• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম লালে প্রকৃতি সেজেছে অপরূপে


আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি মে ১২, ২০২২, ০৩:৩২ পিএম
কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম লালে প্রকৃতি সেজেছে অপরূপে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি আমাদের ষড়ঋতুর বাংলাদেশ। এখানে রয়েছে বারো মাসে ছয়টি ঋতু। প্রতি দুই মাস অন্তর ঋতু পরিবর্তন হয়। আর এই পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে প্রকৃতিতে চলতে থাকে রূপের পালাবদল। প্রকৃতিতে এখন গ্রীষ্ম। গ্রীষ্মকালে কাঠফাঁটা রোদে কৃষ্ণচূড়ার আবীর নিয়ে প্রকৃতি সেজে উঠেছে যেন বর্ণিল রুপে। দেখলেই মনে হয় প্রকৃতিতে কৃষ্ণচূড়ার রঙে আগুন জালছে। আর এই সময়টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পথে প্রান্তরে ফুটেছে কৃষ্ণচূড়া। দূর থেকে দেখলে মনে হয়, গ্রীষ্মের রোদের সবটুকু উত্তাপ গায়ে মেখে নিয়ে ফুটেছে সবুজ চিকন পাতার মাঝে এই রক্তিম পুষ্পরাজি, যেন আগুন জ্বলছে। যে দিকে চোখ যায় সবুজের মাঝে শুধু লাল রঙের মূর্ছনা, প্রকৃতির এই সৌন্দর্য চোখে পড়ছে। চোখ ধাঁধানো কৃষ্ণচূড়া ফুলের সৌন্দর্য যেন হার মানায় ঋতুরাজকেও। ঋতুচক্রের আবর্তনে কৃষ্ণচূড়া তার মোহনীয় সৌন্দর্য নিয়ে আবারো হাজির হয়েছে প্রকৃতির মাঝে।

সেইসাথে কৃষ্ণচূড়ার লাল আবীর গ্রীষ্মকে দিয়েছে এক অন্য মাত্রা।

কৃষ্ণচূড়া একটি বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ। যার বৈজ্ঞানিক নাম ডেলোনিক্স রেজিয়া। এ গাছ পত্রপল্লব এবং আগুনলাল ফুলের জন্য বিখ্যাত। সৌন্দর্যবর্ধক গুণ ছাড়াও এ গাছ ছায়া দিতে বিশেষ উপযুক্ত। উচ্চতায় সর্বোচ্চ ১২ মিটার হলেও শাখা-পল্লবে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। কৃষ্ণচূড়ার ফুলগুলো বড় ৭/৮টি পাপড়িযুক্ত গাঢ় রক্তিম লাল হয়। ফুলের ভেতরের অংশ হালকা হলুদ ও রক্তিম হয়ে থাকে। পাপড়িগুলো প্রায় আট সেন্টিমিটারের মত লম্বা হতে পারে। এর প্রতিটি পাতা ৩০-৫০ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ২০-৪০ টি উপপত্র বিশিষ্ট। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষ্ণচূড়া ফুল ফোটে এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত। কুঁড়ি আসার কিছুদিনের মধ্যে পুরো গাছ ভরে যায় ফুলে ফুলে। তবে কৃষ্ণচূড়া গাছ খুব একটা বড় হয় না। এর ডালপালা পাইকোর গাছের মতো অনেক জায়গা পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে। পরিবেশের সৌন্দর্যবর্ধক বৃক্ষ কৃষ্ণচূড়া গাছ বর্তমানে রাস্তার দুই ধারে এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি হাসপাতাল ও উপজেলা পরিষদের আঙিনায় শোভা পাচ্ছে। অনেক দূর থেকে দেখলে মনে হয় গাছে গাছে যেন আগুন জ্বলছে। সরেজমিন দেখা গেছে, পৌর শহরের তারাগন, রাধানগর, কলেজ রোড, হাভহপাতাল রোড,উপজেলার আজমপুর, হীরাপুর, বাউতলা, ধাতুরপহেলাসহ অনেক জায়গায় রাস্তার দুই ধারে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতালে কৃষ্ণচূড়া শোভা পাচ্ছে। কৃষ্ণচূড়া ফুলের পাপড়ি লাল হলুদ রঙয়ের হয় এর ভেতরে অংশে হালকা হলুদ রঙ যুক্ত অনেক দূর থেকে দেখতে মনে হয় গাছে গাছে যেন লাল আগুন জ্বলছে। এদিকে শোভা বর্ধনকারী এ গাছটি যেন গ্রামীণ জনপদের পাশাপাশি শহরের মানুষের কাছেও সমান গুরত্ব বহন করে। এর কাঠ তুলনামূলক দামী না হওয়া এবং ভালো কোনো ব্যবহারে না আসায় বাণিজ্যিকভাবে এ গাছ বপনে লোকদের আগ্রহ অনেক কম। তবে শখের বেলায় এর কদর রয়েছে অনেক বেশী।

বর্তমানে বৃক্ষনিধনের শিকার হয়ে কমে যাচ্ছে রঙিন এই গাছ। এক সময় এ গাছ হারিয়ে যাবে এ শঙ্কায় স্থানীয় প্রকৃতিপ্রেমীরা।

পৌর এলাকার মো. কামরুল হাসান বলেন, প্রচন্ড গরমে গাছের ছায়ায় বসে লোকজন গল্প করে আরাম পায়। আর এই গাছের ছায়ায় ক্লান্ত পথচারীরা নিজেকে একটু জিড়িয়ে নেয়।

পৌর শহরের তারাগন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মৌসুমী আক্তার বলেন, গ্রীষ্মের এই খরতাপে শান্তির পরশ বুলিয়ে দেয় কৃষ্ণচূড়া গাছগুলো। রক্তিম লালে প্রকৃতিকে ও যেন অনেক অপরূপ দেখায়।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!