• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

চলতে শুরু করেছে বাস, যাত্রী নিচ্ছে গাদাগাদি করে


নিউজ ডেস্ক: মে ১, ২০২১, ০৮:০৮ পিএম
চলতে শুরু করেছে বাস, যাত্রী নিচ্ছে গাদাগাদি করে

ফাইল ছবি

ঢাকা: ঈদ সামনে রেখে গণপরিবহন চালুর ব্যাপারে সরকার চিন্তা করছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি।তবে এরই মধ্যে চলতে শুরু করেছে গণপরিবহন।  

ঢাকার সাভারের সড়কে যাত্রী বহন করছে বাস। ভাড়া নিচ্ছে স্বাভাবিক সময়ের দ্বিগুণ। আবার যাত্রীও তোলা হচ্ছে গাদাগাদি করে।

পরিবহন শ্রমিকরা বলছেন, তারা দিনের আয়ের ওপর নির্ভর করেন। দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বাস চলে না। ধার কর্জ দেয়ার মানুষও নেই। এই অবস্থায় পুলিশের ভয় উপেক্ষা করেও তারা গাড়ি নিয়ে নেমেছেন।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে গত ৫ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া লকডাউনের মধ্যে অল্প কয়েকদিন বাস চলেছে কেবল মহানগরগুলোতে।

দেশের লাখ লাখ পরিবহন শ্রমিক কার্যত বসে আছে। তাদের আয়ের কোনো সুযোগই নেই। সহায়তাও নেই পর্যন্ত। মালিক সমিতি সমালোচনার মুখে কোথাও কোথাও অল্পবিস্তর ত্রাণ বিতরণ করলেও সার্বিকভাবে তারা পাশে নেই সেভাবে।

তবে বাস না চললেও গত সপ্তাহ থেকে বিপণিবিতান খুলে দেয়ার পর রিকশা, অটোরিকশাসহ ছোট যানবাহন চলছে দেদারসে। প্রাইভেট কার লকডাউনের শুরু থেকেই চলেছে অল্পবিস্তর। দিনে দিনে বেড়েছে কেবল।

গত কয়েকদিনে সাভারের ঢাকা-আরিচা ও আশুলিয়ার নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে স্বল্পপাল্লার পাশাপাশি মাঝে মধ্যে দূরপাল্লার দুই-একটি বাসেরও দেখা মিলছে।

স্থানীয় বাসগুলোকে হেমায়েতপুর, সাভার বাসস্ট্যান্ড, রেডিওকলোনি, সিঅ্যান্ডবি, বিশমাইল, নবীনগর, পল্লীবিদ্যুৎ, বাইপাইল, ইপিজেডসহ বিভিন্ন স্টপেজে যাত্রী উঠানামা করতে দেখা গেছে।

সাভার পরিবহন, ইতিহাস, ঠিকানা ও আশুলিয়া ক্ল্যাসিক পরিবহনের বাসগুলোই চলছে সড়কে। কোনো বাসের সামনে স্টিকার সাঁটানো ‘গার্মেন্টস শ্রমিক’, কোনোটার সামনে নবাবগঞ্জ থানা।

করোনাকালে বিধিনিষেধের মধ্যে যখন বাস চলেছে, তখন প্রতি দুই আসনে যাত্রী উঠতে পারত একজন করে। তবে এই বাসগুলোতে প্রতি আসনের পাশাপাশি দাঁড়িয়েও যাত্রী তুলতে দেখা যায়।

ইতিহাস পরিবহনে নবীনগর থেকে আমিনবাজারগামী যাত্রী নুরুল ইসলাম ও তাহমিনা আক্তার দম্পতির কাছে বেশি ভাড়া দাবি করায় পরিবহন শ্রমিকের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা করতেও দেখা যায়। কিন্তু তর্কবিতর্কের পরেও দাবিকৃত ভাড়া দিতে বাধ্য হন ওই দম্পতি।

যাত্রী নুরুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘এহান (নবীনগর) থাইকা আমিনবাজারের ভাড়া ২৫ ট্যাকা। আমি আর আমার ওয়াইফের দুইজনের ভাড়া ৫০ ট্যাকা দিছি। কিন্তু কন্টাকটার নিব না কইয়া ৮০ ট্যাকা চায়। কিসের জন্য এত ট্যাকা বেশি দিমু হ্যারও কোন উত্তর নাই। পরে ১০০ ট্যাকা নিয়া কন্টাকটার আমারে ২০ ট্যাকা ফেরত দিয়া চইলা গেছে। আমার কোনো কথা হেই কানেই নিল না।’

‘মগের মুল্লুক পাইয়া বসছে সব। আমরা পাবলিকগো ব্যাক্কে (সবাই) মিইল্লা চুইষা খাইতাছে। কোনো বিচার নাই, প্রতিবাদ নাই।’

একই বাসে দাঁড়িয়ে যাওয়া যাত্রী কামরুজ্জামান বলেন, ‘কী করব ভাই? যাইতে হবে এটাই বড় কথা। অনেক সময় ধরে দাঁড়ায় আছি কিন্তু গাড়ি নাই। আবার ইফতারের সময়ও হয়ে আসছে তাই দৌড়ায় এই বাসে উঠছি। উইঠা দেখি সিট নাই। আর রাস্তায় রিকশা চললেও ভাড়া অনেক বেশি। তাই গাদাগাদি কইরাই বাসে যাইতেছি।’

ইতিহাস পরিবহনের কন্ডাক্টর বলেন, ‘বাস চালামু না তো কী করমু। সবি তো চলে। বাস চালাইতে দোষ কী? আর বাস না চালাইলে আমরা খামু কী? কত দিন ধইরা আমাগো কামকাজ নাই। এমনে চললে পোলামাইয়া তো না খাইয়া মরব।’

ভাড়া বেশি নেয়া আর দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলার বিষয়টি জানতে চাইলে জবাব না দিয়ে ওই পরিবহন শ্রমিক চওড়া হাসি দিয়ে চলে যান।

সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ করিম খান বলেন, ‘আমাদের নিয়মিত চেকপোস্ট আছে এবং গতকালকে থেকে আমরা অভিযানে নামছি। গতকাল মামলাও দিয়েছি। সন্ধ্যার একটু পরেই আমাদের কার্যক্রম শুরু হলে দেখতে পারবেন। কারণ ইফতারের একটু আগে বের হইত।’

এ বিষয়ে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করের তাকে পাওয়া যায়নি।

লকডাউনে কিছু বাসের অবশ্য এমনিতে চলার সুযোগ আছে। পোশাক কারখানা খোলা থাকায় শ্রমিকদের আসা নেয়ার জন্য স্টাফ বাসগুলো চলছে সকাল-বিকাল দুই বেলায়।

এই বাসগুলোও শ্রমিক দিয়ে আসা বা আসতে যাওয়ার পথে যাত্রী তুলছে।

সূত্র-নিউজবাংলা

সোনালীনিউজ/আইএ

Wordbridge School
Link copied!