খালেদা জিয়ার আসনে জয়ের কৌশল সাজাচ্ছে জামায়াত

  • বগুড়া প্রতিনিধি  | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২৫, ০৯:১১ পিএম
খালেদা জিয়ার আসনে জয়ের কৌশল সাজাচ্ছে জামায়াত

ছবি: সংগৃহীত

বগুড়া-৭ আসনটি গাবতলী ও শাজাহানপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মভূমির এই আসনটি বিএনপির ঐতিহ্যবাহী দুর্গ হিসেবে পরিচিত। বরাবরই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এখানে প্রার্থী হন, তাই এটি দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে ‘ভিআইপি আসন’ হিসেবে পরিচিত। আগামী জাতীয় নির্বাচনে এই আসনে খালেদা জিয়াকেই প্রার্থী করা হয়েছে। তার বিপরীতে লড়ছেন জামায়াতে ইসলামী প্রার্থী গোলাম রব্বানী। বিএনপির শক্ত ঘাঁটিতে জয় পেতে এখন কৌশল সাজাচ্ছে জামায়াত।

দুই দলের স্থানীয় নেতাকর্মী ও ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিসহ সরকারপন্থী অনেক নেতা মামলা-হামলার কারণে এলাকায় নেই। এতে মাঠ ফাঁকা পেয়ে গিয়েছে বিএনপি ও জামায়াত। দুই দলের প্রার্থীর প্রচারণা চলছে মুখোমুখি অবস্থানে। তবে ভোটারদের বড় অংশই বলছেন, এবার মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে।

রাজনৈতিক ইতিহাসে বগুড়া-৭ আসনে ১৫ বার ভোট হয়েছে-এর মধ্যে বিএনপি ১০ বার, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি দুবার করে এবং একবার স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। জিয়াউর রহমানের বাড়ি গাবতলী উপজেলায় হওয়ায় খালেদা জিয়া ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত টানা এই আসনে নির্বাচিত হয়েছেন। পরে তিনি আসনটি ছেড়ে দিলে উপনির্বাচনে দলের নেতা হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু নির্বাচিত হন।

বর্তমানে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য গোলাম রব্বানী আসনটি জয়ের আশায় মাঠে নেমেছেন। দীর্ঘদিনের স্থানীয় সাংগঠনিক ভিত্তি ও গণসংযোগকে মূল হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন তিনি। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাসদ ও গণতন্ত্র মঞ্চের একক প্রার্থী থাকলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যেই—এমনটাই মনে করছেন স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

বিএনপির পক্ষ থেকে খালেদা জিয়াকে প্রার্থী করায় দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। তবে স্থানীয় নেতারা মনে করছেন, ভোটের পর তিনি আসনটি ছেড়ে দিলে উপনির্বাচনে দলের প্রার্থী হতে পারেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু অথবা গাবতলী উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোরশেদ মিল্টন। দুই জনই এখন এলাকায় সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন এবং গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।

এদিকে জামায়াতের প্রার্থী গোলাম রব্বানীও কোনো ঝুঁকি না নিয়ে পাড়া-মহল্লা, মসজিদ ও মাদ্রাসা ঘুরে ভোটারদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখছেন। সামাজিক সেবামূলক কর্মসূচি ও দ্বারে দ্বারে গণসংযোগকে তিনি প্রচারণার মূল কৌশল হিসেবে নিয়েছেন। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি প্রার্থী খালেদা জিয়া ভোটে না থাকলে বা পরবর্তীতে আসনটি ছেড়ে দিলে সেই পরিস্থিতি কাজে লাগাতে চায় জামায়াত।

বগুড়া-৭ আসনের ভোটারদের অনেকেই বলছেন, খালেদা জিয়া প্রার্থী হওয়ায় বিএনপি এগিয়ে থাকলেও জামায়াত এবার আগের তুলনায় অনেক শক্ত অবস্থানে রয়েছে। দুই দলের ভোটে লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি-এমন পূর্বাভাসই দিচ্ছে এলাকার ভোটের মাঠ।

এসএইচ 

Link copied!