• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘কর্মকর্তারা সোনায় সোহাগা, কর্মচারীরা বড়ই অভাগা’


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ২৩, ২০২২, ০৩:৫৩ পিএম
‘কর্মকর্তারা সোনায় সোহাগা, কর্মচারীরা বড়ই অভাগা’

ঢাকা: প্রজাতন্ত্রের নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীদের সমস্যার যেন শেষ নেই। বেতন-ভাতা বাড়ানোসহ বৈষম্য নিরসনে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করে আসছেন ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীরা। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বেশ সরব তারা। তুলে ধরছেন নিজেদের আর্থিক দৈন্যতা, সামাজিক অসহায়ত্ব এবং কর্মক্ষেত্রে বৈষম্যের চিত্র।

সর্বশেষ ২০১৫ সালে অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেল ঘোষণা করে সরকার। ৫ বছর পরপর নতুন বেতন স্কেলের নিয়ম থাকলেও কেটে গেছে প্রায় ৭ বছর। দীর্ঘ এই সময়ে অনেক পরিবর্তন ঘটেছে দেশে। হয়েছে নানাবিধ উন্নয়ন। সেই সঙ্গে জীবনযাত্রার ব্যয়ও বেড়েছে অনেকটা। কিন্তু কর্মচারীদের বেতনতো আর বাড়েনি। এ অবস্থায় সামাজিক মাধ্যমে লিখে যাচ্ছেন নিজেদের নিদারুণ কষ্টের কথা। তবে কর্মচারীদের পোস্টে নিজেদের সমস্যার চিত্র উঠে আসলেও প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ বেশ ভালো আছেন বলেই উল্লেখ করা হচ্ছে। কর্মচারীদের ফেসবুক পোস্ট দেখলে যে কারো মনে হবে, ‘কর্মকর্তারা যেন সোনায় সোহাগা আর কর্মচারীরা বড়ই অভাগা।’

আরও পড়ুন: নবম পে-স্কেল নিয়ে কাজ চলছে, আশ্বস্ত করলেন প্রতিমন্ত্রী

সাব্বির আহমেদ নামের একজন তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন-চোখের সামনে কর্মকর্তারা নতুন নতুন গাড়ি নিয়ে ঘুরছেন কারণ সুদবিহীন গাড়ির লোন পাচ্ছেন আবার ড্রাইভারের বেতন এবং মেইনটেনেন্স চার্জ বাবদ নাকি মাসে প্রায় ৭০০০০ টাকা পায়।আর কর্মচারীদের সংসার চালাইতে দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।আমার তো মনে হয় ১১-২০তম গ্রেডের কর্মচারীরা এইমহুর্তে সত্যিকারের মজলুম।কর্মচারীদের কিছু দেয়ার কথা বললেই করোনার দোহাই দেয় কিন্তু বাঁকি সব দিব্বি চলছে বা চালাচ্ছে।অচিরেই যদি কর্মচারীদের দাবী সরকার না মানে আমি নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি এই মজলুমদের অভিশাপ থেকে সরকার রক্ষা পাবে না।আল্লাহ হাসরের মাঠে প্রত্যেক ব্যক্তিকে তাদের অধিনস্থদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করবেন তখন বর্তমানের কর্তারা কি জবাব দিবেন??আল্লাহ সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন আমিন।

বেতন বৈষম্য নিয়ে রাজিব হোসাইন নামের একজন লিখেছেন-আর্থিক ব্যবধানে বৈষম্য নয়,
স্কেলের আনুপাতিক হারে বৈষম্য হয়...!
#বেতনে আর্থিক ব্যবধান কর্মচারী'র শ্রেণী বা স্কেলভেদে থাকবে--এটাই স্বাভাবিক কিন্তু স্কেলভেদে আনুপাতিক বেতনের আর্থিক হার একটা যৌক্তিক পর্যায়ে থাকবে--এটাই (১১- ২০ স্কেলের) কর্মচারী'দের প্রত্যাশা ছিল। অপ্রিয় হলেও
সত্য এই যে,প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির ব্যবধান আকাশ সম।
#প্রিয় সহকর্মী'রা লক্ষ্য করুন,বাংলাদেশে সর্বোচ্চ ও
সর্বনিম্ন বেতনের ব্যবধান (৭৮০০০-৮২৫০)=৬৯৭৫০ টাকা। পক্ষান্তরে,ভারতে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতনের এই ব্যবধান (৫৬৯০০-২৪৪০০)=৩২৫০০ টাকা--এরই নামই বৈষম্য, যার শিকার হয়েছি আমরা। 
#আই,এল,ও-এর মতে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতনের অনুপাত হতে হবে (৪:১)।
★সুত্রমতে,যদি সর্বোচ্চ বেতন ৭৮০০০ টাকা হয়,তবে সর্বনিম্ন বেতন হতে হবে ১৯৫০০ টাকা। 
★পক্ষান্তরে,যদি সর্বনিম্ন বেতন ৮২৫০ টাকা হয়,তবে
সর্বোচ্চ বেতন হতে হবে ৩৩০০০ টাকা। এরই নাম বৈষম্য--যার শিকার হয়েছি আমরা। 
#সুতরাং বেতনের ব্যবধান নয়,বৈষম্য নিরসন চাই। আমাদের আন্দোলন সরকারের বিরুদ্ধে নয়, দূর্নীতিবাজ আমলাদের বিরুদ্ধে--যাদের চক্ষু আছে, দৃষ্টি নাই-জ্ঞান আছে,বিবেক নাই--বিদ্যা আছে,শিক্ষা নাই
। সকল সহকর্মী'র সক্রিয় ভূমিকা আশা করছি। ধন্যবাদ সকলকেই।
( সংগৃহীত )

আরও পড়ুন: পৌরসভার ‘সচিব’ এখন থেকে ‘পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা’

মাসুদ খান লোহানী নামের একজন লিখেছেন-সমাজের নিম্ন মধ্যবিত্ত ও সীমিত আয়ের পরিবারে জন্ম গ্রহণ করা মানুষ গুলো যদি নিন্ম গ্রেটের কর্মচারী হয় থাকে তারা সত্যিই বুঝে বাস্তবতা কি বর্তমান তাদের জীবনের উপর দিয়ে কি ঝড় যায়! সেটা সুধু তারাই বুঝে যাদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্ভন সরকারি চাকরি নামক সোনার হরিণ টা। এই হরিণ যে গত ৫ বছর আগে মরে পরে আছে তার খবর কেউ নেয় না।

বুলবুল হোসেন ইমরান নামের একজনের পোস্ট এমন-বড় কর্তাদের ঈদের শপিং বাজেটঃ
বয়স ০১-০৫. (৪০০০-৫০০০ টাকা)
বয়স ০৬-১৫. (৮০০০-১২০০০টাকা)
বয়স ১৬-২০. (১৫০০০-২০০০০টাকা)
বয়স ২১-২৬ ক্রেডিট কার্ড & আনলিমিটেড
ব্যালেন্স।
আমরা যারা বৈষম্য শিকার তাদের  ঘরের সন্তানদের ঈদ বাজেটঃ
বয়স  ১-৫.  (৫০০-১০০০ টাকা)
বয়স ৬-১৫. (১০০০-১২০০টাকা)
বয়স ১৬-২০. (৫০০-১০০০টাকা)
বয়স ২১-৩৫.
আগের পান্জাবীতো এখনো
নতুনই আছে থাক এইবার না কিনলেও চলে!

আরও পড়ুন: নির্বাচন বহুদূর, জুলাই থেকেই নতুন পে-স্কেল ঘোষণার দাবি

একটি দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শেয়ার করে মো. মনিরুজ্জামান নামের একজন লিখেছেন-"সরকারি চাকুরে ছাড়া কেউ ভালো নেই" শিরোনামে সংবাদ প্রচার করায় জাতীয় দৈনিক কালের কন্ঠ সংশ্লিষ্ট'কে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সেই সাথে অবিলম্বে সরকারি নিম্ন গ্রেডের কর্মচারী'রা বেতন বৈষম্যের শিকার উল্লেখপূর্বক সংশোধিত শিরোনামে নিউজ প্রচার করতে হবে।
তথ্য-উপাত্ত যাচাই না করে জাতীয় দৈনিক প্রথম সারির কালের কন্ঠ প্রত্রিকায় ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচার দুঃখ জনক! দুঃখের বিষয় ২০ তম গ্রেডের সরকারী কর্মচারী বেতন + ভাতা সব মিলিয়ে মাসে ১৪,৪৫০/- পেয়ে, বাসা ভাড়া পরিশোধ করে পরিবারের যোগান কিভাবে সম্ভব! সরকারী কর্মকর্তা'রা ভালো দিনযাপন করলেও, ভালো নেই ১১-২০ গ্রেডের সরকারী কর্মচারী'রা!
কালের কন্ঠ প্রত্রিকার সম্পাদক সাহেব, ১১-২০ গ্রেডের সরকারী কর্মচারী'রা বেতন বৈষম্যের শিকার মানবেতর জীবনযাপন করছে, বেশিরভাগ পদের কর্মচারীদের পদোন্নতি নেই; আপনাদের এই নিউজে নিম্ন গ্রেডের সরকারী কর্মচারী'রা আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে!
সম্পাদক সাহেব পত্রিকা বহুল বিক্রির জন্য একটা নিউজ করলেই হয় না আগে চিন্তা করবেন আমি কি নিউজ প্রকাশ করছি। নিউজটার কতোটুকু ভিত্তি আছে। একটা কাজ করেন যারা সরকারী চাকুরীজীবীরা কেন ভালো আছে এজন্য তাদেরকেও আস্তে আস্তে ছাটাইদেয়ার নিউজ করেন এতে করে দেশে আরো বেকার সমস্যা বারবে আপনাদের নিউজও আরো গরম হবে পত্রিকাও আরো বেশি বিক্রি হবে।

মো. শামীম নামের একজন লিখেছেন-১৪ লক্ষ কর্মচারির ভাগ্য প্রসন্নের জন্য যে সকল  সম্মানিত নেতাগন এই মাহে রমজানে রোজা রেখে বিভাগে বিভাগে কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন তাদের জানাচ্ছি শ্রদ্ধেয় সালাম। 
হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙ্গালী, স্বাধীনতার স্থপতি, জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুর হৃদয় ছিল কর্মচারি বান্ধব। তিনি আজ বেচেঁ থাকলে এই বেতন বৈষম্য মেনে নিতেন না। উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদ্বয় আপনারা স্বাছন্দে জীবন যাপন করছেন। কর্মচারিগনতো সাধারন জীবন- যাপনের আশা করতে পারে। আপনাদের সন্তানদের বিদেশ এবং দেশে নামি দামী কলেজ ভার্সিটিতে লেখাপড়া করাচ্ছেন ১১- ২০ গ্রেডের কর্মচারিগন কি তাদের সন্তানদের সাধারন কলেজ ভার্সটিতে লেখাপড়ার স্বপ্ন দেখতে পারেনা। আপনারা বিবেকবান একবার ভেবে দেখুন ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারিগন যে বেতন পায় সেটি দিয়ে কিভাবে চলতে পারে। সাংবিধানিক ভাবে সবাইতো সরকারি কর্মচারি। এই বৈষ্যমের হিসাব শ্রষ্টার কাছে দিতে হবে। সুতরাং কর্মচারিদের ৭দফা দাবি মেনে নিয়ে বৈষম্যমুক্ত ৯ম পে স্কেল এবং ৫০% মহার্ঘ ভাতা প্রদান করুন। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন সোনার বাংলাদেশকে  উন্নয়নের শিখরে পৌছে দিতে আমরাও অংশিদার। নেতৃবৃন্দ আপনারা এগিয়ে যান। আপনাদের কর্মসূচির প্রতিক্ষায় আমরা।

মো. পাভেল নামের একজন লিখেছেন-আজ পর্যন্ত দেখলাম না কোন কর্মকর্তা বেতন বৃদ্ধির জন্য আন্দোলন করেছেন! কারণ তাদের বেতন যথেষ্ট, অন্যান্য সরকারি  সুবিধাও যথেষ্ট।  আর কর্মচারীরা আন্দোলন করলে তো কর্মকর্তার বেতনও বাড়ে। কি সুন্দর কষ্ট ছাড়াই মিষ্টি। কষ্ট শুধু কর্মচারীদের। কিন্তু জাতির পিতা তো এমন বৈষম্য চাননি।

দীপঙ্কর দাস লিখেছেন-২০০ টাকা টিফিন ভাতা দিয়ে কি খাওয়া যায়, ৬ টাকা দিয়ে এখন একটা রুটিও জুটবেনা আর চা তো দূরের কথা, এককাপ চা খেয়ে অফিস করতে হবে যেখানে একশ্রেণীর জন্য আনলিমিটেড, কেন এমন হচ্ছে? কেন বৈষম্য? পেটে ভাত না দিয়ে সেরা সার্ভিস কিভাবে আশা করা যায়?
মুখে দিলেই কেবল চোখে লাজ আসে নইলে খালি পেটে........!

এরকম বহু পোষ্টে ভরে আছে সরকারি কর্মচারীদের ফেসবুক। 

সোনালীনিউজ/আইএ

Wordbridge School
Link copied!