• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রাস্তায় কান পরিষ্কারে রয়েছে মারাত্নক স্বাস্থ্যঝুঁকি


মো: আজাদ হোসেন মার্চ ৩, ২০২১, ০৪:৫০ পিএম
রাস্তায় কান পরিষ্কারে রয়েছে মারাত্নক স্বাস্থ্যঝুঁকি

সোনালীনিউজ

ঢাকা : অনেক সময় দেখা যায় রাস্তায় অনেকেই কান পরিষ্কার করেন। প্রতিদিন রাস্তায় ঘুরলে এমন ২-৩ জন হাতুড়ে ক্লিনারের পাওয়া যায়। বাংলাদেশের শহরে-গ্রামে এরা এখন স্বাভাবিক ভাবেই এই সেবা দিয়ে থাকে। আর হাতুড়ে এই ক্লিনারদের সেবা নিয়ে থাকেন অনেকে। এই সেবায় কতটুকু নিরাপদ তা চিন্তা না করেই এই সেবা নেন অনেকে। যদিও বিশেষ কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া কান পরিষ্কারের কোনও দরকারই নেই। 

প্রাকৃতিকভাবেই কানের নিজস্ব কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে, যার মাধ্যমে কান পরিষ্কার হয়৷ যারা নিয়মিতভাবে কান পরিষ্কার করেন, তারা প্রাকৃতিকভাবে কান পরিষ্কার হওয়ার পদ্ধতিতে বাধা তৈরি করেন। কান পরিষ্কার করার জন্য সেফটিপিন থেক পাখির পালক, কলম থেকে কটন বাড ব্যবহার করেন। অনেকে তো রাস্তার পাশে বসে পড়েন কান পরিষ্কার করার জন্য। চুলের ক্লিপ থেকে দেশলাই কাঠি কিছুই বাদ যায় না।

কিন্তু জেনে রাখা দরকার এর সবক’টির ব্যবহারই ঝুঁকিপূর্ণ। তবে তুলনামূলকভাবে নিরাপদ কটন বাড। কিন্তু সেটাও কম বিপজ্জনক নয়। হয়তো কয়েক দিন আগে খুলে রাখা প্যাকেট থেকে কটন বাড বের করে নিয়ে ব্যবহার করা হল। সেটা কিন্তু বেশ বিপজ্জনক৷ আর্দ্রতার কারণে প্যাকেট খুলে রাখা কটন বাডে ছত্রাক জন্মায়। সেটি ব্যবহার করলে কানে ছত্রাকের সংক্রমণ হতে পারে৷

আর এই কান পরিষ্কারে রয়েছে মারাত্নক স্বাস্থ্যঝুঁকি। যা কোন ভাবেই সাস্থ্যসম্মত নয়। এতে কানের পর্দা ফুটা হয়ে যেতে পারে। মারাত্নক যখম হতে পারে। কান পরিষ্কার করার সময়ে কোনও কারণে হঠাৎ চমকে উঠলে অসতর্কতাবশত আঘাত লাগতে পারে৷ এমনকি কানের পর্দা ছিঁড়ে যেতে পারে৷ কানের কোনও অসুখের জন্য কান চুলকায়, তবে কটন বাডের ব্যবহার অসুখের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে।

জেনে রাখা দরকার যে, ত্বকের মৃত কোষ ও বাইরের ধুলোময়লা মিলে তৈরি হয় কানের খোল বা ওয়াক্স। প্রকৃতিগতভাবেই কানের সরুপথের ত্বক বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেখানে জমে থাকা তরল ও আঠালো খোলকে কানের বাইরে পাঠাতে ব্যস্ত থাকে। সেই সঙ্গে চোয়ালের অনবরত নড়াচড়া সাধারণভাবে কানে জমা খোলকে কান থেকে বের করে দেয়। এই দুই প্রক্রিয়ায় বেশিরভাগ লোকের কানে জমতে থাকা খোল বেরিয়ে যায়। কিন্তু যারা নিয়মিত পরিষ্কার করেন তারা সেটা বুঝতে পারেন না। উল্টে তারা কিছু ক্ষতিই করেন।

কান পরিষ্কার করার সময়ে কিছুটা ময়লা বের হলেও অনেকটাই ধাক্কা খেয়ে কানের সরুপথের গভীরে গিয়ে আটকে থাকে। তাই কানে চুলকানি বা অন্য কোনও সমস্যা হলেও কটন বাড দিয়ে কান পরিষ্কার করার কোনেও প্রয়োজন নেই। বরং চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। 

এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক কান ও গলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডাঃ শেখ নুরুল ফাত্তাহ রুমির সাথে কথা হয় সোনালীনিউজের।  

সোনালীনিউজকে তিনি বলেন, রাস্তায় কান পরিষ্কারে রয়েছে মারাত্নক স্বাস্থ্যঝুঁকি। যা কোন ভাবেই সাস্থ্যসম্মত নয়। এতে কানের পর্দা ফুটা হয়ে যেতে পারে। মারাত্নক যখম হতে পারে। কেননা সাস্থ্য বিধি মেনে এই কাজ করা হয় না। আর এই ধরণে পেশা থাকা কোন ভাবে উচিত নয়। 

ডাঃ রুমি বলেন, রাস্তায় বসে এভাবে কান পরিস্কারে ইনফেকশনের ঝুঁকি থাকে। তাছাড়া, পরিস্কারের সময় সামান্য ধাক্কাতেও কানের বড় ক্ষতি হতে পারে। একটু অসচেতনতায় কানের ভিতরে ফুটো হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা তৈরি হতে পারে।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!