• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বইমেলার সময় কমানোয় ক্ষুব্ধ প্রকাশকরা


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ১, ২০২১, ১০:৪২ এএম
বইমেলার সময় কমানোয় ক্ষুব্ধ প্রকাশকরা

ঢাকা: করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কারণে অমর একুশে বইমেলার সময় আড়াই ঘণ্টা কমিয়ে ৯টার পরিবর্তে সাড়ে ৬টা করেছে বাংলা একাডেমি।

বুধবার (৩১ মার্চ) মেলার ১৪তম দিনে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করে একাডেমি কর্তৃপক্ষ। তবে এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ প্রকাশকরা।

তাদের মতে, এতে প্রকাশনা ব্যবসা চরম ঝুঁকির মুখে পড়বে। বেলা ৩টার দিকে মেলা শুরুর পর থেকে প্রায় ৬টা পর্যন্ত অলস সময় কাটান স্টল ও প্যাভিলিয়নে কর্মরতরা। সন্ধ্যা ৬টার পর মেলা জমে উঠে।

আর এ সময়টাতে মেলার প্রবেশদ্বার বন্ধের ঘোষণা দিয়ে প্রকাশকদের সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ করছে বাংলা একাডেমি। করোনার সংক্রমণ যেহেতু বাড়ছে সেহেতু মেলা শুরুর সময়টা পিছিয়ে দিয়ে বন্ধের সময়টাও বাড়িয়ে দেওয়া হোক।

৩ ঘণ্টা মেলা যদি করতেই হয় তাহলে বিকাল ৫টা থেকেই মেলা শুরু করা উচিত। কারণ ৫টা পর্যন্ত মেলা প্রাঙ্গণ জনশূন্য থাকে। যে সময় বিক্রি শুরু হয় সে সময়ে মেলা বন্ধের এমন সিদ্ধান্তে প্রকাশকরা চরমভাবে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।

বাংলা একাডেমির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এদিন বিকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে প্রতিবাদী পদযাত্রা করে প্রকাশকরা। এতে সময় প্রকাশনীর কর্ণধার ও জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ, কাকলীর নাসির আহমেদ সেলিম, অনুপমের মিলন নাথ, অন্বেষার শাহাদাত হোসেন, পার্ল-এর হাসান জায়েদী তুহিন, নালন্দার রেদওয়ানুর রহমান জুয়েল, তাম্রলিপির একেএম তরিকুল ইসলাম রনি, পললের খান মাহবুব, মুক্তচিন্তার শিহাব বাহাদুর প্রমুখ অংশ নেন।

ফরিদ আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেখানে বলেছেন, দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে হবে এবং সেই লক্ষ্যেই একটা নির্দেশনা মেনে বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হচ্ছে। তাছাড়া দেশের প্রায় সব মার্কেট এবং দোকানপাট রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকছে। কিন্তু যে কোনো বাণিজ্যিক অঞ্চল থেকে বইমেলা অনেক বেশি নিরাপদ হওয়া সত্ত্বেও একাডেমি কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের আলোচনা ও পরামর্শ না করে হঠাৎ করে মেলা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত চালু রাখার সময় বেঁধে দিয়েছে। এটা একেবারে অযৌক্তিক এবং অপরিকল্পিত সিদ্ধান্ত। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। তিনি বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত বইমেলার নীতিমালারও পরিপন্থি। কেননা, মেলার সময়সীমা পরিবর্তন ও মেলা-সংক্রান্ত যে কোনো বিষয়ের সিদ্ধান্ত নিতে হলে প্রকাশকদের সঙ্গে আলোচনা ও পরামর্শ করেই নিতে হবে।’

বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি এবয় পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করবে। এরপর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তারা বিস্তারিত জানাবে।

জানতে চাইলে বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে সময়সীমা তাৎক্ষণিক পরিবর্তন করা হয়েছে।’

নতুন বই : বইমেলার ১৪তম দিনে নতুন বই এসেছে ৯৭টি। এরমধ্যে গল্প-১৪, উপন্যাস-১৬, প্রবন্ধ-৫, কবিতা-৪১, গবেষণা-১, ছড়া-১, জীবনী-৩, নাটক-৩, বিজ্ঞান-২, ভ্রমণ-১, ইতিহাস-১, স্বাস্থ্য-১, বঙ্গবন্ধু-৪, অনুবাদ-২, অন্যান্য-২টি । উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে আগামী প্রকাশনী এনেছে রফিকুল ইসলামের ‘বঙ্গবন্ধু-মুক্তিযুদ্ধ’, মঞ্জু সরকারের ‘উজানযাত্রা’, অবসর এনেছে হায়াৎ মামুদের ‘কিশোর জীবনী নজরুল ইসলাম চিত্ররূপময় আলেখ্য’, নাগরী এনেছে আহমাদ মোস্তফা কামালের ‘যে পথে হেঁটে এসেছি’, আন্দালিব রাশদী অনূদিত ‘কাশ্মিরের কবিতা’, সময় প্রকাশন এনেছে শান্তনু মজুমদারের প্রবন্ধগ্রন্থ ‘গণতন্ত্র ঘাটতি বিশ্ব দক্ষিণ এশিয়া ও বাংলাদেশ’। অনন্যা এনেছে হাবীবুল্লাহ সিরাজীর দিনলিপি ‘পরাজয় মানে না মানুষ’। অনিন্দ্য এনেছে আহমদ রফিকের প্রবন্ধগ্রন্থ ‘বই পড়া : কাগজ পড়ার একান্ত ভুবন’। বিভাস থেকে এসেছে মহাদেব সাহার কাব্যগ্রন্থ ‘একুশ ও মুক্তিযুদ্ধের কবিতাসমগ্র’। যুক্ত থেকে বেরিয়েছে সনৎকুমার সাহার প্রবন্ধগ্রন্থ ‘চেনা-শোনা’। রোদেলা থেকে বেরিয়েছে সুফি মজিদের সুফি দর্শনবিষয়ক বই ‘কদমবুছির বৈধতার দলিল’। বেহুলা বাংলা থেকে বেরিয়েছে এলিজা খাতুনের কাব্যগ্রন্থ ‘গহীনে দাহ’।

সোনালীনিউজ/এইচএন

Wordbridge School
Link copied!