• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বৃক্ষপ্রেমিক নকিম উদ্দীন


পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি মে ১৬, ২০২২, ১২:০৬ পিএম
বৃক্ষপ্রেমিক নকিম উদ্দীন

ঢাকা : মজুরির টাকা দিয়ে প্রতিবছর গাছ লাগিয়ে জনস্বার্থে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন পাইকগাছার দিন মজুর নকিম উদ্দীন জোয়াদ্দার। নকিম উদ্দীন উপজেলার বান্দিকাটী গ্রামের মৃত কামাল উদ্দীন জোয়াদ্দারের ছেলে। ৮০ বছরের বৃদ্ধ নকিম উদ্দীন পেশায় দিন মজুর। কখনো তিনি দিন মজুরের কাজ করেন, কখনো ভ্যান চালিয়ে সংসার চালান। দিন মজুর হলেও জনস্বার্থে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গাছ লাগানোর মতো মহৎ কাজ করে সমাজে অনেক অবদান রাখছেন নকিম উদ্দীন।

মজুরির টাকায় যেখানে সংসার চালানোই কঠিন, সেখানে তিনি ১৯৯৮ সাল থেকে প্রতিবছর এলাকার কোনো না কোনো প্রতিষ্ঠানে গাছ লাগাচ্ছেন। প্রথমে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গাছ লাগান। এরপর উপজেলা পরিষদ, আদালত, থানা, ফসিয়ার রহমান মহিলা কলেজ, সিনিয়র মাদ্রাসা, ইউনিয়ন পরিষদ এবং সড়কসহ সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ফলদ, বনজ ও ঔষদি গাছ লাগিয়েছেন। এভাবেই তিনি বিগত ২৪ বছর এলাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হাজারো গাছ লাগিয়েছেন। তার লাগানো গাছ এখন সরকারের কোটি টাকার সম্পদে পরিণত হয়েছে।

ফসিয়ার রহমান মহিলা কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী নূপুর মণ্ডল জানান, ক্যাম্পাসে লাগানো গাছের ফল আমরা শিক্ষার্থীরা সবাই অনেক মজা করে খেয়েছি। কিন্তু এই গাছগুলো যে একজন দিন মজুর লাগিয়েছেন জানতে পেরে তাকে নিয়ে গর্ব হয়। তার প্রতি রইল সম্মান ও শ্রদ্ধা।

ফসিয়ার রহমান মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক শেখ রুহুল কুদ্দুস জানান, আমি যখন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ছিলাম তখন নকিম উদ্দীন কলেজে ফলদ ও বনজ গাছ লাগিয়েছিলেন। এটি একটি মহৎ কাজ। গাছগুলো যতদিন বেঁচে থাকবে নকিম উদ্দীনও ততদিন আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম জানান, ভালো কাজ করার জন্য খুব বেশি অর্থ সম্পদের প্রয়োজন যে হয় না সেটা দিন মজুর নকিম উদ্দীন দেখিয়ে দিয়েছেন। নকিম উদ্দীন যে একজন মহৎ ব্যক্তি এতে কোনো সন্দেহ নেই। ইচ্ছে করলেই আমরা নকিম উদ্দীনের মতো কিছু না কিছু ভালো কাজ করতে পারি।

এ প্রসঙ্গে নকিম উদ্দীন জানান, গাছ লাগানোর ব্যাপারে আমার পিতা আমাকে উৎসাহিত করতেন। মানুষের মতো গাছও সমাজের অনেক উপকারে আসে। গাছ আমাদের ছায়া দেয়, ফল দেয় এবং পরিবেশ ভালো রাখে। এসব ভেবেই আমি জনস্বার্থে গাছ লাগাই। গাছগুলোসব আমার সন্তানের মতো। তাই কমবেশি পরিচর্যা করি।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!