তীব্র তাপদাহের মধ্যে স্কুলে পানি পান করে ১৩ শিক্ষক-শিক্ষার্থী অসুস্থ

  • ফরিদপুর প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ২৮, ২০২৪, ০৮:১৮ পিএম
তীব্র তাপদাহের মধ্যে স্কুলে পানি পান করে ১৩ শিক্ষক-শিক্ষার্থী অসুস্থ

ফরিদপুর: ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় তীব্র তাপদাহের মধ্যে একটি বিদ্যালয়ের টিউবওয়েলের পানি পান করে তিন শিক্ষক ও ১০ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। অসুস্থদের মধ্যে এক শিশুসহ তিন শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের রামকান্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।  

খবর পেয়ে সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সালথা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ ঘটনাস্থল পরিবদর্শন করেন।

তবে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দাবি, পানি পান করে নয় সম্ভবত তীব্র গরমের কারণেই তারা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

পানি পান করে অসুস্থ রামকান্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. রবিউল ইসলাম বলেন, রোজার ঈদের পর থেকে স্কুল বন্ধ ছিল।প্রধান শিক্ষিকাও মাতৃত্বকালীন ছুটিতে রয়েছেন। দীর্ঘদিন পর রোববার স্কুল খোলা হয়।

সকালে স্কুলে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে প্রথমে বিদ্যালয়ের ক্লাস রুম ও মাঠে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করার কাজ শুরু করি। কিছু সময় কাজ করার পর তীব্র গরমে আমরা সবাই পানির পিপাসায় ভুগছিলাম। তখন সবারই গলা শুকিয়ে আসছিল। পরে স্কুলের টিউবওয়েল চেপে ঠাণ্ডা পানি বের করে পান করি। কিন্তু কিছুক্ষণ পর একে একে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বমি করতে থাকেন এবং অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় স্থানীয় এক যুবক এসে আমাকে বলে, ‘স্যার ওই টিউবওয়েলের পানি পান কইরেন না, পানিতে বিষ মেশানো হয়েছে। ’ পরে অসুস্থদের দ্রুত সালথা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া যাওয়া হয়। সেখানে সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। 

এর মধ্যে রানিতা নামে এক শিশুর অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় তাকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অসুস্থদের মধ্যে শিক্ষক সুকলা রানী শীল, রেবেকা বেগম, রবিউল ইসলাম, শিক্ষার্থী সাদিহা, নাহিদ ও তৌকিয়ার নাম পাওয়া গেছে। বাকিদের নাম পাওয়া যায়নি।

সালথা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল মমিন বলেন, টিউবওয়েলের পানিতে কোনো ধরনের বিষক্রিয়া পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তীব্র গরমের কারণেই ওই শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। অসুস্থদের মধ্যে দুজনের চিকিৎসা এখনও চলছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে সবাই শঙ্কামুক্ত।  

এই বিষয়ে সালথা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান জানান, আমরা প্রথমে খবর পেয়েছিলাম টিউবওয়েলের পানি খেয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শক করি এবং চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগও করেছি। চিকিৎসক জানিয়েছেন, টিউবওয়েলের পানিতে বিষক্রিয়ার কোনো লক্ষণ পাওয়া যায়নি।

এই বিষয়ের সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আনিছুর রহমান বালী জানান, রোববার স্কুল খোলার পর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সকালে স্কুলে এসে টিউবওয়েলের পানি পান করে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এখন সবাই মোটামুটি সুস্থ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছেন, তারা বিষক্রিয়ার কোনো আলামত পাননি। গরমের কারণে এ ঘটনা ঘটতে পারে। তারপরও টিউবওয়েলের পানি আমরা পরীক্ষা করে দেখব। একই সঙ্গে আগামীকাল সোমবার (২৯ এপ্রিল) থেকেই ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে নিরাপদ পানি পান করতে পারে, সে ব্যবস্থা করা হবে।  

এমএস

Link copied!