ছবি: প্রতিনিধি
বিভেদ ভুলে এক মঞ্চে এসে স্থানীয় প্রার্থীর দাবিতে একসাথে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন পাবনা-৩ আসনে মনোনয়ন বঞ্চিত দুই নেতা কে এম আনোয়ারুল ইসলাম ও হাসাদুল ইসলাম হীরা।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে পাবনার চাটমোহর পৌর সদরের পাঠানপাড়া মহল্লায় আনোয়ারুল ইসলামের বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে সাবেক এমপি ও চাটমোহর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কে এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “আমরা ৩১ দফা বাস্তবায়নে তৎপর। ৭ নভেম্বর উদযাপন করতে চাই। দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আপনাদের সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে চাই। চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুরের বিএনপি নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সামনে এগুতে চাই। আপনারা আসুন, আগামী ৮ নভেম্বর বালুচর মাঠে একসাথে মিলিত হই।”
চাটমোহর উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব হাসাদুল ইসলাম হীরা বলেন, “আমি এবং আনোয়ার চাচা একসাথে মিলিত হয়ে কর্মসূচি নিয়েছি। ৭ নভেম্বর শুক্রবার চাটমোহরে সকল দোকানপাট বন্ধ থাকে, তাই আমরা পরদিন ৮ নভেম্বর কর্মসূচি দিয়েছি। চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুরের সর্বস্তরের মানুষের কাছে আমরা আহ্বান জানাই সেই কর্মসূচিতে আপনারা একাত্মতা ঘোষণা করবেন। আমাদের সামনের দিনগুলো যেন সহজতর হয়, সুন্দরভাবে আমাদের উদ্দেশ্যগুলো বাস্তবায়ন করতে পারি, মানুষের মুখে যেন হাসি ফোটাতে পারি সেই উদ্দেশ্য নিয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এজন্য আপনাদের দোয়া চাই। বালুচর মাঠে স্বশরীরে উপস্থিত থেকে আমাদের সহযোগিতা করবেন এই কামনা করি। সমাবেশ থেকে আমরা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।”
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হীরা বলেন, “আমরা শেষ পর্যন্ত দেখতে চাই, চূড়ান্ত মনোনয়ন পর্যন্ত দেখতে চাই। তারপর আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানাব। আমাদের আন্দোলন চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুরের মানুষের স্বার্থে। আমাদের দাবি একটাই—আমরা পাবনা-৩ আসনের স্থানীয় প্রার্থী চাই। চূড়ান্ত মনোনয়ন ঘোষণা হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। আমরা আশা করবো দলের হাই কমান্ড সার্বিক বিবেচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।”
সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা ও পৌর বিএনপি এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, পাবনা-৩ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনকে। তার বাড়ি পাবনার সুজানগর উপজেলায়। প্রার্থী হওয়ার পর তিনি চাটমোহরের ভোটার তালিকাভুক্ত হয়েছেন। প্রায় তিন মাস আগে তিনি এখানে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণার পর থেকে স্থানীয় প্রার্থীর দাবিতে সোচ্চার অন্যান্য মনোনয়ন প্রত্যাশীসহ দলের একাংশের নেতাকর্মীরা আন্দোলন চালিয়ে আসছেন।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে চাটমোহর উপজেলা বিএনপিতে বিভাজন চলছিল। সাবেক এমপি কে এম আনোয়ারুল ইসলাম ও সাবেক পৌর মেয়র, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাসাদুল ইসলাম হীরা আলাদাভাবে নিজেদের কর্মী-সমর্থক নিয়ে দলীয় কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন। দুইজনই পাবনা-৩ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। বিভেদ থাকা সত্ত্বেও দুই নেতা একসাথে আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়ায় উত্তাপ বেড়েছে পাবনা-৩ আসনের ভোটের মাঠে। শুরু হয়েছে নতুন মেরুকরণ। এখন দেখার বিষয় শেষ পর্যন্ত কী হবে।
এসএইচ
আপনার মতামত লিখুন :