• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যেভাবে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন মোশাররফ


আন্তর্জাতিক ডেস্ক ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৩, ০৪:০৪ পিএম
যেভাবে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন মোশাররফ

ঢাকা: পাকিস্তানের সাবেক সেনাশাসক জেনারেল (অব.) পারভেজ মোশাররফ মারা গেছেন। রোববার ৭৯ বছর বয়সে দুবাইয়ের একটি হাসপাতালে মারা যান সাবেক এই প্রেসিডেন্ট। পারিবারিক সূত্রের বরাত এ খবর দিয়েছে জিও নিউজ। দীর্ঘদিন ধরে দুবাইয়ের আমেরিকান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন সাবেক এই সামরিক শাসক।

১৯৪৩ সালের ১১ আগস্ট মোশাররফ ব্রিটিশ ভারতের দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন।লাহোরের ফরমান ক্রিশ্চিয়ান কলেজে গণিত নিয়ে ভর্তি হলেও পরবর্তীতে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমিতে যোগ দেন ১৯৬১ সালের ১৯ এপ্রিল। তিনি পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি কাকুল থেকে কমিশন পান। এর পর তিনি যোগ দেন স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপে। ১৯৬৫ ও ১৯৭১ সালের যুদ্ধেও অংশ নেন তিনি।

১৯৯৮ সালের অক্টোবর মাসে পারভেজ মোশাররফকে লেফটেন্যান্ট জেনারেল থেকে পূর্ণ জেনারেল করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। পূর্ণ জেনারেল হিসেবে পারভেজ সেনাবাহিনী প্রধান এবং চেয়ারম্যান অব দ্য জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির দায়িত্ব পেয়েছিলেন। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শরিফের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে টানাপোড়েন শুরু হয় তার। এক পর্যায়ে শরিফ তাকে সামরিক বাহিনী থেকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেন। এর জবাব হিসেবে জেনারেল পারভেজ ১৯৯৯ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে ক্ষমতাচ্যুত করেন। 

২০০১ সালের ২০ জুন পারভেজ নিজেকে দেশের প্রকৃত প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন এবং ২০০২ সালের ১ মে একটি গণভোটের মাধ্যমে তিনি পাঁচ বছরের জন্য প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন। তার প্রেসিডেন্ট হওয়ার কয়েক মাসের মাথায় ঘটে নাইন-ইলেভেন (৯/১১)। পরবর্তীতে তিনি কথিত 'সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে' যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একটি মৈত্রী চুক্তি করেন। 

২০০৪ সালের জানুয়ারিতে আয়োজিত অনাস্থা ভোটে বিজয়ী হন মোশাররফ। ২০০৬ সালে তার ‘ইন দ্য লাইন অফ ফায়ার’ শীর্ষক আত্মজীবনী প্রকাশিত হয়।

২০০৭ সালের মার্চ মাসে মোশাররফ তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ইফতিখার মুহাম্মদ চৌধুরীকে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে বরখাস্ত করেন। সেখানেই তার স্বৈরশাসনের পতনের যাত্রা শুরু হয়। কারণ এর প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করেন আইনজীবীরা। একই বছরের ২০ জুন সুপ্রিম কোর্ট প্রধান বিচারপতিকে পুনর্বহাল করে এবং সর্বোচ্চ আদালত সাবেক প্রধান বিচারপতিকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত বাতিল ঘোষণা করে।

মোশাররফকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করার জন্য সুযোগ দেয় পিপিপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার। প্রথমে অস্বীকার করলেও অভিশংসনের (ইমপিচমেন্ট) প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার আগেই তিনি স্বেচ্ছায় পদ ছাড়েন। ২০১০ সালে অল পাকিস্তান মুসলিম লীগ নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন মোশাররফ।

২০১৩ সালের ৫ এপ্রিল সাবেক স্বৈরশাসকের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। অবশ্য পরবর্তীতে নিষেধাজ্ঞার তালিকা থেকে তার নাম বাদ দেওয়া হয়। এর পর ২০১৬ সালের ১৭ মার্চ চিকিৎিসার উদ্দেশে দুবাই যান মোশাররফ। তার পর আর পাকিস্তান ফেরেননি। স্বাভাবিক কারণেই এক সময়ের স্ট্রংম্যান হয়ে যান রাজনীতির অজানা মানুষ।

সোনালীনিউজ/আইএ

Wordbridge School

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর

Link copied!