শাপলা তুলতে গিয়ে চার স্কুল শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু 

  • মেহেরপুর প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২৫, ০৮:৫০ পিএম
শাপলা তুলতে গিয়ে চার স্কুল শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু 

ছবি: সংগৃহীত

মেহেরপুর সদর উপজেলার মোমিনপুর বিলে শাপলা তুলতে গিয়ে চার স্কুলশিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৯ নভেম্বর) বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত চারজনই একই গ্রামের মেয়ে-ফাতেমা (১৪), আফিয়া (১২), আলিয়া (১১) ও মিম (১৪)। ফাতেমা ও আফিয়া দুই বোন, আলিয়া তাদের চাচাতো বোন, আর মিম তাদের প্রতিবেশী।

ফাতেমা মোমিনপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী, আফিয়া বারাদি তৃণমূল মডেল একাডেমির চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। আলিয়া ইরাকপ্রবাসী সাহারুল ইসলামের মেয়ে এবং একই বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। মিম ইসাহাক আলীর মেয়ে, আমঝুপি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। চারজনেরই বাড়ি রাজনগর গ্রামের মল্লিকপাড়ায়।

স্থানীয়রা জানান, দুপুরে চারজন একসঙ্গে শাপলা তুলতে বিলে যায়। বিকেল পর্যন্ত না ফিরলে পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরে বিলপাড়ে তাদের স্যান্ডেল পড়ে থাকতে দেখে সন্দেহ হয়। একটু পর পানিতে একে একে তিনটি মরদেহ ভেসে ওঠে। খবর পেয়ে মেহেরপুর ফায়ার সার্ভিসের একটি দল অভিযান চালিয়ে আরও একজনের মরদেহ উদ্ধার করে।

ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার শামীম হোসেন বলেন, ‘স্থানীয়রা তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে। পরে আমরা গিয়ে বিলের একটি গভীর গর্ত থেকে আরেকজনের মরদেহ উদ্ধার করি।’

বারাদি পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ রেজাউল ইসলাম বলেন, দুপুর দেড়টার দিকে তারা শাপলা তুলতে গিয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, তারা গভীর পানির অংশে পড়ে যায় এবং কেউ সাঁতার জানত না।

মেহেরপুর সদর থানার ওসি মেছবাহ উদ্দিন বলেন, ‘বিলের কোথাও কোথাও গভীর গর্ত আছে। মেয়েরা বুঝতে না পেরে তাতে পড়ে ডুবে যায়।’

খবর ছড়িয়ে পড়ার পর পুরো এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। নিহতদের বাড়িতে আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. তরিকুল ইসলাম ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমাইয়া জাহান ঝুমার নেতৃত্বে প্রশাসনের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নিহত পরিবারের খোঁজখবর নেয়। নিহত প্রত্যেকের দাফনের জন্য ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক।

এসএইচ

Link copied!