ঢাকা: বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে ইউরোপে দ্রুততার সাথে করোনার নতুন ধরন ‘ওমিক্রন’ ছড়িয়ে পড়ছে। বাংলাদেশেও গত ১১ ডিসেম্বর প্রথম দুই নারী ক্রিকেটার ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়।এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১০ জন। এছাড়া করোনায় আক্রান্তের হার দিনকে দিন বেড়েই চলছে।
এ অবস্থায় করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।সোমবার (৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে এ বৈঠক শুরু হয়।
বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে পালন করতে মাঠে নামানো হচ্ছে মোবাইল কোর্ট। এছাড়া সামাজিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠান সীমিত করা হবে; বাসে কম সংখ্যক যাত্রী পরিবহন; মাস্ক না পরলে জরিমানা; টিকা কার্ড ছাড়া রেস্টুরেন্টে খাবার পরিবেশন না করার সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি।
তবে দেশে এখনো লকডাউনের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলেও জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
এই নির্দেশনাগুলো আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কার্যকর করা হবে। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে নির্দেশনা জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে আন্তর্জাতিক উদারাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর) জানিয়েছে, আগামী ৩ থেকে ৫ সপ্তাহ কঠোর বিধিনিষেধ না মানলে ওমিক্রনে দেশে ইউরোপের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদফতর বলেছে, এবছরের মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে করোনার সংক্রমণ বাড়তে পারে।
অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, আমরা ধারণা করছি মার্চ থেকে এপ্রিল মাসের মধ্যে সংক্রমণ বাড়তে পারে। এ কারণে আমরা সারাদেশের হাসপাতালগুলোর সক্ষমতা জোরদারের জন্য কাজ করছি।
তিনি বলেন, মৃত্যুঝুঁকিতে আছেন শারীরিকভাবে অসুস্থ এমন ব্যক্তিদের করোনাভাইরাসের টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। যাদের কোমরবিডিটি আছে, স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিতে আছেন তারা বুস্টার নিতে পারবেন। সেক্ষেত্রে বয়স কোনো বাধা হবে না।
‘বর্তমানে ৪০টি হাসপাতালে অক্সিজেন জেনারেটর স্থাপনের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আমরা এই ৪০টি ছাড়াও বিভিন্ন উৎস থেকে আরও কিছু অক্সিজেন জেনারেটর স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছি।’
অন্যদিকে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, আমরা সারাক্ষণই করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। যদি আমাদের মনে হয়, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসুরক্ষা নিশ্চিতের জন্য ক্লাস কমাতে হবে, কমিয়ে দেব। বন্ধ করার প্রয়োজন হলে বন্ধ করে দেব।
তিনি বলেন, পাশের দেশ ভারতে করোনা সংক্রমণের হার বাড়ছে। আমাদের দেশে এ হার কম। তবে এরইমধ্যে কয়েকজনের দেহে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। তাই আমাদের খুবই সতর্ক থাকতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, বিগত বছরগুলোতে মার্চ মাসে এদেশে সংক্রমণ বাড়তে দেখা গেছে। তাই মার্চ মাস না আসা পর্যন্ত পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে সেটা বোঝা যাবে না। স্বাস্থ্যবিধি মানলে আমরা সংক্রমণ কম রাখতে পারব।
সোনালীনিউজ/আইএ
আপনার মতামত লিখুন :