• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

এ যাত্রায় রক্ষা পাচ্ছেন মেয়র জাহাঙ্গীর


নিউজ ডেস্ক অক্টোবর ২৩, ২০২১, ০৪:১৩ পিএম
এ যাত্রায় রক্ষা পাচ্ছেন মেয়র জাহাঙ্গীর

ঢাকা: বঙ্গবন্ধু ও মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কটূক্তি করলেও এ যাত্রায় শাস্তির হাত থেকে বেঁচে যাচ্ছেন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি করপোরেশনের (জিসিসি) মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। শাস্তি না দিলেও তাকে ‘কড়া সতর্কবার্তা’ দিচ্ছে দল। অবশ্য তার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে আগামী ১৯ নভেম্বর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে।

আওয়ামী লীগের বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, কটূক্তি ও অন্যান্য বিতর্কমূলক বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে দলের দেওয়া শোকজের জবাব গত ১৭ অক্টোবর দিয়েছেন জাহাঙ্গীর আলম। সেখানে তিনি ‘তার বক্তব্যকে কেটে কেটে সুপার এডিট করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে’ বলে দাবি করেছেন। পাশাপাশি ‘অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনিচ্ছাকৃত’ এ পরিস্থিতির জন্য দলীয় সভাপতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমাও চেয়েছেন জাহাঙ্গীর আলম।

এরই মধ্যে তার চিঠি দলের হাইকমান্ডে পৌঁছেছে। তারা জবাব পড়েছেন, পর্যালোচনাও করেছেন। দলের নেতারা বলছেন, শোকজের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম নিজেকে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে নিরপরাধ বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন। যেহেতু বিষয়টি সেনসেটিভ (স্পর্শকাতর) এবং দলের বেশিরভাগ নেতাকর্মী এতে ক্ষুব্ধ, তাই তাকে ‘কড়া সতর্কবার্তা’ দেওয়া হতে পারে।

যদিও গত ২১ অক্টোবর আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে জাহাঙ্গীরের বক্তব্যের বিষয়টি উঠে এলে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কোনো নেতা এমন বক্তব্য দিতে পারেন না; এটা অপ্রত্যাশিত। শুধু আওয়ামী লীগের নেতা কেন, দলের বাইরের কোনো ব্যক্তিও এমন বক্তব্য দেবেন বলে আমি মনে করি না। এ নিয়ে দলের ভেতরে-বাইরে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দলের কার্যনির্বাহী সংসদে আলোচনা করা উচিত।’

এই সূত্র ধরে অনেকে মনে করছেন, জাহাঙ্গীরের জবাবে সন্তুষ্ট নন শেখ হাসিনা। সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর মতো বহিষ্কার হতে পারেন তিনিও। তবে একাধিক সূত্র বলছে, জাহাঙ্গীর আলমকে এবারের মতো রেহাই দিয়ে ‘কড়া সতর্কবার্তা’ দেওয়া হতে পারে।

আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ‘শোকজের জবাব আমরা পেয়েছি। পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন।’

শনিবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে আগামী ১৯ নভেম্বর সিদ্ধান্ত হবে।’

আলোচনার শুরু মূলত জাহাঙ্গীর আলমের ঘরোয়া পরিবেশের একটি বক্তব্যের ভিডিও প্রকাশের পর। গোপনে ধারণ করা ১১ মিনিট ২৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে মেয়র জাহাঙ্গীরকে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে কটূক্তিমূলক মন্তব্য করতে শোনা যায়। এছাড়া মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের সঙ্গে সম্পর্ক, হেফাজতের প্রয়াত নেতা জুনায়েদ বাবুনগরীর সঙ্গে তার সখ্য ও রাষ্ট্রীয় দুটি সংস্থা নিয়ে নানা আপত্তিকর মন্তব্যও শোনা যায়।

সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানোর পর দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গাজীপুর মহানগর। মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কারের দাবি জানানো হয়।

সূত্র-জাগোনিউজ

সোনালীনিউজ/আইএ

Wordbridge School
Link copied!