• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ইরানে নারীর পোশাকের স্বাধীনতার দাবিতে বিক্ষোভে নিহত বেড়ে ৭৬


আন্তর্জাতিক ডেস্ক সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২২, ১২:৩৬ পিএম
ইরানে নারীর পোশাকের স্বাধীনতার দাবিতে বিক্ষোভে নিহত বেড়ে ৭৬

ঢাকা : সঠিক নিয়মে হিজাব না পরার অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর পুলিশি হেফাজতে মাশা আমিনি নামে এক তরুণীর মৃত্যুতে ইরানে চলমান বিক্ষোভে ৭৫ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর)। যদিও সরকারি ভাবে জানানো হয়েছে মৃতের সংখ্যা ৪১ জন।

সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে টানা ১১তম দিনের মতো বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন ইরানের নাগরিকরা। ৮০টিরও বেশি শহরে এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

এ ছাড়া সোমবার ইরানের প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ১২০০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আইএইচআর বলেছে, ইরানি বাহিনীর অভিযানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭৬ জনে দাঁড়িয়েছে। এর আগে এই সংখ্যা ছিল ৫৭ জন।

প্রতক্ষ্যদর্শীরা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, সোমবার রাতেও বিক্ষোভকারীরা তেহরান ও আরও অনেক রাস্তায় প্রতিবাদে নেমেছে। তেহরানে বিক্ষোভকারী ‘একনায়কের মৃত্যু’ বলে স্লোগান দিতে থাকে। তারা দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলী খামেনির তিন দশকের বেশি সময় ধরে চলা শাসনের সমাপ্তি চান।

এদিকে দেশটিতে এই বিক্ষোভ দমানোর অঙ্গীকার করেছেন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। তিনি দাবি করেছেন, বিদেশি চক্রান্তকারী এই বিক্ষোভ উসকে দিচ্ছে। রবিবার তিনি ঘোষণা দেন, অশান্তিতে যারা মদত দিচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এর আগে দেশটির সেনাবাহিনীও বিক্ষোভ হটাতে হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

বিক্ষোভের তেজ কমাতে ইতোমধ্যে দেশে ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে দিয়েছে ইরানের সরকার, দেশটির সামরিক বাহনী মাঠে নামার হুমকি দিয়েছে এবং ইতোমধ্যে সরকারপন্থীরা বাধ্যতামূলক হিজাবের পক্ষে আন্দোলন শুরু করেছেন। কিন্তু সরকারের এসব পদক্ষেপ তেমন কাজে আসছে না।

বিক্ষোভে উসকানির অভিযোগে ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্য ও নরওয়ের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে ইরান। বিক্ষোভকারীদের ওপর দমনপীড়ন চালানোর নিন্দা জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। অন্যদিকে, ইরানি রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে জার্মানি। ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে কানাডা।

মাথায় হিজাব না থাকায় গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাজধানী তেহরানে ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে গেপ্তার হন মাশা আমিনি নামের ২২ বছরের এক তরুণী। গ্রেপ্তার করে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে যাওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।

পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ৩ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় মাশার। সরকারি ভাষ্য অনুযায়ী, হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়াই তার মৃত্যুর কারণ; তবে বিক্ষোভকারী, মাশার পরিবার ও স্বজনদের অভিযোগ- হেফাজতে মাথায় গুরুতর আঘাত করার পরই জীবনসংকটে পড়েন তিনি এবং ওই আঘাতের জেরেই তার মৃত্যু হয়।

ইরানের স্থানীয় একাধিক সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী পড়াশোনা সূত্রে ইরানের কুর্দিস্তান প্রদেশে থাকতেন মাশা, গত ১৩ সেপ্টেমবর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে তেহরান এসেছিলেন।

তার মৃত্যুর খবর প্রচারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল কুর্দিস্তানে। পরে দ্রুততার সঙ্গে অন্যান্য শহরেও ছড়িয়ে পড়ে সেই বিক্ষোভ। আইএইচআরের তথ্য অনুযায়ী, ইসফাহান, মাশহাদ, শিরাজ, তাবরিজসহ ইরানের অন্তত ৮০টি শহরে বর্তমানে বিক্ষোভ চলছে। আন্দোলনকারীদের প্রধান দাবি- মাশা আমিনির মৃত্যুর জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা এবং নারীদের কঠোর পোষাকনীতি ও নৈতিক পুলিশ বাতিল করা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর

Link copied!