• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জর্জা মেলোনির জয়ে কতটা চাপে পড়বে প্রবাসী বাংলাদেশিরা?


অনলাইন ডেস্ক  সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২২, ০১:২০ এএম
জর্জা মেলোনির জয়ে কতটা চাপে পড়বে প্রবাসী বাংলাদেশিরা?

জর্জা মেলোনি

ঢাকা: সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হয়ে ইতালির ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন জর্জা মেলোনি। ধারণা করা হচ্ছে, তার ক্ষমতায় আরোহনের মাধ্যমে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে কট্টরপন্থী নেতা পেতে যাচ্ছে ইতালি। এতে অভিবাসনসহ নানা ইস্যুতে ইতালির নীতিগত ও অবস্থানগত অনেক পরিবর্তন আসতে পারে।

যদিও নির্বাচনে মোলোনি বলেছেন, তার দল 'ব্রাদার্স অব ইতালি' সবার জন্য কাজ করবে এবং মানুষের ভরসার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করবে না।

কিন্তু ইউরোপের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে ইতালির সম্ভাব্য সে পরিবর্তনের প্রভাব হয়ত দেখা যাবে গোটা ইউরোপের ওপর।

কারণ, নির্বাচনে দলটির প্রধান ইস্যু ছিল অভিবাসন। অবৈধ অভিবাসন ঠেকানোর জন্য তারা কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। মেলোনির জোটের অন্যান্য শরিক দলগুলোরও দাবি অভিবাসন কমানো এবং দেশটির উপর ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রভাব দুর্বল করা।

চাপ বাড়বে অভিবাসীদের ওপর

ইউরোপে ঢোকার জন্য প্রতিবছর ভূমধ্যসাগর হয়ে এবং স্থলপথেও প্রচুর মানুষ ইতালিতে যান। তাদের মধ্যে প্রচুর বাংলাদেশিও রয়েছেন।

ইতালির অভিবাসী বাংলাদেশিদের তথ্য অনুযায়ী, এই মুহূর্তে ইতালিতে বৈধভাবে কাজ করছেন এক লাখেরও বেশি বাংলাদেশি। তার বাইরে এখনো কাজকর্ম এবং চাকরির বৈধ কাগজপত্র নেই কিংবা হওয়ার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এমন বাংলাদেশির সংখ্যাও ৫০ হাজারের বেশি।

ইতালির রাজধানী রোম ও ভেনিসে কাজ করছেন এমন কয়েকজন বাংলাদেশির সঙ্গে ইতালির এই রাজনৈতিক পটপরিবর্তন নিয়ে কথা বলার সময় তাদের মধ্যে এক ধরনের চাপা উদ্বেগ লক্ষ্য করেছে বিবিসি।

যারা ইতোমধ্যে কাজ ও বসবাসের বৈধ কাগজপত্র পেয়েছেন তাদের মধ্যে উদ্বেগ অবশ্য কিছুটা কম। কিন্তু যারা এখনো স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পাননি—তাদের আশঙ্কা, নতুন সরকার অভিবাসন নীতি কঠোর করলে তাদের বৈধতা পেতে সমস্যা হবে।

এছাড়া মুসলিমবিরোধী মনোভাবের শিকার হতে পারেন এমন আশঙ্কাও রয়েছে অনেকের মনে।

ইতালির বাংলাদেশ সমিতির সাবেক সভাপতি নুর আলম সিদ্দিকী বাচ্চু অবশ্য মনে করেন, অভিবাসীদের প্রতি যত কঠোরই হোক, হয়ত তাদের সরাসরি দেশে ফেরত পাঠাবে না এই সরকার। নানা নিয়মকানুন করে হয়ত তাদের চাপে রাখা হবে।

সিদ্দিকীর আশঙ্কা, নতুন সরকার হয়ত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে আইন করবে এবং তাদের অভিবাসী বিরোধী প্রচারণা যেভাবে চালাবে তাতে সমাজে 'বিদেশি বনাম ইতালিয়ান' একটি দূরত্ব তৈরি হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।

‘যেহেতু এদেশে বেকারত্ব এবং অপরাধের পেছনে ইমিগ্রেন্টদের কারণ বলে মনে করা হয়, সে কারণে নতুন সরকার এসে প্রথমে অনিয়মিত অভিবাসী শ্রমিক এবং অপরাধ ঠেকাতে বিধিনিষেধ দেবে। তারপর টার্গেট দেবে যেসব বিদেশি ১০ বছর ১৫ বছর কাজ করছে, তাদের ফেরত পাঠাও,’ বিবিসিকে বলেন তিনি।

অভিবাসীরা নানা হয়রানির শিকার হতে পারেন—এমন শঙ্কা প্রকাশ করে নূর আলম সিদ্দিকী বাচ্চু বলেন ‘রাজনৈতিকভাবে আমাদের (অভিবাসীদের) নিয়ে প্রচার চালিয়ে রেখে হয়ত কোণঠাসা করে রাখা হবে। যেন বেতনের ব্যাপারে আমরা কোনো কথা না বলতে পারি।’

‘আমাদের কায়িক শ্রমকে অল্প পয়সায় নেওয়ার জন্য আমাদের মানসিক চাপে রাখা হবে। হয়ত দেখা যাবে ডকুমেন্ট রিনিউ হচ্ছে না, এরকম নানা কিছু।’

এসব চাপের মাধ্যমে নতুন অভিবাসীদের ইতালিতে নিরুৎসাহিত করা হবে— উল্লেখ করে সিদ্দিকী আরও জানান, সমুদ্রপথে ইতালিতে আসা অভিবাসীদের প্রবেশ মুখগুলোতে যেহেতু কড়াকড়ি হবে; তাই ওই প্রবেশ মুখগুলোতে বর্তমানে রেডক্রসের মত যেসব স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা কাজ করে, তাদের কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হতে পারে।

ফলে সমুদ্রপথে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে অভিবাসনপ্রত্যাশী লোকজন দুর্ঘটনায় পড়লে তাদের প্রাণহানির ঝুঁকি অনেক বেড়ে যাবে।

সোনালীনিউজ/এম

Wordbridge School
Link copied!