• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ফুল ফুটেছে বসনে


অরণ্য সৌরভ অক্টোবর ২৩, ২০২১, ০১:২১ পিএম
ফুল ফুটেছে বসনে

ঢাকা : একেক ঋতুতে ফুটে উঠে একেক রকম ফুল। বিভিন্ন ঋতুতে ফুটে ওঠা ভিন্ন ভিন্ন ফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয় যে কেউ। মুগ্ধতায় স্নিগ্ধভরা ফুলগুলো বসনে ফুটিয়ে তুললে পোশাকের সৌন্দর্যও বেড়ে যায় কয়েকগুণ। ফ্লোরাল বা ফুলেল মোটিফ বসনে জনপ্রিয় এক ট্রেন্ড। শাড়ি, কামিজ, থ্রি-পিস, কুর্তিসহ বিভিন্ন পোশাকে প্রকৃতি থেকে সেই বাহারি ফুলকে তুলে এনে নকশায় ফুটিয়ে তুলেছেন ডিজাইনাররা।

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মেহমুন জাহান। অফিসে যাওয়ার সময় রাস্তার ধারের কৃষ্ণচূড়া ফুলের বাহার দেখে আনন্দে তার মন নেচে গেয়ে ওঠে। একদিন হঠাৎ একটা অনলাইন পেজে কৃষ্ণচূড়া, গোলাপ, কদম, অপরাজিতাসহ বেশ কিছু ফুলের মোটিফের শাড়ি, টপস, কুর্তি, কামিজ দেখতে পায়। তিনি বলেন, ‘দেখে আমার আর তর সইল না। অপরাজিতা ফুলের একটি শাড়ি ও শিউলি ফুলের একটি কুর্তি অর্ডার করে দিলাম। বাসা থেকে ছেলের স্কুল, স্কুল থেকে অফিস, অফিস থেকে মেয়ের নাচের একাডেমি মিলিয়ে বেশ দৌড়ঝাঁপে সপ্তাহের পাঁচ দিন পার করতে হয়। তাই পোশাকের বেলায় স্বাচ্ছন্দ্যেই আমার প্রাধান্য। ঋতুভেদে ফুলের মোটিফের পোশাক পরতে ভালোই লাগে।’

পোশাকের ক্যানভাসে থোকায় থোকায় শোভা পাচ্ছে ফুল। শাড়ি ও সালোয়ার-কামিজের পাশাপাশি টপ, কুর্তা, থ্রি-পিস কিংবা কামিজেও জারুল, সোনালু, কৃষ্ণচূড়া, পদ্ম, দোলনচাঁপা, শিউলি, শিমুল, গোলাপ, বাগান বিলাস, অপরাজিতা ফুটছে থোকায় থোকায়।

একেক ঋতুতে ফুটে উঠে একেক রকম ফুল। বিভিন্ন ঋতুতে ফুটে ওঠা বিভিন্ন ফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয় যে কেউ। মুগ্ধতায় স্নিগ্ধভরা ফুলগুলো বসনে ফুটিয়ে তুললে পোশাকেরও সৌন্দর্য বেড়ে যায় কয়েকগুণ। প্রকৃতি থেকে সেই বাহারি ফুলকে তুলে এনে পোশাকের মোটিফ আর নকশায় ফুটিয়ে তুলেছেন ডিজাইনাররা।

ছোট থেকে বড় সব বয়সি ও সব ধরনের মানুষই কমবেশি ফুলের মোটিফ পছন্দ করে। ডিজাইনের ক্ষেত্র ফুলের মোটিফ সবসময় যুগোপযোগী বলে মনে করেন ডিজাইনার দিলরুবা তালহা।

অনলাইন শপ উঠান’র কর্ণধার ও ডিজাইনার দিলরুবা তালহা বলেন, ঋতুভেদে নকশায় বিভিন্ন ফুলকে প্রাধান্য দিয়ে থাকি। যে ঋতুতে যে ফুল ফোটে পোশাকের মোটিফেও সে ফুল নিয়ে আসি। যেমন : গ্রীষ্মকালে জারুল, সোনালু, কৃষ্ণচূড়া; বর্ষায় পদ্ম, দোলনচাঁপা, কদম; শরতে কাশফুল, শিউলি; বসন্তে পলাশ, শিমুল। এ ছাড়া পোশাকে বছরজুড়ে প্রাধান্য পায় গোলাপ, বাগান বিলাস, অপরাজিতা ফুল মাথায় রেখে পোশাকের থিম সাজাই।

রঙ বাংলাদেশের কর্ণধার ও ডিজাইনার সৌমিক দাস বলেন, ‘এক সময় পোশাকে ফুলেল সাজ দেখা যেত কেবল উৎসবে বা বসন্তে। এখন সেই ধারা পাল্টেছে। সব ঋতুতেই নতুন ফ্যাশন হিসেবে শাড়ির পাশাপাশি কুর্তা-কামিজগুলোয় থাকছে ফুলের বাহার। আর পোশাকের পাশাপাশি নতুন সংযোজন হিসেবে যুক্ত হয়েছে হাতা-কাটা কটি। শর্ট বা লং লেন্থ; দুই ধরনের কটি সাড়া জাগিয়েছে তরুণীদের মনে। নতুন ট্রেন্ডের পোশাকগুলো দারুণ আরামদায়ক। মিক্সড ফেব্রিকে তৈরি করা হয়েছে এসব ফ্লোরাল কুর্তি-কামিজ। ৮০ ভাগ লিনেন আর ২০ ভাগ সুতিতে বোনা হয়েছে পোশাকগুলো এবং প্রতিটি পোশাক লেয়ার কাট দেওয়ায় পেয়েছে ভিন্নতা।’

অনলাইন শপ ও ফ্যাশন হাউস ঘুরে দেখা যায়, কোনো পোশাকের পুরোটাজুড়ে ফুল, কোনোটার নিচ থেকে ওপরের কোণ পর্যন্ত। কোনোটির শুধু নিচের অংশে ফুল, কোনোটির আবার ওপরের অংশে। ফুলের সঙ্গে পোশাকের জমিনজুড়ে আছে লতা-পাতা-ডালও। উজ্জ্বল ফুল, হালকা রঙের ফুল-আরো কত কী! হালকা কাজ, ভারী কাজ; প্রতিদিনের পোশাক, উৎসব বা আয়োজনের পোশাক—সব পোশাকেই রয়েছে ফুলেল নকশার ব্যবহার।

শাড়ি ও কামিজের পাশাপাশি ফুলেল মোটিফে ম্যাচিং পোশাক বা পারিবারিক পোশাকও অর্ডার দিয়ে করিয়ে নিচ্ছেন অনেকে।

ফুলের পোশাকের রং হিসেবে লাল, নীল, কমলা, পিচ, গোলাপির পাশাপাশি সাদা ও চাঁপা সাদা প্রাধান্য পেয়েছে। কোনো পোশাক তৈরি করা হয়েছে ধূসর বা ফ্যাকাশে রঙের কাপড়ে, তাতে রয়েছে উজ্জ্বল রঙের ফুলেল নকশা। ঋতু ও আবহাওয়া ভেদে আরামদায়ক কাপড়কে প্রাধান্য দিচ্ছেন ডিজাইনাররা। কাপড়ের মধ্যে সুতি, খাদি, ভয়েল, জর্জেট, সিল্ক, হাফ সিল্ক, মসলিন, এন্ডি সিল্ক ফেব্রিকসকে প্রাধান্য দিচ্ছে বলে জানান দিলরুবা তালহা।

যেথায় পাবেন, যেমন দাম : দেশীয় ফ্যাশন হাউস উঠান, বিশ্বরঙ, রঙ বাংলাদেশ, সারা লাইফস্টাইল, মিলান, ইয়েলো, ক্লাব হাউস, গ্রামীণ ইউনিক্লো, দেশাল, নগরদোলা, বাংলার মেলা, নিপুণ, কে ক্রাফট, সেইলরসহ আড়ং থেকে সরাসরি কিনতে পারেন। এ ছাড়া ঘরে বসে কিনতে চাইলে অন্যান্য অনলাইন শপের পাশাপাশি উঠানের ফেসবুক পেজ থেকেও কিনতে পারেন। পোশাকের দাম নির্ভর করে কাপড়, ডিজাইনের কোয়ালিটির ওপর। সাধারণত শাড়ি হাফ সিল্ক ১৩০০-১৫০০ টাকা, সুতি, হ্যান্ডলুম ৩৫০০-৪২০০ টাকা, মসলিন ৫০০০-১৫০০০ টাকা, কুর্তি ৮০০-১২০০ টাকা, বেবি ফ্রক ৬০০-৮০০ টাকা ও থ্রি-পিস ২৫০০-৬০০০ টাকার মধ্যে কিনতে পারবেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!