• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

কিছু আলো আসুক তবে ...


শহীদ ইকবাল অক্টোবর ১০, ২০২১, ০১:১৯ পিএম
কিছু আলো আসুক তবে ...

ঢাকা : দীর্ঘ ইতিহাসে ঋদ্ধ আমাদের বাঙালি জাতিসত্তা। বাঙালির উৎসব ঐতিহ্য এবং তার পূর্ণাঙ্গ প্রাণশক্তি মাতা, মাতৃভাষা ও মাতৃভূমিকেন্দ্রিক। সেজন্য আমাদের বাঙালিয়ানা প্রচণ্ড উৎসাহ উদ্দীপনামুখর, ভাবব্যঞ্জনার তীব্রতায় আবীরাচ্ছন্ন। হাজার বছরের রচিত সাহিত্যে উল্লি­খিত প্রাণনার সংবাদ আছে। প্রাসঙ্গিক এ সংবাদে মধ্যযুগের সময়সীমায় সাংস্কৃতিক তাৎপর্য একভাবে উচ্চারিত আবার আধুনিক কালপরিসরে তার প্রবহমান প্রসার অন্যরকমের। কারণে বলবো, সময় ও সমাজ বিবর্তন ইঙ্গিত এবং সঙ্গে রাষ্ট্র যোগ মানুষের শ্রেণিস্তর। যেখানে আইন, শাসন ও বিচার তাৎপর্য পরিবেষ্টিত ব্যক্তিমানুষের সঙ্গে-যার প্রভাবে বৈষম্য, শাসন, ক্ষমতা বা প্রতিপত্তি কখনো আচ্ছন্ন, কখনো দোর্দণ্ডতায় মূর্ত আবার কখনোবা স্বার্থ-আদিষ্ট বুর্জোয়া প্রকৃতির ধাঁচে রূপায়িত। রাষ্ট্র-রাজনীতিসাপেক্ষে এগুলো তৈরি হয়েছে আধুনিক সময়ে এবং সাম্রাজ্যবাদ প্রসারে। প্রসঙ্গত সাম্রাজ্যবাদ এখনকার সময়ে বিলুপ্ত হলেও তার আগ্রাসন অন্য প্রণোদনায়, বিশেষত মনোপোলার বিশ্বে পাকিস্তান, আফগানিস্তান বা ইরাকের পর্যুদস্ত পরিকাঠামোর বৃত্তান্তে উল্লে­খনীয়। এক সময়ে লেনিনগ্রাদ বেঁচে থাকলেও তার নিপতিত বিশ্বের প্রতি অনাস্থা স্বীকার্য। সুতরাং রুশ বিপ্ল­ব পরবর্তী সময় বিশেষত স্ট্যালিন-ক্রুশ্চেভ আধিপত্যের বিশ্বেও মানবতার লঙ্ঘন অনাহূত; তবে মনোপোলার বা গ্লে­াবাল ভিলেজের নৃশংস প্রকৃতি-প্রণোদনা তারা তাড়িয়েছিল—তাড়াতে পেরেছিল। ব্রিটিশ আধিপত্যবাদ বিষয়ে আধুনিকতার যাত্রা আমাদের সংস্কৃতিতে ইতিবাচক—বৃহত্তর অর্থে। এ প্রসঙ্গে স্বীকৃতি আছে রামমোহন বা বঙ্কিমচন্দ্রের। মানতে দ্বিধা নেই ইতিহাসের অনিবার্যতার সংস্কৃতির বিচ্ছুরিত ধারা কলোচ্ছ্বাসে প্রবাহিত; ইয়ং বেঙ্গল, ডিরোজিও প্রভৃতিসাপেক্ষে ধর্ম-সমাজ-সংস্কৃতি ও সাহিত্যে। চিরন্তন অধ্যাত্ম সংস্কৃতির ক্ষেত্রে প্রায়োগিক ও প্রগতির বার্তা আনেন চর্চিত ধর্মের ভেতরে বা বাইরে; রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দ উদাহরণ; আর সমাজে ঈশ্বরচন্দ্র শর্ম্মা, বঙ্কিমচন্দ্র, অক্ষয়কুমার দত্ত। এমন মানুষদের স্পর্শে গ্রহণীয় ও আদরনীয় বিবেচনা-অবিবেচনা প্রসঙ্গ বা রবীন্দ্রনাথের ‘বড় ইংরেজে’র কৃতকর্মপ্রয়াস। আধুনিকতার আগে সামন্ত সমাজে বিচ্ছুরিত সংস্কৃতি এবং ব্যক্তি ও শাসন পরিকাঠামোর সম্পর্ক সরল বা স্থবির অধ্যাত্মদোষে দুষ্ট। গড়ে ওঠেনি যথোচিত সংস্কৃতির পাদপীঠ—যদিও সমাজ ও উৎপাদন আবিষ্ট মানুষ স্পষ্টরূপে পরিচয় মেলে—কিন্তু কারণ সে অর্থে তা ছিল আহারাদি ও আশ্বাসপ্রসূত। জীবনবাদের প্রতিষ্ঠা প্রচলিতের মধ্যেই বন্ন্দি—আর ছিল না ঐতিহাসিক অনিবার্যতা। কিন্তু পরে রামমোহনের সমাজে তৈরি হল রূপান্তরিত সংস্কৃতি বহন করল ঐতিহ্যাদৃষ্ট সংস্কৃতি। যেমনটা আগে বলেছি : চলন একমতো— উনিশ শতকের পরে বিশ শতক; ‘বণিকের রাজদণ্ড’ ছাড়ার পর আজকের বাংলাদেশ। গোড়াতেই যে প্রাণনার উৎস প্রসঙ্গে উচ্চারণ হয়েছে মাতৃভাষা—বায়ান্ন, অভূতপূর্ব সাফল্য, যে সংস্কৃতি আমাদের বলে দিয়েছিল একাত্তরের যুদ্ধের কথা—বৈষম্যহীন রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক পুনরুত্থান প্রসঙ্গের কথা। আমরা জিতে যাই, পৌঁছে যাই সীমানায়, পেয়ে যাই আমার পতাকা ও কাঙ্ক্ষিত দেশ।

উল্লি­খিত বার্তা, ইতিহাস কিংবা তার পুনর্গঠিত প্রত্যয়ে প্রতিনিয়ত প্রজন্মান্তরকে সামনে পাঠানোর ঠিকানা—আমাদের উচ্চারণ ও কারণ মুক্তিযুদ্ধ। মরণজয়ী ও শিহরণ কাঁপানো—তারপর কেন যেন চলে আসে বিভাজ্য-বিভাজন আর ওই জীবনানন্দের শকুন-শেয়ালতুল্য অন্ধদের প্রলয়োল্ল­াস। বাংলাদেশও আর যথোচিত থাকে না। ইতিহাসের মহানায়ক হত্যা হয় এদেশীয়দের হাতে, সৃষ্টি হয় বিপথগামী শক্তি আর তাদের অবলম্বনে উঠে আসে বায়ান্ন, ঊনসত্তর আর রবীন্দ্রনাথের পরশ্রীকাতর অভিমুখী শত্রুরা। ইসলামের বৃত্তে ও ব্যবসায় ঢুকে পড়ে জাতি-উৎসবের বিপরীতমুখী দুর্বৃত্তরা। আমাদের সংস্কৃতি যে উৎসবে একাত্তরে প্রতিষ্ঠা পায়, যে নিগড় থেকে মুক্তি পেয়ে উল্ল­সিত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে তা আবার অনিশ্চিত যাত্রায় পড়ে, শঙ্কায় পড়ে বললে বলতে হয় মৃত্যুর মুখে পতিত আর রাজনৈতিক বিনাসের আচ্ছন্নতায় রাষ্ট্র আবদ্ধ হয় দুর্বৃত্তায়নের বেড়াজালে। সাতের দশক খুব উল্ল­সিত অবস্থায় উজ্জীবিত শুধু নাটক, থিয়েটার মঞ্চ—কেননা মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশেই তার কাঠামো বিনির্মাণ—উজানের বিরুদ্ধে জয়ী হওয়া সবকিছুর—ওই একাত্তরের মধ্য দিয়ে; তবে সাহিত্য ষাটের সময়ের চেয়ে ক্ষয়িষ্ণু, আঙ্গিক অপরিপক্ব আর বৈশ্বিক প্রচ্ছন্নতায় এলডিসি-র তালিকায় বাংলাদেশ দিশেহারা, পতনোন্মুখ, বৈপরীত্যের দোলায় ভারাক্রান্ত। রাষ্ট্রের চালক ধর্মভিত্তিক, আমলাতান্ত্রিক, প্রতিক্রিয়াশীল প্রতিচ্ছবিতে মাঠ দখল করতে থাকে। নিরন্তর যেন নিঃস্বতর হয় বাংলাদেশ; নীরবে কাঁদতে থাকে সংবিধান, ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতান্ত্রিক আদর্শ। আর সবচেয়ে বড় প্রকোপে পড়ে সংস্কৃতি। প্রধানত স্বাধীনতার অতি তাড়াতাড়ি রাষ্ট্র শাসকদের হাতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে—ফৌজি কর্তারা শাসক বনে গিয়ে সংবিধান আমূল বদলে ফেলে—ফলত চোখে পড়ে ঐ পূর্বোক্ত প্রতিক্রিয়াশীল ধারা যা জাতিত্ব ও বঙ্গীয় সংস্কৃতি-বিরোধী তা সোল­াসে পুনরুজ্জীবিত প্রতিষ্ঠা; তার জন্য রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ শক্তির প্রয়োগ— মিডিয়ায়, কর্মকাণ্ডে আর সে কারণে সদ্য শিশুরাষ্ট্রের জন্ম নেওয়া প্রজন্ম প্রারম্ভিক পাঠ্য থেকে শুরু করে প্রতি স্তরে বিশ্বাসের সঙ্গে যে সুরের ঐকতান পায় তা সংশয়ের, অন্ধ মূল্যবোধের, সূক্ষ্ম আর্থ-রাজনীতি সম্পৃক্ত দুর্বৃত্তায়ন প্রক্রিয়ার—সেখানে ক্রমশ স্বাভাবিক প্রত্যয়গুলো বিলীন হতে থাকে। বিলীয়মান এ পটভূমে উঠে আসে বেগানা সংস্কৃতি-স্বদেশ আর ভুঁইফোঁড় অন্তর্কাঠামোয় চাকচিক্যময় জৌলুসপূর্ণ বহিরাবরণ। আধুনিকতার নামে, ধর্মের নামে, যুগ বদলের হাওয়ায়, প্রচেষ্টার নামে— এসব চলতে থাকে। বেড়ে ওঠা প্রজন্ম তখন সুপুষ্ট হওয়ার পরিবর্তে উপর্যুক্ত চাকচিক্যের নামে সংশয়ের পরিচয়কে ধারণ করে। পরিচয়হীন পরিচয় ছড়িয়ে পড়ে প্রজন্মে-প্রজন্মান্তরে। সংস্কৃতির নামে অপসংস্কৃতি, বৈষম্যহীন সমাজব্যবস্থার বদলে বৈষম্যযোগ্য পরিবেশ তৈরি, ধর্মের নামে অপধর্ম, পুঁজিকে কেন্দ্র করে ব্যবসা, নারীকে পণ্য বানানো, সমষ্টির স্বার্থের চেয়ে ব্যক্তিস্বার্থ এসব ওই পরিচয়হীনতার জায়গা থেকে চলছে প্রভূত পরিমাণে। আটের দশকজুড়ে চলতে থাকে ক্রমপরিসরে ব্যক্তিমানসস্তরের পরিবর্তন।

আলোচিত এ বিষয়গুলোর সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল বিশ্ব পরিস্থিতির উল্ল­ম্ফিত সংস্কৃতি ও রাজনীতির প্রকোপ। খুব আগ্রাসী হয়ে পড়ে শক্তিসম্পন্ন রাষ্ট্রগুলো। এবং ছোট ও দরিদ্র রাষ্ট্রেও ঘটে তার অনুপ্রবেশ। তথ্যপ্রবাহে প্রয়োজন-অপ্রয়োজন, দরিদ্র-অদরিদ্র, শিক্ষা-অশিক্ষা না মেনে স্বদেশের তৈরি রাষ্ট্রপ্রবাহের সঙ্গে যুক্ত হতে থাকে উল্ল­াসী-উচ্চকিত ‘সবকিছু’। ‘সবকিছু’ আমাদের রাষ্ট্রে হজমপ্রক্রিয়ায় না থাকুক তবুও বন্ধ থাকে না। আমরা পড়ে যাই অতলে— কিন্তু ওই প্রাণনা রক্তে, বাঙালিত্বের মধ্যে তাই সঙ্গে নিয়ে ঘুরে দাঁড়াই— শক্ত ও ঋজু পায়ে দাঁড়ানো চলে, ফলে রক্ষে এবং টিকে থাকা। বিংশ শতাব্দীর প্রযুক্তির উল্ল­াস সৃষ্টি করে আধিপত্য। আধিপত্যবাদ প্রয়োগ ও প্রতিষ্ঠা পায়। কিন্তু প্রশ্ন, এগুনোর পথ কোথায়? কীভাবে আমাদের নিজস্বতার ও সংস্কৃতির সমৃদ্ধি ঘটবে। আধিপত্যের যুগে স্বাতন্ত্র্য প্রকাশের সুযোগ কোথায়? সম্প্রচারের মধ্যে অন্যের অনুকরণের বদলে নিজেদের ভূ-সংলগ্ন সংস্কৃতির প্রতি দায়বদ্ধতা কীভাবে ঘটবে? সাম্প্রতিকতা যতই প্রবল হোক আধুনিকতার মাত্রিকতা নানামুখী হবে না কেন? ইত্যাকার এসব প্রশ্নই আমাদের প্রতিবন্ধকতা। এবং হারায়ে খুঁজে ফেরার চেতনাই— আমাদের সচেতনতা ও সমাজ বাস্তবতার নির্মাণ প্রয়াস। আর প্রয়াসী হতে চাওয়াটাও কি প্রশ্ন নয়?

একবিংশ শতাব্দীর বিশ্ব একটা আগ্রাসী ও উন্মত্ত বিশ্ব, সন্দেহ নেই। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিপ্ল­ব ঘটেছে বটে, এর ফলে একপক্ষে সৃষ্টি হয়েছে উগ্র আধিপত্যবাদ। মানুষ বিজ্ঞানকে ব্যবহার করছে— তা সত্য; কিন্তু এই বিজ্ঞানই আবার মানুষকে অবরুদ্ধ করে ফেলছে। সন্ত্রাস, হত্যা, শোষণ এখন একক বিশ্বে মদত দেওয়া চলছে—সেখান থেকে মুক্তি পাচ্ছে না বিবেক, সততা, ন্যায়নিষ্ঠা ও মূল্যবোধ। মিডিয়া ক্যু করে ইউনিপোলার আমেরিকা নিভৃতে চালিয়ে যাচ্ছে স্বার্থবুদ্ধির কর্মকা্ল। দেশে দেশে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র অস্থিরতা। বিবেক বিপর্যস্ত—ইরাকে, আফগানিস্তানে, পাকিস্তানে, মিশরে, প্যালেস্টাইনে। বিস্ময়কর আগ্রাসনের ইন্ধনে ইউরোপও কম যায়নি। আধিপত্যবাদ ও আগ্রাসনের বলয়ের প্রভুরা আইন-শাসন-বিচারের নামে মানবতাকে পর্যুদস্ত করেছে। নির্মম হত্যা করছে মানুষকে। নারকীয় নির্যাতনের প্রমাণ স্পষ্ট। আজকের বিশ্বে দেশে দেশে এর প্রকোপ বাড়ছে। তোপের মুখে তৃতীয় বিশ্বও। একই সঙ্গে এসব অবিবেকি কর্মকাণ্ডকে ইহুদি কর্মকাণ্ড বা বিধর্মী আখ্যা দিয়ে জঙ্গিবাদ হিংস্রতার তীব্রতায় উদ্ভাসিত। বিশ্বের দেশে দেশে ইসলামী প্রপাগান্ডায় মৌলবাদ প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে—এরূপ পরিস্থিতি মধ্যযুগীয় বললে ভুল হবে না। বাংলাদেশের যে পরিস্থিতি ও অবক্ষয়ের ফিরিস্তি বলেছি তা নিশ্চয়ই বিশ্ব-ব্যবস্থার বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। সেক্যুলার ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে যে কোনো মূল্যে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় যোগ্যতার পরিচয় দিতে হবে। বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে তার অবস্থান মজবুত করা জরুরি। এজন্য শিক্ষার কার্যক্রমকে প্রকৃত ও শুদ্ধ করে তুলতে হবে। শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড এ উপলব্ধি সর্বস্তরের মাঝে পৌঁছাতে হবে সৎ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে। কর্তাব্যক্তিদেরও হতে হবে পরিশোধিত। প্রকৃত ইতিহাস ও যুগোপযোগী শিক্ষার জন্য সত্বর কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি—দুর্নীতির রাহুগ্রাস থেকে, দলাদলির বৃত্ত থেকে, রাজনীতির দুর্বৃত্তায়ন থেকে দেশকে, গণমানুষকে মুক্তির পথে চালিত করতে হবে; নইলে নয়।

এ পর্যায়ের ছবক, আমাদের পঠন ও বিবেচনার কৃষ্টি নিয়ে। সেটি এই দেশে কিছুটা গড়ে উঠেছিল, অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে। উপনিবেশ, সাম্রাজ্যচেতনা দমন করে অনেক প্রতিজ্ঞার ভেতর দিয়ে। এখন তার ঢেউ হয়তো বন্ধ নয়। কিন্তু আগ্রাসীরা তো পরাস্ত নয়, নতুন আঙ্গিকে তারা চলমান। গ্লোবালাইজেশনের নামে কী রূপ— আমরা কী এ নিয়ে শঙ্কিত নই! মারণাস্ত্র বিক্রি তো আছেই, ভূমি-মাটি ব্যবহার, সমুদ্র দখল, ভাষা দখল, এলাকা দখল, বাজার দখল, সুন্দরবন দখল তো দৃশ্যমান, অদৃশ্যমানও তো অনেক। এসবের জন্য বিস্তর আলাপের অপেক্ষা দরকার। তবে এটুকু বলি, পঠন-সংস্কৃতি তৈরি করুন, বিকশিত করুন, নবীন প্রজন্মকে তার মতো বাড়তে দিন— তার ভেতর দিয়েই চলতি ভাসমান বিকার ঠেকান, প্রতিরোধ করুন— নতুন বিকারের জন্ম না দিয়ে। তাতে আমরা অস্তিত্ব নিয়ে বাঁচার শ্বাসটুকু পেতে পারি। কারণে বলি, এখন তো শ্বাস নিতেই পারছি না, স্বাস্থ্য-শক্তি ও বল নিয়ে বাঁচবো কীভাবে, আর কখনো কী আমরা ততদূর পৌঁছাতে পারবো?

লেখক : সাহিত্যিক ও অধ্যাপক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

 

Wordbridge School
Link copied!