গন্তব্য রাজধানী ঢাকা। বর্তমানে স্নাতক শেষ করে ফলাফলের অপেক্ষা দিনগুনছেন। স্বামী, শ্বশুড়-শাশুড়ি ও এক সন্তান নিয়ে তার সংসার।

ছেলেবেলায় বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)-তে গরুর খামার নিয়ে একটি অনুষ্ঠান দেখেছিলেন। দেখেছিলেন একজন মানুষ কয়েকজন লোককে কাজে লাগিয়ে বেশ কিছু গরু নিয়ে একটি খামার পরিচালনা করছেন। সেদিনে সেই অনুষ্ঠানই সুভামনিকে উদ্যোক্তা হতে প্রেরণা যুগিয়েছে। অনুষ্ঠানের পর স্বপ্ন দেখেছিলেন এমন একটি খামার তারও থাকবে। আর উদ্যোক্তা হয়ে দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়াবে।

যদিও জীবনে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন ছিল কিন্তু আর হয়ে উঠেনি। তবে মানুষকে এখন প্রাকৃতিক পণ্যের সেবার মাধ্যমে মানুষের পাশে কিছুটা হলেও দাঁড়াতে পেরেছেন বলে মনে করেন সুভামনি। ছেলেবেলার মানুষের পাশে দাঁড়ানোর স্বপ্নকে পুঁজি করেই সামনে এগিয়ে যাচ্ছেন এই নারী উদ্যোক্তা।

অনলাইনের মাধ্যমে কিছু করার বাসনা অনেক আগে থেকেই। করোনাভাইরাসের কারণে লকডাউনের মধ্যে বাসায় অলস সময় পার করছিলেন। সেই সময়ই ইচ্ছেটা প্রখর হয়ে উঠে। যেই ভাবনা সেই কাজ। হাতের কাছে বাসায় প্রাকৃতিক পণ্য যা ব্যবহার করে সেগুলোর ছবি তুলে ফেসবুকের কয়েকটা গ্রুপে ও নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেন তিনি। সেই দিনটি ছিল ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরের ২৭ তারিখ। বলা যায়, সেদিনই তার উদ্যোক্তা হওয়ার যাত্রা শুরু হয়েছিল। ফেসবুকে পণ্যের ছবি দেওয়ার দু’তিনদিনের মধ্যেই গ্রাহকের সাড়া পায় তিনি। তারপর থেকেই মোটাদাগে প্রাকৃতিক পণ্য নিয়ে সামনে এগিয়ে চলছে।

খাঁটি প্রাকৃতিক পণ্য হারিয়ে যাওয়ার পথে। সহজে মানুষ খাঁটি পণ্য পাচ্ছে না। সেজন্য তিনি খাঁটি পণ্যকেই উদ্যোক্তার পণ্য হিসেবে বেছে নিয়েছেন। তিনি মূলত সুন্দরবনের খলিশা ফুলের মধু, দানাদার গাওয়া ঘি, নারিকেল তেল, কাঠের ঘানি ভাঙানো সরিষার তেল, গরুর ঘানি ভাঙানো সরিষার তেল, যশোরের বিখ্যাত গুড় ইত্যাদি সরবরাহ করে থাকেন। এছাড়াও সিজনাল পণ্যের সেবাও দিয়ে থাকেন।

মাত্র এক হাজার টাকা দিয়ে উদ্যোক্তা জীবনের যাত্রা শুরু করেন সুভামনি। তার মতে, প্রথম মূলধন ছিল পণ্যের ফটোগ্রাফি কিংবা ছবি। যখন অর্ডার আসে তখন সময় নিয়ে পণ্য তৈরি করে পাঠিয়ে থাকেন। তিনি সব সময় চেষ্টা করেন স্বল্প লাভে সেবা দিতে। এছাড়া আমাদের দেশ থেকে ভেজালের তকমাটা দূর হোক এবং দেশের মানুষেরা খাঁটি পণ্য গ্রহণ করে সুস্থ সবল থাকুক তেমনটাই প্রত্যাশা।

উদ্যোক্তা হিসেবে কতটা সফল হয়েছেন সেই হিসেব তার কাছে মূখ্য না। মানুষের আস্থার জায়গায় পৌঁছেতে পেরেছেন এবং অনেক ভালোবাসা, স্নেহ, সম্মান পেয়েছেন সেটুকুই সবচেয়ে বড় সাফল্য বলে মনে করেন সুভামনি।

উদ্যোক্তা হিসেবে প্রাকৃতিক পণ্য বেছে নেওয়া সম্পর্কে সুভামনি বলেন, আমাদের দেশের খাদ্য ব্যবস্থা পরিবর্তন হোক এবং সুস্থ সবল ভবিষ্যত গড়ে উঠুক সেই চাওয়া থেকেই প্রাকৃতিক পণ্য বেছে নেওয়া। খাঁটি পণ্য তৃণমূল থেকে একদম উপর পর্যায় পর্যন্ত প্রাধান্য পাবে তেমনটাই চায় এই নারী উদ্যোক্তা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!