লেবু গাছের ডাল ভাঙ্গাকে কেন্দ্র করে কৃষক নিহত

  • মেহেরপুর প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ২৩, ২০২২, ০৩:৩৮ পিএম
লেবু গাছের ডাল ভাঙ্গাকে কেন্দ্র করে কৃষক নিহত

মেহেরপুর : মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার তেঁতুলবাড়ীয়া ইউপির আওতাধীন হিন্দা পশ্চিম পাড়া গ্রামে ছোট ভাই ও বোন জামাইয়ের আঘাতে বড় ভাই খলিলুর রহমান (৬২) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। কৃষক খলিলুর রহমান হিন্দা পশ্চিত পাড়া গ্রামের মৃত মুনসুর আলীর ছেলে। 

বাড়ির পাশে লেবু গাছের ডাল ভাঙ্গার মত তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে খলিলুর রহমানকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত শনিবার সন্ধ্যায় কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে বাড়ির পাশের একটি দোকানে ডেকে নিয়ে খলিলুর রহমানকে জোরপূর্বক কান ধরে উঠবস করে লাঞ্ছিত করা হয়। লেবু গাছের ডাল ভাঙ্গার মত তুচ্ছ ঘটনা ও জমি জমা সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ঐ সময় নিহতের ছোট ভাই হবিবর রহমান (৫২), ছোট বোন আজিমন নেছা (৫০), ভগ্নিপতি আবুবকর (৫২) ও ভাগ্নে স্কুলছাত্র সজিব (১৭) সংঘবদ্ধ আক্রমণ চালিয়ে তক্তা ও বাঁশ দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে ডাক্তার কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করেন।

অসহায় খলিলুর রহমানের পরিবার তাৎক্ষণিক চিকিৎসা খরচ যোগাড় করতে রোগীকে বাড়িতে নিয়ে আসে।  রোগীর অবস্থা খারাপ হলে গতকাল রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সোমবার (২৩ মে) সকাল ১০টার দিকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

স্থানীয়রা জানান, নিহত খলিলুর রহমান একজন কৃষক মানুষ। সারাদিন হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে সংসার ও দিনাতিপাত করে থাকে। অনেক কষ্ট করে মাস তিনেক আগে একমাত্র ছেলেকে প্রবাসে পাঠিয়েছে। পৈত্রিক সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে মামলা ফ্যাসাদ চলে আসছে। এদিন লেবু গাছের ছোট ডাল ভাঙ্গাকে কেন্দ্র করে ছোট ভাই, বোন, ভগ্নিপতি ও ভাগ্নে মিলে হামলা করে লোহার পেরেক সম্বলিত ঘরের সাটারিংয়ের তক্তা দিয়ে খলিলুর রহমানকে বেধড়ক মারপিট করে হত্যা করে। 

খলিলুর রহমানের পুত্রবধূ সুকিলা খাতুন ও খলিলুর রহমানের স্ত্রী আশুরা জানান, আমরা এই হত্যার বিচার চাই। ঘটনার সময় প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী ও নিকটাত্মীয় আরিফা খাতুন, আলী হোসেন, আব্দুল মতিন, দোকানদার শহিদুল ইসলাম পাশে দাঁড়িয়ে দেখলেও কেউ উদ্ধার করতে বা ঠেকাতে এগিয়ে যায়নি। এসময় স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।

গাংনী থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানান, তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে হিন্দা পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যদের পাঠানো হয়েছিল। লাশের সুরতহাল রিপোর্ট করা হয়েছে। অভিযোগ বা মামলা হলে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে নেয়া হবে। ঘটনার সাথে জড়িতরা পলাতক রয়েছে।

সোনালীনিউজ/এনএন

Link copied!