ছবি : প্রতিনিধি
কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিকের ঘর নির্মানের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার অনন্তপুর বড়াইরতল এলাকার আন্তর্জাতিক সীমানা পিলার ৯৪৬-এর সাব পিলার ২ এসের পাশে।
জানাগেছে, মালেক মিয়া তার স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে, বাবা ও ছোট ভাইসহ ঢাকার একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে কাজ করেন। পৈত্রিক সূত্রে তার মাত্র রয়েছে ৫ শতাংশ জমি। সেই জমিতে জীবনের শেষ সম্বল কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে শুরু করেছিল একটি টিনশেড বিল্ডিং ঘর বানানোর কাজ। তাতেই বাঁধ সাধে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। ২১ জানুয়ারী বিএসএফ ঘর নির্মানে বাধাঁ প্রদান করে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন। পরিবারটির আর কোন থাকার ঘর না থাকায় খোলা আকাশের নীচে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে বলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে।
সোমবার (২৭ জানুয়ারী) বিকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, ওই এলাকার মৃত জমির উদ্দিনের ছেলে আব্দুল মালেক পৈতিক সুত্রে পাওয়া ৫ শতক জমির উপর স্ত্রীসহ ছেলে দুলাল ও মিলনকে নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে খড়ের ঘর তুলে বসবাস করে আসছিল। পরিবারের অসচ্ছলতার কারনে ঢাকার একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে চাকুরী করেন। অনেক কষ্টে কিছু টাকা পয়সা জমিয়ে টিনশেড পাকা ঘরের কাজ শুরু করেন। এরই মধ্যে ৩টি কক্ষের ইটের গাথুনীর কাজ শেষের দিকে আসলে গত ২১ জানুয়ারী দুপুরে ১৩৮ ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ঝিকরী বিওপি’র সদস্যরা নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন। তারা জানান নোম্যান্স ল্যান্ডে কোন পাঁকা স্থাপনা নির্মান করা যাবে না।
আব্দুল মালেকের ছেলে গার্মেন্টস কর্মি দুলাল মিয়া জানান, আমাদের বাড়ী করার মতো আর কোন জমি নেই। কিংবা অন্যত্র জমি কিনে বাড়ী করার মতো স্বামর্থ্যও নেই। তাই কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে একটি টিনশেড বিল্ডিং ঘর নির্মাণ করতে চেয়েছিলাম। কিন্ত বিএসএফ বাধাঁ প্রদান করায় তা আর নির্মাণ করতে পারছি না। এই শীতে কয়েকদিন থেকে অনেক কষ্টে ঝুপরি ঘরে বসবাস করছি।
কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ মনিরুজ্জামান মানিক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আর্ন্তজাতিক সীমান্ত আইন লংঘন করায় বিএসএফ ঘর নির্মাণ করতে দিচ্ছে না। বিএসএফ বাধাঁ দেওয়ায় আপাতত ঘর নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে।
লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি অনন্তপুর বিওপি’র নায়েক সুবেদার সফিকুল ইসলাম জানান, বিএসএফের বাধাঁ এবং সীমান্ত থেকে আনুমানিক ৭০ গজের ভেতর নির্মাণ কাজ হওয়ায় এটি বন্ধ রয়েছে। এব্যাপারে আমরা বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠকও করেছি।
এসআই
আপনার মতামত লিখুন :