ছবি প্রতিনিধি
কক্সবাজার: দুর্গোৎসব ও টানা ছুটিকে ঘিরে লাখো পর্যটকে মুখর কক্সবাজার এখন যেন উৎসবের নগরী। গত এক সপ্তাহে বিশ্বের দীর্ঘতম এই সমুদ্রসৈকত দেখতে ছুটে এসেছেন প্রায় পাঁচ লাখের বেশি ভ্রমণপিপাসু।
শনিবার (৪ অক্টোবর) টানা চার দিনের ছুটির শেষ দিনেও সৈকতের প্রতিটি পয়েন্টে ছিল উপচেপড়া ভিড়। বিকেলে লাবণী পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়, পরিবার-পরিজন ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে ঢেউয়ের তালে আনন্দে মেতে উঠেছেন পর্যটকেরা।
মেহেরপুরের গাংনী থেকে পরিবার নিয়ে আসা আলাউল রণি বলেন, ‘সৈকতের ঢেউ মনে প্রশান্তি আনে। সুযোগ পেলেই চলে আসি কক্সবাজারে। এবারের আনন্দটা আলাদা, ফিরতে মন চাচ্ছে না, কিন্তু জীবিকার টানে ফিরতেই হবে।’
স্থানীয় রামুর বাসিন্দা ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘আমাদের গর্ব এই কক্সবাজার সৈকত। যখন ইচ্ছে চলে আসি। এখানে জন্মেছি-এটাই সবচেয়ে বড় সৌভাগ্য।’
পর্যটন মৌসুম শুরু হওয়ায় জমে উঠেছে ব্যবসা-বাণিজ্য। কলাতলী সৈকতসংলগ্ন এলাকায় আচার, ঝিনুক ও শামুকের অলংকার বিক্রি করেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ইসমাইল। তিনি বলেন, “গত কয়দিনে ভালো ব্যবসা হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ। অনেক দিন পর এমন ক্রেতা পেয়েছি।”
তবে কিছু পর্যটক অভিযোগ করেছেন, মৌসুমে কিছু ব্যবসায়ী পণ্যের অতিরিক্ত দাম নিচ্ছেন। ঢাকার পর্যটক আলিম চৌধুরী বলেন, ‘একটি ঝিনুকের মালা ৩ হাজার টাকা চাইল! গুটিকয়েক ব্যবসায়ীর এমন আচরণে পর্যটনের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। প্রশাসনের নজরদারি দরকার।’
হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ‘১০ অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় সব কক্ষ অগ্রিম বুকড। কোথাও এখন রুম খালি নেই। আমরা সবাইকে সতর্ক করেছি-অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া যাবে না। মৌসুমের শুরুতেই পর্যটকের চাপ কয়েকদিন থাকবে।’
দুর্গাপূজা ও পর্যটন মৌসুমকে ঘিরে কক্সবাজারে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। জেলা প্রশাসন, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনী সমন্বিতভাবে মাঠে রয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, ‘দুর্গাপূজার প্রতিমা বিসর্জন নিরাপদভাবে সম্পন্ন হয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সৈকত এলাকায় দিন-রাত টহল দিচ্ছে পুলিশ।’
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে এবং নিরাপত্তা মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে।
এসএইচ
আপনার মতামত লিখুন :