ফাইল ছবি
দিনাজপুর: দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে রাজস্ব আদয়ে ঘাটতি। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে হিলি স্থলবন্দর থেকে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। আর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩৬২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। আদায় হয়েছে ৩১৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, একদিকে ডলার সংকট অন্য দিকে ব্যাংকের অ-সহোযোগীতা। এছাড়াও রাস্তাঘাটের বেহাল দশার কারনে অনেক ব্যবসায়ী এ বন্দর ছেড়েছেন। তারা আরও জানান, এই বন্দর দিয়ে যেসব পণ্য আসে তা অধিকাংশই শুল্কমুক্ত। শুল্কায়ন যুক্ত পণ্য যেমন ফল ও জিরা আমদানি হলে রাজস্ব অর্জনের পাশাপাশি লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যেত বলে দাবী তাদের।
আমদানি কারক জুয়েল হোসেন বলেন, দেশের দ্বিতীয় স্থলবন্দর হিলি বন্দর। এই বন্দর দিয়ে এক সময় দিনে আড়াইশ থেকে ৩শ ট্রাক পণ্য আমদানি হলেও বর্তমানে ৮০ থেকে ১০০ ট্রাক পণ্য আমদানি হচ্ছে। তবে এই সব পণ্য বেশি ভাগই শুল্ক মুক্ত হওয়ায় রাজস্ব কম পাচ্ছে সরকার। এছাড়া রাস্তাঘাটের বেহাল দশার কারনে পন্য আমদানি কমে গেছে। ভিসা জটিলতার কারনে আমদানিকারকরা ভারতে না যাওয়ার কারনে আমদানিটা অনেকটাই কমে গেছে বলে দাবী তাদের।
আমদানি রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক বলেন, ‘রাজস্ব ঘাটতির মূল কারণ হলো এই বন্দর দিয়ে যেসব পণ্য আমদানি হয়; যেমন চাল-ডাল, খৈল, ভুসি, ভুট্টা ও পেঁয়াজসহ অধিকাংশই শুল্কমুক্ত। আর যেসব পণ্য আমদানিতে শুল্ক বাড়তো যেমন, ফল পাথর পেঁয়াজ,জিরা সেইসব পণ্যই আমদানি বন্ধ রয়েছে। যার কারনে রাজস্ব আহরণ কমেছে।
আমদানিকারক জুয়েল হোসেন বলেন, গত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরেও রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে ৫৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা এবং চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে ৪৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। হিলি স্থলবন্দরে গত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষমাত্রা ছিল ৩২০ কোটি ৬৪ লাখ টাকা আর অর্জন হয়েছে ২৬১ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এবং চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের গেলো জুলাই থেকে ডিসেম্বর”২৪ পর্যন্ত ৬ মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ৩৬২ কোটি ৬৯লাখ টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিলেও লক্ষ্যমাত্রার বিপরিতে কম আয় হয়েছে ৩১৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। ব্যবসায়ীদের দাবী, জিরা ও ফল আমদানি হলে রাজস্ব অর্জনের পাশাপাশি অনেকটাই বেড়ে যাবে। তবে সরকার ট্রাকের চাকা অনুযায়ী শুল্কায়নের প্রথা চালু রাখায় ফল আমদানি বন্ধ আছে। এটি যদি উন্মুক্ত করে দিতো অর্থাৎ যে যতটুকু পণ্য আমদানি করবে, সেই পরিমাণ পণ্যের শুল্ক দেবে তাহলে প্রচুর পরিমাণ ফল আমদানি হতো। রাস্তার অবকাঠামো থেকে শুরু করে এই বন্দর দিয়ে অধিক শুল্কযুক্ত পণ্য আমদানি যেমন কিসমিস,ফল ও জিরার আমদানি জটিলতা কাটলে অধিক শুল্কযুক্ত পণ্য আমদানি বাড়বে, সেইসঙ্গে রাজস্বও বাড়বে বলে এমন প্রত্যাশা করেন আমদানিকারকরা।
হিলি কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা শফিউল ইসলাম বলেন, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আগের তুলনায় আমদানি অনেকটাই কমে গেছে। আর বর্তমান যে পণ্যগুলো আমদানি হচ্ছে সেগুলো অধিকাংশই শুল্ক ছাড়া যার কারনে লক্ষমাত্রা অর্জিত হয়নি। তবে বন্দর দিয়ে অধিক শুল্কযুক্ত পণ্য আমদানির পণ্যই হলো জিরা ও কিসমিস। এই থেকে বেশি রাজস্ব আসে।বর্তমানে যেভাবে আমদানি-রফতানি চলছে অর্থবছরের আগামী ছয় মাস এমন অবস্থা থাকলে আশা করছি লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।
এসআই
আপনার মতামত লিখুন :